এ ভাবেই ঘরে ফিরছেন শ্রমিকরা। —প্রতীকী ছবি
কাজ থেকে বাড়ি ফিরে দেখলেন, ইলেকট্রিকের লাইন কাটা, জল নেই। ঘরে খাবারও নেই। খোঁজ নিয়ে জানলেন, যে সংস্থায় দিনে ৪৫০ টাকা মজুরি হিসেবে কাজ করতেন, তার ম্যানেজারও পলাতক। ঝাড়খণ্ড থেকে নাগপুরে কাজ করতে যাওয়া সঞ্জয় চৌধুরীর মতো এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে বহু পরিযায়ী শ্রমিকের। কাজ করেও টাকা পাননি। লকডাউনের আগের ঘটনা বলে তাও বাড়ি ফিরতে পেরেছেন সঞ্জয়। কিন্তু অনেকের সেই সৌভাগ্যও হয়নি। দেশ জুডে় এখন এমনই ছবি।
২২ মার্চের ওই ঘটনার পর বাড়ি ফিরেও স্বস্তিতে নেই সঞ্জয়। কারণ ২১ দিন কাজ করেও এ মাসে এক টাকাও পাননি। হাতে রয়েছে নগদ ১৫০ টাকা। ঘরে যা খাবার আছে, সাত জনের পরিবারের তা হয়তো আর মাস দু’য়েক চলবে। কিন্তু তারপর! ভাবতেই শিউরে উঠছেন সঞ্জয়। আবার কবে কাজে ফিরতে পারবেন, তাও জানা নেই।
ঘরে ফেরার আগেও অবশ্য কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি সঞ্জয়কে। ঝাড়খণ্ডের মাটির ঘরে বসে বলছিলেন, ‘‘ট্রেনে করে ছ’ঘণ্টায় বিলাসপুর। সেখান থেকে বাসে করে ঝাড়খণ্ডের গাঢ়ওয়া জেলার বাড়িতে।’’ ‘‘বাড়ি ফিরে প্রথমেই খাবার কী কী আছে, সেটা হিসেব করে দেখলাম, সম্বল বলতে এক বস্তা চাল, দু’কেজি ডাল আর এক কেজি পেঁয়াজ। তাতে নুন ভাত খেয়ে টেনেটুনে দু’মাস’’, বললেন সঞ্জয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন অমান্য মানে জীবন নিয়ে খেলা, সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী
সঞ্জয়ের মতো গ্রামের আশপাশের অনেকেই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে নাগপুরে কাজ করতেন। তাঁরা সবাই ফিরে এসেছেন। সবারই এক অবস্থা। মাঠে দেড় বিঘে জমি। তাতে ফসল তেমন হয় না। এলাকাতেও তেমন কাজ নেই। সঞ্জয় বলে চলেন, ‘‘আমরা মোট ২৩ জন একসঙ্গে ফিরেছি। এই মাসের টাকাও পাইনি। লকডাউনের জন্য বাইরে বেরোতেও পারছি না। অন্য কারও কাছে যে সাহায্য চাইব, তারও উপায় নেই।’’ শেষে স্বগতোক্তির মতো বললেন, ‘‘অভাবে ঘর ছেড়েছিলাম, নিঃস্ব হয়ে ফিরলাম।’’
আরও পড়ুন: দেশে হাজার ছুঁতে চলল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যু ২৫ জনের
তবে এত কিছুর মধ্যেও সঞ্জয়ের একটাই স্বস্তি। ভিন রাজ্য থেকে এলেই অন্য জায়গায় গ্রামের মানুষ যে ভাবে বাধা দিচ্ছেন, তার মুখে পড়তে হয়নি। অনেক গ্রামেই ঢোকার মুখে পোস্টার, ব্যানার ঝুলিয়ে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, ‘‘অন্য রাজ্য থেকে এলে গ্রামে প্রবেশ নিষেধ।’’ এমনকি, মারধরের হুমকি দিয়ে পোস্টারও পড়েছে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy