লকডাউনে গৃহ সহায়িকার আসা বন্ধ বহু জায়গাতেই। —ফাইল চিত্র।
অফিস-বাড়ি করতেই এতদিন হিমশিম খাচ্ছিলেন অনেকেই। লকডাউনে যে একটু বিশ্রাম নেবেন তারও উপায় নেই। বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ সারতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘাড়ে চেপেছে বাড়ির কাজকর্মও। একাহাতেই সবকিছু সামলাচ্ছেন অনেকে। সরকারের তরফে যদিও বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু গৃহ সহায়িকাদের নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। আবাসনগুলির পরিচালন সমিতির অবস্থানও স্পষ্ট নয়। তাই ইচ্ছা থাকলেও, লকডাউনের মধ্যে গৃহ সহায়িকাদের কাজে আসার কথা বলতে পারছেন না অনেকেই।
এমন পরিস্থিতিতে অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—বাড়িতে গৃহ সহায়িকা আসবেন কি?আবাসনের পরিচালন সমিতি কী সিদ্ধান্ত নেবে? লকডাউনের মধ্যে কি আগের মতো বাড়িতে কাজে আসতে পারবেন গৃহ সহায়িকারা? জেনে নিন এই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর।
গৃহ সহায়িকা এবং গাড়ি সাফাই করেন যাঁরা, তাঁদের কাজে যেতে কি অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র?
কনটেনমেন্ট এলাকাগুলিতে জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাইরে বেরনোর অনুমতি না দিলেও, বাকি সর্বত্র গৃহ সহায়িকা, গাড়ি সাফইকর্মী, সাফাইকর্মী, বিদ্যুৎকর্মী, কলমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি-সহ স্বনির্ভর পরিষেবা প্রদানকারী সকলকেই কাজে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, আমদাবাদ, হায়দরাবাদের মতো শহর, যেগুলি রেড জোনে রয়েছে, সেখানেও গৃহ সহায়িকা এবং গাড়ি সাফাইকর্মীদের কাজে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত প্রায় ৫০ হাজার, ১৫ হাজার ছাড়াল শুধু মহারাষ্ট্রেই
সরকারি নির্দেশিকায় কি এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়েছে?
গৃহ সহায়িকা ও গাড়ি সাফাইকর্মীদের নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায়। —ফাইল চিত্র।
কোথায় কী নিষিদ্ধ এবং কোথায় কী কী কাজে অনুমতি রয়েছে, তার উল্লেখ রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকায়। কনটেনমেন্ট এলাকাগুলিকে বাদ দিয়ে বাকি সর্বত্র সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাইরে বেরোনোয় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে রেড এবং অরেঞ্জ জোনে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।
বাড়ির বাইরে বেরনোয় নিষেধাজ্ঞা থাকাতেই এত দিন কাজে যেতে পারছিলেন না গৃহ সহায়িকারা। কিন্তু ৪ মে থেকে তৃতীয় দফার লকডাউনে সেই নিষেধাজ্ঞা না থাকায়, তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ায় কোনও বাধা রইল না। তবে রাজ্যগুলি চাইলে এ ব্যাপারে নিজেদের মতো করে বিধিনিষেধ চালু করতে পারে। মহামারি আইন অনুযায়ী কেন্দ্রের পরামর্শর বাইরেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
আবাসিক কল্যাণ সংগঠন সম্পর্কে কী বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায়?
কেন্দ্রীয় আবাসিক সংগঠনের কোনও উল্লেখই নেই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায়। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘লকডাউনের সীমা নির্ধারণ করার ক্ষমতা নেই আবাসিক কল্যাণ সংগঠনের। শুধুমাত্র কেন্দ্র এবং রাজ্যের হাতেই এই ক্ষমতা রয়েছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও ওই সংগঠনকে দেয়নি কেন্দ্র। গৃহ সহায়িকা-সহ স্বনির্ভর পরিষেবা প্রদানকারীদের কাজে ফেরা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই কেন্দ্রের।’’
লকডাউন নিয়ে দিল্লির কেজরীবালসরকারের তরফে যে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে আবার সেলুন বাদ দিয়ে সবরকমের স্বনির্ভর পরিষেবাকেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে বিদ্যুৎকর্মী, কলমিস্ত্রি, লিফ্ট টেকনিশিয়ান, এসি মেকানিক, গাড়ি মেকানিক, জেনারেটর মেকানিক, টিভি মেকানিক, কেবল, মেকানিক, সিসিটিভি মেকানিক, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী, ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী, সাফাইকর্মী, গৃহ সহায়িকা রয়েছেন। দিল্লি সরকারের ওই নির্দেশিকাতেও আবাসিক কল্যাণ সংগঠনের কোনও উল্লেখ নেই।
আরও পড়ুন: কলকাতার একটি থানার ওসি এ বার করোনা আক্রান্ত
তা হলে আবাসিক কল্যাণ সংগঠনের কথা এল কোথা থেকে?
গত শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিকের মন্তব্য নিয়েই গোল বাধে। আবাসিক কল্যাণ সংগঠনই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশিকায় এ ধরনের কোনও উল্লেখ নেই।
আবাসিক কল্যাণ সংগঠন কি গৃহ সহায়িকাদের কাজে ফেরায় বাধা দিতে পারে?
আইনত তা করতে পারে না আবাসিক কল্যাণ সংগঠন। তবে আবাসন চত্বর বা কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলিতে গাড়ি পার্কিং-সহ যে ধরনের বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশ দেয় তারা, সে ভাবেই গৃহ সহায়িকা প্রবেশ নিয়েও তেমন নির্দেশ দিতে পারে তারা। তবে গৃহ সহায়িকাকে আবাসনে ঢুকতে দেওয়া হবে কি না, তা আবাসনের সকলকে একজোট হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে নিরাপত্তার বিষয়টিও। গৃহ সহায়িকা বাড়িতে ঢুকলে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy