Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ২১ দিনের লকডাউন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ১৯:৫৫
Share: Save:

দেশ জুড়ে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। তার জেরে এ বার সারা দেশে আগামী তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই লকডাউন জারি থাকবে। ওই সময়ে দেশের কোনও নাগরিকের বাড়ির বাইরে পা রাখা উচিত নয় বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।

২১ দিন দীর্ঘ সময়, কিন্তু এই লকডাউন না মানলে দেশ ২১ বছরের জন্য পিছিয়ে যাবে বলেও এ দিন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমন অনুরোধ করছি। এই ক’টা দিন বাইরের জীবন ভুলে যান।’’

করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যে লকডাউন ঘওষমা করা হয়েছে। কার্ফুও জারি হয়েছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে এ দিন দুপুরেই বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি, কোনও রকম চার্জ ছাড়া যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তোলায় ছাড় দেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন ১৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই টাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: দেশে পাঁচশো ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা, বিশ্বে মৃত ১৬ হাজার: করোনা আপডেট এক নজরে​

এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন—

• ২১ দিনের লকডাউন দীর্ঘ সময়, কিন্তু আপনাদের জীবন আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতবাসী সরকারের নির্দেশ মেনে চলবেন। আশাকরি খুব শীঘ্র এই সঙ্কট কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারব আমরা।

• আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সঙ্কটের সময় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতীয়, সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলবেন।

• এই সঙ্কটের সময় নানারকম গুজবও ছড়াচ্ছে। এই ধরনের গুজব এবং কুসংস্কার এড়িয়ে চলুন। শুধুমাত্র কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে চলুন।

• এই সঙ্কটের সময়ে সব রাজ্যগুলিকে স্বাস্থ্য পরিষেবাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।

• দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মজবুত করতে আজ ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এতে আইসোলেশশন বেড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো যাবে। এরই সঙ্গে মেডিক্যাল এবং প্যারামেডিক্যাল প্রশিক্ষণের কাজও গতি পাবে।

• দরিদ্র মানুষের সেবায় এই সঙ্কটের সময়ও অনেকে এগিয়ে আসছেন।

• করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আপনারা যাতে সব জরুরি পরিষেবা পান, তা সুনিশ্চিত করতে একজোট হয়ে কাজ করছেন সকলে।

• আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। পরিবার-পরিজনদের ফেলে রাস্তায় নেমে কাজ করছে পুলিশ। আপনাদের রাগ-অভিমান সহ্য করছেন। তাঁদের কথা ভাবুন।

• যাঁরা সাফাইয়ের কাজে যুক্ত, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করুন।

• আপনাদের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছি, জীবন বাজি রেখে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, সেই ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, হাসপাতাল কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের জন্য প্রার্থনা করুন।

আরও পড়ুন: পিছোচ্ছে অলিম্পিক্স, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সম্মত আইওসি প্রধান​

• যত দিন দেশ লকডাউন থাকবে তত দিন এই সঙ্কল্প নিয়ে চলতে হবে।

• ভারত এখন এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেখানে আমাদের সকলকে সংযম বজায় রাখার সঙ্কল্প নিতে হবে। প্রাণ থাকলে তবেই দেশ থাকবে।

• করোনা থেকে বাঁচার একটাই উপায়, লক্ষ্মণরেখা পার করবেন না।

• চিন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইটালি- সহ এই দেশগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত উন্নত। তা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি তারা। এই পরিস্থিতিতে উপায় কি? একটাই উপায়, যাঁরা করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছেন তাঁদের থেকে শিক্ষা নেওয়া। ওই সব দেশে সরকারের কথা শুনে বাড়ির বাইরে বেরোননি সাধারণ মানুষ। আমাদেরও তা মেনে চলতে হবে।

• সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষে পৌঁছতে ৬৬ দিন লেগেছিল। তার পর ১১ দিনে সংখ্যাটা বেড়ে ২ লক্ষ দাঁড়ায়।

• করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুরুতে দেখলে বোঝাই যায় না। তাই বাড়িতে থাকুন। কেউ রাস্তায় বেরোবেন না।

• আপনাদের বাড়ির দরজার বাইরে লক্ষ্ণণরেখা টানা হল। মনে রাখবেন, তার বাইরে পা রাখলেই করোনার মতো মহামারিকে বাড়িতে ডেকে আনবেন।

• এই ক’দিন বাইরের জীবন ভুলে যান।

• প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমনটা ঘোষণা করছি।

• এটা না করলে দেশ আরও ২১ বছর পিছনে চলে যাবে।

• আগামী তিন সপ্তাহ এই লকডাউন জারি থাকবে।

• আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সময় যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই থাকুন।

• প্রত্যেক ভারতীয়, প্রত্যেক পরিবারকে বাঁচানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

• দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

• দেশের প্রতিটি রাজ্য, জেলায় এই নির্দেশ কার্যকর হবে।

• আজ রাত ১২টা থেকে গোটা দেশে সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন জারি হতে চলেছে।

• গত দু’দিনে দেশের অনেক রাজ্য লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলির এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে হবে।

• এমন দায়িত্বহীনতা চলতে থাকলে, ভারতকে এর চরম মূল্য চোকাতে হবে। কী ক্ষতি হবে তা অনুমানও করতে পারবেন না।

• কিছু মানুষের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে‌ বহু মানুষের জীবনে বিপদ ডেকে আনতে পারে।

• কিছু মানুষ ভাবছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শুধুমাত্র আক্রান্তদের জন্যই প্রয়োজন। এই ধারণা ভুল। প্রত্যেক পরিবারের জন্য এই দূরত্ব প্রয়োজন।

• করোনার থেকে বাঁচার আর কোনও উপায় নেই।

• বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৈশ্বিক মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

• করোনাভাইরাস এত দ্রুত হারে বাড়ছে, যে সবরকম ব্যবস্থা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বিশ্বের তাবড় দেশ।

• এর জন্য সকলের প্রশংসা প্রাপ্য।

• ভারতবাসী দেখিয়েছেন যখন দেশ এবং মানবতার উপর সঙ্কট আসে, তখন কী ভাবে একজোট হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়।

• ২২ মার্চ জনতা কার্ফুতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সারা দিয়েছেন ভারতবাসী।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Narendra Modi COVID-19 Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy