Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

কোভিড পরীক্ষা বাড়াতে কিছু রাজ্যে ‘ট্রু-ন্যাট’ পাঠাচ্ছে কেন্দ্র

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮,১৭১ জন। মারা গিয়েছেন আরও ২০৪ জন। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠী-সংক্রমণের তত্ত্ব মানতে নারাজ কেন্দ্র।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৩:৪৮
Share: Save:

ফি-দিন কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরছেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ-সহ কিছু রাজ্যে। কিন্তু তাঁদের পর্যাপ্ত সংখ্যায় করোনা-পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই এই রাজ্যগুলিতে বেশি করে ‘ট্রু-ন্যাট’ মেশিন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বহনযোগ্য ওই যন্ত্র নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘরে-ঘরে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন।

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮,১৭১ জন। মারা গিয়েছেন আরও ২০৪ জন। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠী-সংক্রমণের তত্ত্ব মানতে নারাজ কেন্দ্র। আইসিএমআরের বিজ্ঞানী নিবেদিতা গুপ্ত আজ বলেন, ‘‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ বলার চেয়ে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা দেখতে হবে। সেটা বুঝতে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশে ‘সেরো-সমীক্ষা’ শুরু হয়েছে। দেশের ১৫টি হটস্পট এলাকা ও ৭১টি জেলায় ওই সমীক্ষা চলছে।’’ তিনি জানান, আগামী সাত-দশ দিনের মধ্যে সমীক্ষার ফল এলে সংক্রমণ কতটা গভীরে ছড়িয়েছে, তা স্পষ্ট হবে।

ভারতে প্রথম এক লক্ষ সংক্রমণ হতে সময় লেগেছিল ১০৯ দিন। কিন্তু আরও প্রায় এক লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন মাত্র দু’সপ্তাহে। দেশে এখন সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে ১৪ দিনে। মার্চের শেষে, লকডাউন শুরুর আগে সেটা হচ্ছিল ৩.৪ দিনে। তা সত্ত্বেও এখন ভিন্‌ রাজ্য থেকে বিরাট সংখ্যক মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করার পরে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে স্বাস্থ্যকর্তারা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। মন্ত্রকের বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিক-সহ এই ধরনের সংক্রমিতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করতে না-পারলে সংক্রমণ আরও ছড়াবে। তাই তাঁরা গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছে কেন্দ্র।

আরও পড়ুন: মোদী-সমর্থক ৬৫%, দাবি সমীক্ষায়

আরও পড়ুন: ২৫০ কোটির ব্যবসাও এখন মাঝারি শিল্প হল

পশ্চিমবঙ্গ অবশ্য আগেই ট্রু-ন্যাট যন্ত্রে নমুনা পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছিল। চিন থেকে আসা অ্যান্টিবডি কিটে ত্রুটি ধরা পড়ার পরে আইসিএমআর অনুমোদিত রাজ্যের ছ’টি ভিআরডিএল ল্যাবকে ট্রু-ন্যাট পদ্ধতিতে ১৫টি জেলায় পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই যন্ত্রে করোনাভাইরাস গ্রুপকে চিহ্নিত করা যায়। আইসিএমআর বলেছিল, ট্রু-ন্যাটের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে সেটাই চূড়ান্ত। পজ়িটিভ এলে কোভিড-১৯ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে প্রথাগত আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে।

সরকারি সূত্রের বক্তব্য, কোনও কোনও রাজ্য ট্রু-ন্যাট ব্যবহার করলেও এখন আরও বেশি সংখ্যায় ওই যন্ত্র দরকার। সাংবাদিক বৈঠকে আইসিএমআরের বিজ্ঞানী নিবেদিতাও আজ বলেন যে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে পরীক্ষা কম হচ্ছে। সেই কারণেই সেখানে ট্রু-ন্যাট যন্ত্র পাঠানো হচ্ছে। পরীক্ষা কম হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সরকারি ভাবে পশ্চিমবঙ্গের কেউ মুখ না-খুললেও প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা আসার সঙ্গে-সঙ্গেই তাঁদের লালারস পরীক্ষা করানো হলে ঠিক ফল মিলবে না। তাই প্রাথমিক ভাবে অন্তত সাত দিন তাঁদের কোয়রান্টিনে (সর্বাধিক করোনা-কবলিত পাঁচটি রাজ্য থেকে এলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন, না হলে বাড়িতেই কোয়রান্টিন) রেখে তবেই পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন ধরে যে সব রাজ্যে শ্রমিকেরা ছিলেন, সেখান থেকে ফেরত পাঠানোর আগে কেন তাঁদের লালারস পরীক্ষা করা হয়নি। তবে এই প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।

আজ নিবেদিতা জানান, দেশে সংক্রমণের সর্ব্বোচ্চ সীমা (পিক) ছুঁতে এখনও দেরি রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, ১৩৫ কোটির দেশে কবে সংক্রমণ সর্ব্বোচ্চ সীমায় পৌঁছবে, তা বলা কঠিন। সরকারের লক্ষ্য, সংক্রমণ রোখা। দেশবাসী কতটা নিয়ম পালন করছেন, তার উপরে সংক্রমণের বিস্তার নির্ভর করছে। কোভিডে দেশের মৃত্যু-হার ২ শতাংশের কাছাকাছি। তা রুখতে জরুরি পরিস্থিতিতে করোনা-আক্রান্তদের রেমডেসিভির ওষুধ ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in india coronavirus TrueNat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE