ছবি: পিটিআই।
রাজ্যগুলিকে ভেবেচিন্তে ‘পিপিই’ বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা-সরঞ্জাম ব্যবহারের পরামর্শ দিল কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও ও পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সেই বৈঠকেই পিপিই ব্যবহার নিয়ে এমন পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানান, নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময়ে দেশে যাতে পিপিই-র ঘাটতি না-হয়, সেই কথা মাথায় রেখেই এই পরামর্শ।
আজ রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী দেশে মোট করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা ৩৫৭৭। মৃতের সংখ্যা ৮৩। গত কাল যা ছিল ৭৫। সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ২৭৪। বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত পিপিই-র অভাব নিয়ে চিকিৎসক-মহল লাগাতার ক্ষোভ জানিয়ে আসছে। আগরওয়াল আজ বলেন, ‘‘বিদেশ থেকেও পিপিই কেনা শুরু করেছি আমরা। রাজ্যগুলিতে তা পাঠানোও শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু হিতৈষী সংস্থাও এগিয়ে এসেছে।’’
আরও পড়ুন: করোনা ‘ঠেকাতে’ আলো-বাজি-পটকা-হুল্লোড়ে মেতে উঠল দেশ
কেন্দ্রের তরফে বলা হচ্ছে, রাজ্যগুলিতে যে-হারে নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে, সেই অনুযায়ী সুরক্ষা-সরঞ্জাম পাঠানো হবে। এই ভাবনা থেকেই পিপিই-র ‘রেশন’ করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্তাদের মতে, পিপিই যে-হেতু মূলত বিদেশেই তৈরি হয়, তাই প্রথমে দেশে এর অভাব ছিল। জানুয়ারি থেকে কেন্দ্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে। এখন দেশীয় উৎপাদকেরাও এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের তৈরি সুরক্ষা-সরঞ্জামের পরীক্ষা ও মান যাচাইয়ের পরে দেশেও তার উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে।
নোভেল করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে কি না, তা নিয়ে পরস্পর-বিরোধী তত্ত্ব উঠে আসছে মাঝেমধ্যেই। আজ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর কর্তা রমন গঙ্গাখেদকর বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণের তত্ত্ব খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে গেলে প্রচুর পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, যদি এই জীবাণু বাতাসে ভাসমান হত, তা হলে কোনও রোগীর বাড়ির সকলেই আক্রান্ত হতেন। কারণ, তাঁরা একই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছেন। কিন্তু তা হয়নি। তা ছাড়া, এক জন সম্ভাব্য রোগী যখন হাসপাতালে আসেন, তখন তাঁকে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সে ক্ষেত্রে ওই সময়ে ওই ঘরে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা সকলেই সংক্রমিত হবেন। সে রকম কোনও উদাহরণও এখনও পর্যন্ত নেই।’’ চটজলদি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা শুরুর প্রসঙ্গে তিনি জানান, বুধবারের মধ্যে পরীক্ষা-কিট হাতে এসে যাবে।
কেন্দ্র জানায়, করোনা ছড়িয়েছে দেশের ২৭৪টি জেলায়। যে সব রাজ্য ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে রয়েছে, সেখানে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি নথিভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালেও নিখরচায় কোভিড-১৯-এর চিকিৎসা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গ এই প্রকল্পে নেই। রাজ্যগুলি কী ভাবে কোয়রান্টিন বা নিভৃতবাস শিবির তৈরি করবে, তা নিয়ে আজ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। বলা হয়েছে, শিবিরগুলি শহরের উপকণ্ঠে তৈরি হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এমন বন্দোবস্ত থাকতে হবে, যাতে নিভৃতবাসীদের সঙ্গে চিকিৎসাকর্মীদের সরাসরি সংস্পর্শ যথাসম্ভব এড়ানো যায়।
দেশে করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ার জন্য আজ ফের তবলিগি জামাতকে দুষেছেন আগরওয়াল। তাঁর দাবি, ভারতে এখন গড়ে ৪.১ দিনে করোনা-রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। কিন্তু জামাতের সূত্রে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে না-গেলে এই হার হত ৭.৪— যা অনেকটাই বেশি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগাম সতর্ক এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এগোচ্ছি। তাই সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের খোঁজার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভাইরাস আমাদের নয়, আমরা ভাইরাসকে তাড়া করছি।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy