প্রতীকী ছবি।
বিশ্বের কোনও দেশেই এখন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানি করা যাবে না— মাত্র দু’দিন আগে এই মর্মে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। কিন্তু তার পরপরই ওই ওযুধ চেয়ে অনুরোধ এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে। এই অনুরোধ চাপে ফেলে দিয়েছে মোদী সরকারকে। দেশের সঙ্কটের কথা মাথায় রেখেও সরকার এখন পথ খুঁজছে, কী ভাবে ও কোন যুক্তিতে আমেরিকাকে এই ওষুধ পাঠানো যায়।
এর কারণ মূলত তিনটি: এক, ‘হাউডি মোদী’ আর ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর বিনিময় সূত্রে গাঁথা এই দুই রাষ্ট্রনেতার নিজস্ব ও পারস্পরিক কিছু রাজনৈতিক দায় রয়েছে।
দুই, করোনার বাইরেও ভারত-মার্কিন সম্পর্কের একটি বৃহত্তর প্রেক্ষিত রয়েছে। তাতে কোনও রকম নেতিবাচক ছাপ পড়ুক, মোদী সেটা চাইছেন না।
তিন, সপ্তাহখানেক আগেই, গত ২৯ মার্চ করোনা মোকাবিলায় ভারতকে ২৯ লক্ষ ডলার সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। করোনা মোকাবিলায় আমেরিকা এ ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর পরে এক কথায় তাঁর মুখের উপরে না-বলে দেওয়া মোদী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, মোদী সেটা চাইছেনও না।
এই তিন চাপের মধ্যে আমেরিকায় ওষুধ রফতানির জন্য দরজা খুলতে একযোগে মাথা ঘামাচ্ছে স্বাস্থ্য, বাণিজ্য এবং বিদেশ মন্ত্রক। সূত্রের খবর, দু’টি পথ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। এক, আমেরিকার মতো কিছু বিশেষ দেশকে ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে ওষুধ রফতানি করা যায় কি না। দুই, ২৫ মার্চ এবং ৪ এপ্রিলের মধ্যে যারা আবেদন জানিয়েছে, অন্তত তাদের দেশে এই ওষুধ রফতানি করা যায় কি না এ বিষয়ে শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি।
বিশ্ব জুড়ে সঙ্কট ও মানবাধিকারের প্রশ্নে ভারত গত ২৫ মার্চ এই ওষুধটির রফতানিতে আংশিক ছাড় দিয়েছিল। কিন্তু অল্প ক’দিনেই ভারতে পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠলে গত ৪ এপ্রিল ফের এটির রফতানি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। সরকারকে মাথায় রাখতে হচ্ছে, দেশে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় যেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কম না-পড়ে কোনও মতেই। কারণ এর আগে, ভারতে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের সাজপোশাক ও সরঞ্জামের অভাব থাকা সত্ত্বেও সার্বিয়াকে দস্তানা রফতানির অনুমতি দিয়ে বেজায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে।
এ বারে তাই সতর্ক ভাবে এগোতে চাইছে সরকার। দেশে চাহিদা অনুযায়ী জোগান না-থাকায় সদ্যই দু’টি সংস্থাকে জরুরি ভিত্তিতে মোট ১০ হাজার কোটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট সরবরাহের বরাত দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। ভারতে প্রতি মাসে মোট ২০ কোটি ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু সঙ্কট বাড়লে তা যথেষ্ট হবে কি না, এই অবস্থায় আদৌ ওষুধ রফতানি করা উচিত কি না— এই সব প্রশ্নের উত্তর সরকার আগাম দিয়ে রাখতে চাইছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, দেশের মজুত খতিয়ে দেখে, কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আর সরকারি এক কর্তা আজ এ প্রসঙ্গে স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘দেশের জন্য যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি ট্যাবলেট মজুত রাখা হবে। রফতানির প্রশ্ন তার পরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy