করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর পাঁচ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৮৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ছাড়াল। রোজদিনই নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা বাড়ছে। বৃহস্পতিবারের আগে বৃদ্ধিটা ছিল ২৫ হাজারের গণ্ডিতে। শুক্রবার তা বেড়ে হয়েছিল সাড়ে ২৬ হাজার। শনিবার তা পৌঁছে গেল ২৭ হাজারের ঘরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ১১৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল আট লক্ষ ২০ হাজার ৯১৬ জন।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫১৯ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ২২ হাজার ১২৩ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ন’হাজার ৮৯৩ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩০০-তে। গুজরাতেও মৃতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়াল। সেখানে মোট মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ২২ জনের। ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে তামিলনাড়ুতে মৃতের সংখ্যা হল এক হাজার ৮২৯ জন। উত্তরপ্রদেশ (৮৮৯), পশ্চিমবঙ্গ (৮৮০) ও মধ্যপ্রদেশে (৬৩৮) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৯৭), কর্নাটক (৫৪৩), তেলঙ্গানা (৩৩৯), হরিয়ানা (২৯০), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৯২), পঞ্জাব (১৮৭), জম্মু ও কাশ্মীর (১৫৯) ও বিহার (১১৯)।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত পাঁচ লক্ষের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬২ শতাংশেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৮৭৩ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট পাঁচ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৮৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে সাত হাজারেও বেশি নতুন সংক্রমণের জেরে মহারাষ্টে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৬১ জন। তামিলনাড়ু ও দিল্লির মোট সংক্রমণ এক লাখ পার করে ছুটছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৩০ হাজার ২৬১ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ন!হাজার ১৪০ জন।
গুজরাতের মোট আক্রান্ত আজ ৪০ হাজার পোরলো। উত্তরপ্রদেশ (৩৩,৭০০), কর্নাটক (৩৩,৪১৮) ও তেলঙ্গানা (৩২,২২৪)তেও উল্লেখযোগ্য হারে রোজ বাড়ছে সংক্রমণ। গত দু’দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে হাজারেরও বেশি নতুন সংক্রমণ হচ্ছে। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ২৭ হাজার পেরলো। অন্ধ্রপ্রদেশ (২৫,৪২২), রাজস্থান (২৩,১৭৪), হরিয়ানা (১৯,৯৩৪), মধ্যপ্রদেশ (১৬,৬৫৭), অসম (১৪,৬০০), বিহারে (১৪,৫৭৫) ও ওড়িশাতে (১১,৯৫৬) রোজ দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, কেরল, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়ার মতো রাজ্যগুলি।
জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে বাড়তে শুরু করেছে, তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের। গত দু’দিন ধরে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা হাজার পেরিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১৯৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ২৭ হাজার ১০৯। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ জনের মৃত্যুতে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা হল ৮৮০।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy