অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
সময় বয়ে যেতে দেখে গতকাল শেষ বেলায় রামের প্রতি নিজের আস্থার কথা জানিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। বুধবার মন্দিরের শিলান্যাসের পর রামনাম জপতে দেখা গেল রাহুল গাঁধীকেও। তবে ভগবান রামের মাহাত্ম্য প্রচারে নামলেও, রাহুলের মন্তব্যে কোথাও যেন কটাক্ষ ছিল গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে। এ দিন অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ভূমিপুজোয় বসেছেন, ঠিক সেই সময়েই টুইটারে রাহুল লেখেন, ‘‘মর্যাদা পুরুষোত্তম ভগবান রাম সকল মানব গুণের স্বরূপ। উনি আমাদের মনের গভীরে থাকা মানবতার মূল ভাবনা।’’ এরই সঙ্গে পদ্যের আকারে রাহুল লেখেন, ‘‘রাম আসলে প্রেম/ কখনও ঘৃণার মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি/ রাম আসলে করুণা/ কখনও নিষ্ঠুরতার মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি/ রাম আসলে ন্যায়/ কখনও অন্যায়ের মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি।’’
গতকাল রামমন্দিরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বলেন, ‘‘দীনবন্ধু রাম নামের সার কথাই হল সারল্য, সাহস, সংযম, ত্যাগ এবং প্রতিশ্রুতি। সকলের মধ্যেই রাম রয়েছেন, রাম রয়েছেন সকলের সঙ্গে। ভগবান রাম ও সীতা মায়ের আশীর্বাদে রামলালা মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় ঐক্য, সৌভ্রাতৃত্ব এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠুক।’’ ভারতীয় উপমহাদেশ তো বটেই গোটা পৃথিবীর সংস্কৃতির সঙ্গে রামায়ণের গভীর সংযোগ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে অযোধ্যায় ভূমিপূজার এলাহি আয়োজন নিয়ে দিন কয়েক আগে পর্যন্ত কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধাচ্চারণ করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু রামমন্দির নিয়ে প্রিয়ঙ্কার বিবৃতি সামনে আসার পর মুহূর্তের মধ্যে দলে নেতাদের অবস্থান পাল্টে যায়। প্রকাশ্যে রামমন্দিরের সমর্থনে গলা চড়াতে শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। ভোপালে নিজের বাড়িতে হনুমান চালিশা পাঠের আয়োজন করেন তিনি। মন্দির নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় ১১টি রূপার ইট পাঠাবেন বলেও জানান। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে ইচ্ছুক নন বলে জানালেও, পর মুহূর্তেই প্রশ্ন তোলেন ধর্ম এবং ভগবানের উপর বিজেপির পেটেন্ট রয়েছে নাকি?
मर्यादा पुरुषोत्तम भगवान राम सर्वोत्तम मानवीय गुणों का स्वरूप हैं। वे हमारे मन की गहराइयों में बसी मानवता की मूल भावना हैं।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) August 5, 2020
राम प्रेम हैं
वे कभी घृणा में प्रकट नहीं हो सकते
राम करुणा हैं
वे कभी क्रूरता में प्रकट नहीं हो सकते
राम न्याय हैं
वे कभी अन्याय में प्रकट नहीं हो सकते।
রাহুলের টুইট।
আরও পড়ুন: নবযুগের শুরু, বললেন মোহন ভাগবত, রুপোর ইট গেঁথে সূচনা রামমন্দিরের
কমলনাথের আগে অবশ্য সকালেই ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গেয়ে ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। তাঁদের দেখাদেখি গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা হার্টিক পটেলও জানিয়ে দেন, তিনি ও তাঁর পরিবার মন্দির নির্মাণে ২১ হাজার টাকা অনুদান দেবেন। রামমন্দির নিয়ে বিজেপি যাতে প্রচারের সবটুকু আলো শুষে নিতে না পারে, তার জন্য মাঠে নেমে পড়েন উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারাও। তাঁরা যে মন্দির তৈরির বিপক্ষে নন, তা বোঝাতে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপে প্রচার শুরু হয়ে যায়।
রামমন্দির নিয়ে কংগ্রেসের এই সক্রিয়তা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, অযোধ্যাকে হাতিয়ার করে বহুকাল আগেই রাজনীতিতে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। তরী ডুবতে দেখে কি তা হলে ‘নরম হিন্দুত্ববাদ’ নিয়ে আর কোনও রাখঢাক করতে চাইছে না কংগ্রেস? যদিও অকংগ্রেসি নেতাদের মতে, বহুযুগ আগে থেকেই ‘নরম হিন্দুত্ববাদ’ নিয়ে চলছে কংগ্রেস। পার্থক্য শুধু একটাই যে, আগে প্রকাশ্যে রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলাত না তারা। অস্তিত্ব বিপন্ন দেখে এখন সেই রাস্তাই ধরতে হচ্ছে তাদের। যে কারণে লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক মন্দিরে ছুটে গিয়েছিলেন রাহুল। দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার পর গত বছর যখন আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে অভিষেক হল প্রিয়ঙ্কার, গঙ্গাযাত্রা সেরে, মাথায় ঘোমটা দিয়ে মির্জাপুরের বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরে যেতে হয়েছিল তাঁকেও।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে হটাতে গেলে হিন্দুদের সমর্থন কতটা প্রয়োজন তা ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বুঝেছিলেন কমলনাথ। তাই নির্বাচনী ইস্তেহারেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে গো-শালা তৈরি করবেন। গোহত্যা রুখতে কড়া আইন আনবেন। ১৩ মাস ক্ষমতায় থাকাকালীন তা করেও দেখান তিনি। গোহত্যার অভিযোগে তিন সংখ্যালঘু যুবকের বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) প্রয়োগেও সায় দেয় তাঁর সরকার। মহাকাল এবং ওমকারেশ্বর মন্দিরের উন্নয়নের পরিকল্পনাও করে রেখেছিলেন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নেতৃত্বে কংগ্রেস বিধায়করা বিদ্রোহ ঘোষণা না করলে, আর তার ফলস্বরূপ তাঁর সরকার পড়ে না গেলে, তা তিনি পূরণ করে দেখাতেন বলেও জানিয়েছেন কমলনাথ।
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের দাবি, কংগ্রেসের কাছে এ সব একেবারেই নতুন কিছু নয়। কারণ রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলানোর প্রশ্নে বরাবরই দ্বিধাবিভক্ত ছিল কংগ্রেস। কারণ মহাত্মা গাঁধী নিজে রঘুপতি রাঘবের পুজারী ছিলেন। নিজেকে সনাতন হিন্দু বলেই দাবি করতেন তিনি। এমনকি ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি বিড়লা হাউসে প্রার্থনাসভায় যাওয়ার আগে নাথুরাম গডসের গুলিতে যখন তিনি লুটিয়ে পড়েন, সেই শেষ মুহূর্তেও তাঁর মুখ থেকে ‘হে রাম’ই বার হয়।
বাড়িতে হনুমান চালিশা পাঠের আয়োজন কমলনাথের।
মহাত্মা গাঁধী জীবিত থাকাকালীনই কংগ্রেসের দু’টি ধারা ছিল বলেও দাবি করেন অনেকে, যার মধ্যে একটি হল সনাতনপন্থী, অন্যটি আধুনিক। সর্দার বল্লভভাই পটেল যেখানে সনাতনপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সেখানে জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসুরা ছিলেন আধুনিক মনস্ক। উচ্চশিক্ষার জন্য এঁরা তিন জনই ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন, পাশ করেছিলেন ব্যারিস্টারি। কিন্তু এঁদের চিন্তা-ভাবনায় বিস্তর ফারাক ছিল তাঁদের। তবে সনাতনী এবং আধুনিকতার মধ্যে ভারসাম্য রেখেই দীর্ঘ দিন টিকেছিল কংগ্রেস। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভিন্ন মতাদর্শের জেরে নেহরু ও পটেলের মধ্যে প্রথম সঙ্ঘাত বাধে, যার নেপথ্যে ছিল জুনাগড়ের সোমনাথ মন্দির।
৭২৫ খ্রিস্টাব্দের গোড়া থেকে বার বার এই সোমনাথ মন্দির বিদেশি আক্রমণের মুখে পড়ে। ১০২৫-’২৬-এ সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেন গজনির মাহমুদ। ১২৯৬ সালে আলাউদ্দিন খিলজি ওই মন্দির আক্রমণ করেন। ১৬৬৫ সালে সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেন অওরঙ্গজেবও। প্রতি বার আক্রমণের পর স্থানীয়রা মিলে মন্দির পুনর্নির্মাণ করলেও, লুঠতরাজ রোখা যায়নি। ১৭৮৩ সালে সোমনাথ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের পাশেই নতুন একটি মন্দিরের নির্মাণ করে হোলকার বংশ। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দেশভাগের দাবি যখন জোরালো হচ্ছে, তখন এই সোমনাথ মন্দিরের ইতিহাস স্মরণ করে ‘বহিরাগত’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও বাড়তে থাকে।
সেই সময় জুনাগড়ে নবাব দ্বিতীয় মহম্মদ খাঞ্জির শাসন ছিল। দেশভাগের সময় পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নেহরু এবং সর্দার পটেলের নির্দেশে সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় জুনাগড়। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণের ঘোষণা করেন সর্দার পটেল। সে বছর ১৩ নভেম্বর মন্দির নির্মাণে সৌরাষ্ট্রের মানুষকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। কিন্তু দেশভাগের ক্ষত তখন দগদগে। সেই অবস্থায় মন্দির নির্মাণের প্রস্তাব পছন্দ হয়নি নেহরুর। তাঁর যুক্তি ছিল, ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনার দেশে বিশেষ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়তে সরকার টাকা দিলে জনমানসের কাছে ভুল বার্তা যাবে।
শেষমেশ নেহরুর আপত্তি উড়িয়েই ১৯৫১ সালের ১১ মে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদের উপস্থিতিতে সোমনাথ মন্দির শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে কোনও মন্দিরের শিলান্যাসে তাঁর যাওয়া একবারেই উচিত নয় বলে সেই সময় রাজেন্দ্রপ্রসাদকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন নেহরু। কিন্তু রাজেন্দ্র প্রসাদ সেখানে যান এবং দীর্ঘ বক্তৃতাও দেন। কানহাইয়া লাল মুন্সিদের পক্ষ থেকে অর্থ জোগাড়ের জন্য যখন বিভিন্ন রাষ্ট্রে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে গিয়েছে, তখন নেহরু বিষয়টিতে বাধা দেন।
কিন্তু নেহরুর মতো দৃঢ়সংকল্পের নেতাও বিতর্ক এড়াতে পারেননি। ১৯৫৫ সালে তাঁর সরকার হিন্দু বিবাহ আইন পাশ করে। তাতে বলা হয়, এক বার বিয়ে হলে, সেই স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকলে এবং তাঁর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ না হলে দ্বিতীয় বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না, বিবাহকালে পাত্রের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ আর পাত্রীর ১৫, পাত্র ও পাত্রী পরস্পরের নিকট আত্মীয় হলে বিবাহ দেওয়া যাবে না। কিন্তু এই আইন শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ, সময় বয়ে যেতে দেখে গতকাল শেষ বেলায় রামের প্রতি নিজের আস্থার কথা জানিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। বুধবার মন্দিরের শিলান্যাসের পর রামনাম জপতে দেখা গেল রাহুল গাঁধীকেও। তবে ভগবান রামের মাহাত্ম্য প্রচারে নামলেও, রাহুলের মন্তব্যে কোথাও যেন কটাক্ষ ছিল গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে। এ দিন অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ভূমিপুজোয় বসেছেন, ঠিক সেই সময়েই টুইটারে রাহুল লেখেন, ‘‘মর্যাদা পুরুষোত্তম ভগবান রাম সকল মানব গুণের স্বরূপ। উনি আমাদের মনের গভীরে থাকা মানবতার মূল ভাবনা।’’ এরই সঙ্গে পদ্যের আকারে রাহুল লেখেন, ‘‘রাম আসলে প্রেম/ কখনও ঘৃণার মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি/ রাম আসলে করুণা/ কখনও নিষ্ঠুরতার মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি/ রাম আসলে ন্যায়/ কখনও অন্যায়ের মধ্যে উদ্ভাসিত হতে পারেন না তিনি।’’
গতকাল রামমন্দিরের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বলেন, ‘‘দীনবন্ধু রাম নামের সার কথাই হল সারল্য, সাহস, সংযম, ত্যাগ এবং প্রতিশ্রুতি। সকলের মধ্যেই রাম রয়েছেন, রাম রয়েছেন সকলের সঙ্গে। ভগবান রাম ও সীতা মায়ের আশীর্বাদে রামলালা মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় ঐক্য, সৌভ্রাতৃত্ব এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠুক।’’ ভারতীয় উপমহাদেশ তো বটেই গোটা পৃথিবীর সংস্কৃতির সঙ্গে রামায়ণের গভীর সংযোগ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে অযোধ্যায় ভূমিপূজার এলাহি আয়োজন নিয়ে দিন কয়েক আগে পর্যন্ত কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধাচ্চারণ করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু রামমন্দির নিয়ে প্রিয়ঙ্কার বিবৃতি সামনে আসার পর মুহূর্তের মধ্যে দলে নেতাদের অবস্থান পাল্টে যায়। প্রকাশ্যে রামমন্দিরের সমর্থনে গলা চড়াতে শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। ভোপালে নিজের বাড়িতে হনুমান চালিশা পাঠের আয়োজন করেন তিনি। মন্দির নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় ১১টি রূপার ইট পাঠাবেন বলেও জানান। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে ইচ্ছুক নন বলে জানালেও, পর মুহূর্তেই প্রশ্ন তোলেন ধর্ম এবং ভগবানের উপর বিজেপির পেটেন্ট রয়েছে নাকি?
আরও পড়ুন: যেন শ্রাবণের সরযূ, রামভূমে ফিরে হিন্দুত্বে অর্গলহীন মোদী
নির্বাচনের আগে বহু মন্দিরে যেতে হয়েছিল রাহুলকেও।
কমলনাথের আগে অবশ্য ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গেয়ে ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। তাঁদের দেখাদেখি গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা হার্টিক পটেলও জানিয়ে দেন, তিনি ও তাঁর পরিবার মন্দির নির্মাণে ২১ হাজার টাকা অনুদান দেবেন। রামমন্দির নিয়ে বিজেপি যাতে প্রচারের সবটুকু আলো শুষে নিতে না পারে, তার জন্য মাঠে নেমে পড়েন উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারাও। তাঁরা যে মন্দির তৈরির বিপক্ষে নন, তা বোঝাতে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপে প্রচার শুরু হয়ে যায়।
অযোধ্যাকে হাতিয়ার করে বহুকাল আগেই রাজনীতিতে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। রামমন্দির নিয়ে কংগ্রেসের এই সক্রিয়তা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তরী ডুবতে দেখে কি তা হলে ‘নরম হিন্দুত্ববাদ’ নিয়ে আর কোনও রাখঢাক করতে চাইছে না তারা? যদিও অকংগ্রেসি নেতাদের মতে, বহুযুগ আগে থেকেই ‘নরম হিন্দুত্ববাদ’ নিয়ে চলছে কংগ্রেস। পার্থক্য শুধু একটাই যে, আগে প্রকাশ্যে রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলাত না তারা। অস্তিত্ব বিপন্ন দেখে এখন সেই রাস্তাই ধরতে হচ্ছে তাদের। যে কারণে লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক মন্দিরে ছুটে গিয়েছিলেন রাহুল। দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার পর গত বছর যখন আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে অভিষেক হল প্রিয়ঙ্কার, গঙ্গাযাত্রা সেরে, মাথায় ঘোমটা দিয়ে মির্জাপুরের বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরে যেতে হয়েছিল তাঁকেও।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে হটাতে গেলে হিন্দুদের সমর্থন কতটা প্রয়োজন তা ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বুঝেছিলেন কমলনাথ। তাই নির্বাচনী ইস্তেহারেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে গো-শালা তৈরি করবেন। গোহত্যা রুখতে কড়া আইন আনবেন। ১৩ মাস ক্ষমতায় থাকাকালীন তা করেও দেখান তিনি। গোহত্যার অভিযোগে তিন সংখ্যালঘু যুবকের বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) প্রয়োগেও সায় দেয় তাঁর সরকার। মহাকাল এবং ওমকারেশ্বর মন্দিরের উন্নয়নের পরিকল্পনাও করে রেখেছিলেন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নেতৃত্বে কংগ্রেস বিধায়করা বিদ্রোহ ঘোষণা না করলে, আর তার ফলস্বরূপ তাঁর সরকার পড়ে না গেলে, তা তিনি পূরণ করে দেখাতেন বলেও জানিয়েছেন কমলনাথ।
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের দাবি, কংগ্রেসের কাছে এ সব একেবারেই নতুন কিছু নয়। কারণ রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলানোর প্রশ্নে বরাবরই দ্বিধাবিভক্ত ছিল কংগ্রেস। মহাত্মা গাঁধী নিজে রঘুপতি রাঘবের পুজারী ছিলেন। নিজেকে সনাতন হিন্দু বলেই দাবি করতেন তিনি। এমনকি ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি বিড়লা হাউসে প্রার্থনাসভায় যাওয়ার আগে নাথুরাম গডসের গুলিতে যখন তিনি লুটিয়ে পড়েন, সেই শেষ মুহূর্তেও তাঁর মুখ থেকে ‘হে রাম’ই বার হয়।
মহাত্মা গাঁধী জীবিত থাকাকালীনই কংগ্রেসের দু’টি ধারা ছিল বলেও দাবি করেন অনেকে। যার মধ্যে একটি হল সনাতনপন্থী, অন্যটি আধুনিক। সর্দার বল্লভভাই পটেল যেখানে সনাতনপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সেখানে জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসুরা ছিলেন আধুনিক মনস্ক। উচ্চশিক্ষার জন্য এঁরা তিন জনই ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন, পাশ করেছিলেন ব্যারিস্টারি। কিন্তু এঁদের চিন্তা-ভাবনায় বিস্তর ফারাক ছিল। তবে সনাতনী এবং আধুনিকতার মধ্যে ভারসাম্য রেখেই দীর্ঘ দিন টিকেছিল কংগ্রেস। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভিন্ন মতাদর্শের জেরে নেহরু ও পটেলের মধ্যে প্রথম সঙ্ঘাত বাধে, যার নেপথ্যে ছিল জুনাগড়ের সোমনাথ মন্দির।
৭২৫ খ্রিস্টাব্দের গোড়া থেকে বার বার এই সোমনাথ মন্দির বিদেশি আক্রমণের মুখে পড়ে। ১০২৫-’২৬-এ সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেন গজনির মাহমুদ। ১২৯৬ সালে আলাউদ্দিন খিলজি ওই মন্দির আক্রমণ করেন। ১৬৬৫ সালে সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেন অওরঙ্গজেবও। প্রতি বার আক্রমণের পর স্থানীয়রা মিলে মন্দির পুনর্নির্মাণ করলেও, লুঠতরাজ রোখা যায়নি। ১৭৮৩ সালে সোমনাথ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের পাশেই নতুন একটি মন্দিরের নির্মাণ করে হোলকার বংশ। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দেশভাগের দাবি যখন জোরালো হচ্ছে, তখন এই সোমনাথ মন্দিরের ইতিহাস স্মরণ করে ‘বহিরাগত’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও বাড়তে থাকে।
সেই সময় জুনাগড়ে নবাব দ্বিতীয় মহম্মদ খাঞ্জির শাসন ছিল। দেশভাগের সময় পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নেহরু এবং সর্দার পটেলের নির্দেশে সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় জুনাগড়। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণের ঘোষণা করেন সর্দার পটেল। সে বছর ১৩ নভেম্বর মন্দির নির্মাণে সৌরাষ্ট্রের মানুষকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। কিন্তু দেশভাগের ক্ষত তখন দগদগে। সেই অবস্থায় মন্দির নির্মাণের প্রস্তাব পছন্দ হয়নি নেহরুর। তাঁর যুক্তি ছিল, ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনার দেশে বিশেষ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়তে সরকার টাকা দিলে জনমানসের কাছে ভুল বার্তা যাবে।
শেষমেশ নেহরুর আপত্তি উড়িয়েই ১৯৫১ সালের ১১ মে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদের উপস্থিতিতে সোমনাথ মন্দিরে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে কোনও মন্দিরের শিলান্যাসে তাঁর যাওয়া একবারেই উচিত নয় বলে সেই সময় রাজেন্দ্রপ্রসাদকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন নেহরু। কিন্তু রাজেন্দ্রপ্রসাদ সেখানে যান এবং দীর্ঘ বক্তৃতাও করেন। কানহাইয়া লাল মুন্সিদের পক্ষ থেকে অর্থ জোগাড়ের জন্য যখন বিভিন্ন রাষ্ট্রে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে গিয়েছে, তখন নেহরু বিষয়টিতে বাধা দেন।
কিন্তু নেহরুর মতো দৃঢ়সংকল্পের নেতাও বিতর্ক এড়াতে পারেননি। ১৯৫৫ সালে তাঁর সরকার হিন্দু বিবাহ আইন পাশ করে। তাতে বলা হয়, এক বার বিয়ে হলে, সেই স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকলে এবং তাঁর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ না হলে দ্বিতীয় বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না, বিবাহকালে পাত্রের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ আর পাত্রীর ১৫, পাত্র ও পাত্রী পরস্পরের নিকট আত্মীয় হলে বিবাহ দেওয়া যাবে না। কিন্তু এই আইন শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং শিখদের জন্যই প্রযোজ্য হয়। শুরুতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন নেহরু। কিন্তু আইন পাশ হওয়ার সময় মুসলিম সম্প্রদায়কে এই আইনের বাইরে রাখায়, তাঁর বিরুদ্ধে একচোখামির অভিযোগ ওঠে। এমনকি গত বছর তিন তালাক রদ হওয়ার সময়ও নেহরুর সেই ব্যর্থতাকে তুলে ধরেন বিজেপি নেতারা।
তবে হিন্দু বিবাহ আইন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও, ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসকে কখনও রাজনীতির সঙ্গে মেশাননি জওহরলাল নেহরু। একই পথ অনুসরণ করেছেন তাঁর কন্যা ইন্দিরা গাঁধীও। ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মপ্রাণই ছিলেন ইন্দিরা। বেলুড় মঠে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। যাতায়াত ছিল শ্রী শ্রী মা আনন্দময়ীর আশ্রমেও। কিন্তু রাজনীতিতে নিজের ধর্মবিশ্বাসের কোনওরকম প্রভাব পড়তে দেননি ইন্দিরা। বরং বাংলাদেশ যুদ্ধ, বিদেশ নীতি এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপের জন্যই পরিচিত ছিলেন তিনি। কিন্তু ইন্দিরার আমল শেষ হতেই ধর্মীয় অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে কংগ্রেস। আর তার পরেই বাবরি মসজিদ কাণ্ড এবং রাম জন্মভূমি বিতর্কে তাদের নাম জড়িয়ে যায়।
১৯৪৯ সালে মসজিদের ভিতর বিগ্রহ রাখা নিয়ে পরিস্থিতি তেতে উঠলে আদালতের নির্দেশে মসজিদটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মসজিদের বাইরে বসানো হয় পাহারা। বিগ্রহের পূজা-অর্চনার জন্য আদালত নিযুক্ত এক পুরোহিতেরই একমাত্র ভিতরে যাওয়ার অনুমতি ছিল সেই সময়। ১৯৮৪-র লোকসভা নির্বাচনে মাত্র দু’টি আসনে জয়ী হওয়ার পর রামমন্দিরকে হাতিয়ার করে নতুন রাজনৈতিক সফর শুরু করে বিজেপি। ওই একই সময়ে বিতর্কিত ওই জায়গার দখল পেতে আন্দোলনে নামে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গাঁধী হত্যার পর আন্দোলনে ভাটা পড়লেও, ’৮৬-র গোড়া থেকে ফের রামমন্দিরের দাবিতে সরব হয়ে ওঠে তারা। বিষয়টি আদালতেও গিয়ে পৌঁছয়।
লোকসভা নির্বাচনের সময় মন্দির দর্শনে প্রিয়ঙ্কা।
সেই সময়ই রাজীব গাঁধী সরকার হিন্দু পুণ্যার্থীদের জন্য মসজিদের দরজা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আগে যেখানে এক জন পুরোহিতের প্রবেশের অনুমতি ছিল, সেখানে সকল পুণ্যার্থীকেই ঢোকার অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি মসজিদ চত্বরে শিলান্যাসের অনুমতিও দিয়ে দেয় রাজীব গাঁধী সরকার। বলা হয়, উত্তরপ্রদেশে হিন্দু ভোট ঝুলিতে পুরতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের জন্য পরবর্তী কালে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। রাজীব গাঁধীকে ‘সেকেন্ড মোস্ট প্রমিনেন্ট কর সেবক’ বলেও উল্লেখ করেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব মাধব গডবোলে। তিনি একাই নন, রাজীব গাঁধীর সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও। ‘দ্য টার্বুলেন্ট ইয়ার্স: ১৯৮০-৯৬’ বইতে তিনি লেখেন, ‘‘১৯৮৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাম জন্মভূমি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। অনেকের ধারণা, এটা এড়ানোই যেত।’’
আরও পড়ুন: যেন শ্রাবণের সরযূ, রামভূমে ফিরে হিন্দুত্বে অর্গলহীন মোদী
২০১৯-র নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা রায় ঘোষণা হওয়ার আগে গোটা বিতর্কের জন্য রাজীব গাঁধীকেই দায়ী করেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি-ও। তিনি বলেন, ‘‘মাধব গডবোলে ঠিকই বলেছিলেন। রাজীব গাঁধীই বাবরি মসজিদের তালা খুলে দিয়েছিলেন।’’ তবে শুধু বিরোধীরাই নন, অযোধ্যায় ভূমিপূজার প্রস্তুতির মধ্যে এ দিন রামমন্দিরের কৃতিত্ব রাজীব গাঁধীর কাঁধে তুলে দেন কমলনাথও। তিনি বলেন, ‘‘রামমন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্তকে প্রকাশ্যেই স্বাগত জানিয়েছি আমি। দেশবাসীর সমর্থনে ভারতের মতো দেশেই এটা সম্ভব। কিন্তু ভুললে চলবে না রাজীব গাঁধীই রামমন্দিরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।’’
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওয়ের ভূমিকারও সমালোচনা করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। করসেবা ঘিরে বাবরি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় কিছু একটা ঘটতে চলেছে বলে ঢের আগেই খবর এসে পৌঁছেছিল সরকারের কাছে। তা নিয়ে একাধিক বৈঠকও করেছিলেন নরসিংহ রাও। চাইলে উত্তরপ্রদেশে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করাই যেত। কিন্তু নরসিংহ রাও কোনও পদক্ষেপই করেননি বলে অভিযোগ। যে কারণে বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও সম্প্রতি বলেন, ‘‘বিজেপি বা মোদী সরকারের নয়, রামমন্দির নির্মাণের আসল কৃতিত্ব প্রাপ্য রাজীব গাঁধী-পিভি নরসিংহ রাও এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘলের।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্দিরা গাঁধীর আমল পর্যন্তই কংগ্রেসে ধর্ম ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে বাঁধা ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিতে ভর করে বিজেপি যে জনপ্রিয়তায় পৌঁছে গিয়েছে, তাতে আর মধ্যপন্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয় কংগ্রেসের পক্ষে। বরং এত দিন ধরি মাছ না ছুঁই পানি করতে গিয়েই অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে তাদের। তাই কংগ্রেসের পথ যে হিন্দু ধর্মের থেকে আলাদা নয়, তা প্রমাণ করতেই এখন উঠে পড়ে লেগেছেন দলের নেতারা। নিজেকে পৈতেধারী ব্রাহ্মণ বলে দাবি করতে দ্বিধা করছেন না রাহুল গাঁধাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy