কুলদীপ সেঙ্গারকে বহিষ্কার করল বিজেপি। ফাইল চিত্র।
অভিযোগ ওঠার দু’বছর পর, অবশেষে উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল বিজেপি। প্রবল চাপের মুখে বৃহস্পতিবার, তাঁকে বহিষ্কার করেছে দল। গণধর্ষণ, খুনের মতো মারাত্মক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দলীয় স্তরে সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এত দেরি কেন? এই প্রশ্নই উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। তা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছে কংগ্রেস।
সময়ে সঙ্গে একাধিক বাঁক নিয়েছে উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ড। গত ২৮ জুলাই রায়বরেলীর কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে নির্যাতিতার গাড়ি, তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছেন নির্যাতিতা। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁর আইনজীবীও। আর এরপরেই, দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অথচ, প্রবল জনমতের সামনে পড়েও এতদিন ধরে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতারা। নিজের রাজ্যের ঘটনা ঝড় তুলেছে দেশ জুড়ে। তা সত্ত্বেও উন্নাওকাণ্ড নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মুখ খোলেননি উন্নাওয়ের সাংসদ সাক্ষী মহারাজ। আশ্চর্যজনক ভাবে নিশ্চুপ ছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। এ দিন শেষ পর্যন্ত কুলদীপকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেছে দল। কয়েকদিন আগে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল বিজেপি। তবে তা কবে করা হয়েছে তা জানাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। অবশেষে, প্রবল চাপে পড়ে এ দিন সেঙ্গারকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবারই, নির্যাতিতাকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য যোগী সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গোটা ঘটনা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মুখপাত্র তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়বীর শেরগিল বলেন, ‘‘উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গিয়েছে তার ক্ষতিপূরণ হয় না। অভিযুক্ত বিধায়ককে দল থেকে বহিষ্কার করলেও সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া যায় না।’’
আরও পড়ুন: উন্নাও মামলা সরল দিল্লিতে, নির্যাতিতাকে ২৫ লক্ষ টাকা সাহায্যের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
কুলদীপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এত দেরি কেন বিজেপির? রাজনৈতিক মহলের মতে, শুধু বঙ্গারমউ বিধানসভা নয়, গোটা উন্নাও লোকসভা কেন্দ্রই কুলদীপের ঘাঁটি। তাঁর নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কও রয়েছে সেখানে। আসলে, কুলদীপের রাজনৈতিক প্রভাব এতটাই যে, এর আগে তিন বার আলাদা দল থেকে দাঁড়িয়েও বঙ্গারমউ বিধানসভা কেন্দ্রে জয় পান তিনি। ঘন ঘন দল বদলেছেন। কিন্তু তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারেননি। উন্নাও লোকসভা কেন্দ্রে মোট ছ’টি বিধানসভা রয়েছে। গত ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ওই উন্নাও লোকসভার একটি বিধানসভা কেন্দ্রও জিততে পারেনি বিজেপি। কিন্তু, ২০১৭ সালে কুলদীপ সেঙ্গার বিজেপির টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াতেই উন্নাওয়ে বিজেপির উত্থান ঘটে।
গত লোকসভা নির্বাচনে উন্নাও থেকে জয় পান বিজেপির সাক্ষী মহারাজ। সীতাপুর জেলে গিয়ে কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে দেখাও করেন সাক্ষী মহারাজ। তাতেও বিতর্কও তৈরি হয়। ২০১৮ সালে দেশবাসীর সামনে এসেছিল উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ড। চাকরি দেওয়ার নাম করে ২০১৭ সালের জুন মাসে বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার নিজের বাড়িতে ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: আত্মরক্ষার্থে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চেয়েছিলেন উন্নাওয়ের ধর্ষিতার আইনজীবী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy