বদরুদ্দিন আজমল।—ফাইল চিত্র।
নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতেও ধর্মের নামে মেরুকরণের রাজনীতি অব্যাহত অসমে। সরকারি চাকরি পাওয়ার আশা নেই মুসলিমদের, তাই সরকারের দুই সন্তান নীতি মেনে চলা অর্থহীন বলে এক দিকে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন বদরুদ্দিন আজমল। পাল্টা আক্রমণে নেমে বিতর্ক বাধিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্রনারায়ণ সিংহও। তাঁর দাবি, দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু না হলে আগামী ৫০ বছরে এখানেও হিন্দুত্বের অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দেবে।
২০২১ থেকে নয়া আইন চালু হচ্ছে অসমে। তাতে বলা হয়েছে, দু’টির বেশি সন্তান থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া যাবে না। রবিবার সেই আইনের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) প্রধান বদরুদ্দিন আজমল। মুসলিমদের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করে রাখতেই এই আইন আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। বদরুদ্দিন বলেন, ‘‘দুই সন্তানের নীতিতে বিশ্বাস করে না ইসলাম। এ ভাবে পৃথিবীর আলো দেখা থেকে কাউকে রোখা যায় না। সরকার এমনিতেই আমাদের সরকারি চাকরি দিচ্ছে না। আমাদেরও কোনও প্রত্যাশা নেই। তাই আমাদের লোকজনকে বলতে চাই, যত ইচ্ছা সন্তানের জন্ম দিন। তাদের শিক্ষিত করে তুলুন। যাতে নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান করতে পারে। ব্যবসা করতে পারে, নিজেদের সংস্থা খুলতে পারে অথবা খুলতে পারে দোকান, যেখানে হিন্দু ভাই-বোনেদেরও চাকরি দিতে পারে তারা।’’
বদরুদ্দিনের এই মন্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়ে আবার বিতর্ক বাধিয়ে বসেন উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্রনারায়ণ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু না হলে, আগামী ৫০ বছরে এখানেও হিন্দুত্ব আর নিরাপদ থাকবে না।’’ সেই সঙ্গে বাংলায় বিজেপি এবং সঙ্ঘকর্মীদের বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সুরেন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলায় বিজেপি এবং সঙ্ঘকর্মীদের বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে। কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যেখানে বিজেপি ক্ষমতায় নেই, সেখানেই ইসলামি সন্ত্রাস এবং উগ্রতার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।’’ আগেও একাধিক বার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন সুরেন্দ্র। কিন্তু তাঁর এই অভিযোগ নিয়ে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। কোনও মন্তব্য করা হয়নি বিজেপির তরফেও।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে নয়, মহারাষ্ট্রে রাজ্যপালের সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করল বিজেপি-শিবসেনা
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী এত ছোট ঘরে থাকেন কী করে? মমতার কালীপুজোয় গিয়ে পার্থকে প্রশ্ন রাজ্যপালের
তবে সুরেন্দ্রকে নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, বদরুদ্দিনের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। তাদের নেতা জিতিন প্রসাদ টুইটারে লেখেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমিও মনে করি। কিন্তু বদরুদ্দিনের মতো নেতারা যখন এইরকম একটা বিষয়ের সঙ্গে ধর্মকে জুড়ে দেন, তাতে সাম্প্রদায়িক দলগুলির সুবিধা হয়। এই ধরনের মন্তব্য বিজেপির মতো দলকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সাহায্য করে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy