ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।
ফের জঙ্গি জমায়েত শুরু হয়েছে পাকিস্তানের বালাকোটে। গত কাল এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত জানান, আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বালাকোটের জঙ্গি শিবির। শুধু তাই নয়, কাশ্মীর-সহ গোটা দেশে অশান্তি ছড়াতে অন্তত শ’পাঁচেক জঙ্গি এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে ভারতে ঢোকার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে বলে তাঁর দাবি।
কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাব দিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে বালাকোটের জইশ-ই মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। মোদী সরকার জানিয়েছিল, অন্তত ২৫০-৩০০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে। পাকিস্তান অবশ্য পাল্টা বলেছিল যে, বালাকোটে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আজ সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘সে সময়ে কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছিল প্রশিক্ষণ শিবিরটি। কিন্তু সেটিকে নতুন করে সক্রিয় করে তোলা হয়েছে।’’
প্রশ্ন হল বালাকোটে জঙ্গি সক্রিয়তার খবর কী ভাবে পাচ্ছে দিল্লি?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, একাধিক সূত্রে বালাকোট সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য এসেছে। উপগ্রহ চিত্র থেকে দেখা গিয়েছে, বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া ওই প্রশিক্ষণ শিবিরকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হামলার পরে সেখানে মানুষের গতিবিধি একেবারে কমে গিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে সন্দেহজনক গতিবিধি হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। বেড়েছে গাড়ির আনাগোনা। এ ছাড়া, জঙ্গিদের বিভিন্ন গোপন তথ্য আদানপ্রদানে আড়ি পেতে শুনে বালাকোটের সক্রিয়তার বিষয়টি জানা গিয়েছে। বালাকোট ও সংলগ্ন এলাকায় থাকা ভারতীয় গোয়েন্দাদের পরিচিত ‘বন্ধু’-রাও ওই জঙ্গি শিবিরকে নতুন করে গড়ে তোলা ও জঙ্গি আনাগোনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে তা হলে কি পাক মাটিতে ফের সেনা অভিযানের পরিকল্পনা করছে দিল্লি?
চেন্নাইয়ের অফিসারস্ ট্রেনিং অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ওই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি সেনাপ্রধান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘একই ধরনের হামলা বারংবার হবে কেন! অতীতে অন্য কোথাও হয়েছিল, তার পর বালাকোটকে বেছে নেওয়া হয়। তা ছাড়া (বালাকোটের চেয়ে) বড় মাপের হামলা কেন হবে না? আমরা কেন বলতে যাব কোথাও হামলা চালানো হবে? তার চেয়ে প্রতিপক্ষ ভাবুক কোথায় হামলা হতে পারে।’’
প্রতি বছরই বরফ পড়ার আগে কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটানোর ব্যাপারে তৎপর থাকে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এ বারও তা শুরু হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। রাওয়তও বলেন, ‘‘অন্তত ৫০০ জঙ্গি ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।’’ তবে তাঁর মতে, আবহাওয়ার সঙ্গে অনুপ্রবেশ ও জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কযুক্ত। শীতকাল শেষ হয়ে যখন বরফ গলতে শুরু করে তখন গুরেজ সেক্টর দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা হয়। ক’দিন পর থেকেই বরফ পড়া শুরু হবে উপত্যকায়। তখন জঙ্গিরা এমন জায়গা থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে যেখানে অপেক্ষাকৃত কম বরফ পড়ে। পুরনো ছক মেনে সীমান্তে গোলাগুলি চালিয়ে জঙ্গিদের ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। রাওয়তের দাবি, ‘‘সেনা সতর্ক রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অনুপ্রবেশ যথাসম্ভব রুখে দেওয়ার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy