Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
National News

নাগরিকত্ব-এনআরসি আবহেই চার মাসেই রামনন্দিরের প্রতিশ্রুতি অমিত শাহের মুখে

সোমবার ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে অমিত শাহ নিশানা করলেন কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জোটকেও।

ঝাড়খণ্ডে ভোটপ্রচারে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই

ঝাড়খণ্ডে ভোটপ্রচারে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
পাকুড়, ঝাড়খণ্ড শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:৪৩
Share: Save:

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের সময় সংসদের দুই কক্ষেই সরকারের পক্ষে ব্যাটন ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে। বিরোধীদের সব আক্রমণ সামলেছেন নিজে। কিন্তু সেই বিল পাশের পর থেকেই এই আইনের প্রতিবাদে উত্তাল বিভিন্ন রাজ্য। অসম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লিতে তুমুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। এখনও অনেক জায়গাতেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। আজ সোমবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনজাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে কলকাতায় মিছিল করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহেই অমিত শাহের মুখে ফের হিন্দুত্বের স্লোগান। ঝাড়খণ্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে বললেন, চার মাসের মধ্যেই অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি হবে। নিশানা করলেন বিরোধী কংগ্রেস-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জোটকেও।

২০০০ সালের শেষের দিকে বিহার থেকে ভেঙে আলাদা রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ঝাড়খণ্ড। সেই সময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার। সোমবার ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের সভায় সেই প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দিয়েছিল বিজেপি। অটলবিহারী বাজপেয়ী ঝাড়খণ্ড বানিয়েছিলেন। আর উন্নয়ন করেছেন নরেন্দ্র মোদী। বাড়িতে বাড়িতে শৌচালয় তৈরি হয়েছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, সেচের জন্য জল প্রকল্প-সহ যোগাযোগ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে রঘুবর দাসের পাঁচ বছরের জমানায়।’’ এই প্রসঙ্গেই বিরোধীদের নিশানা করে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘রাহুল বাবা আর হেমন্ত সরেনকে বলতে চাই, আপনাদের ৫০ বছরের কাজের হিসেব দিন। আপনাদের ৫০ বছর আর আমাদের ৫ বছরের শাসনের তুলনা করলে আমাদের পাঁচ বছরই এগিয়ে থাকবে। রাহুল বাবা এদিকে সেদিক ঘুরছেন। শিবু সোরেন তাঁর কাঁধে বসে ঘুরছেন আর ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যাবেন। আমি দু’জনকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, ১০ বছর আপনাদের সরকার ছিল। কী করেছেন ঝাড়খণ্ডের উন্নয়নে?’’

মাওবাদী সমস্যা ঝাড়খণ্ডে সব সময়ই ভোটে বড় ইস্যু। এই প্রশ্নে অমিত শাহ বলেন, ‘‘মোদী সরকার মাওবাদী সমস্যাকে উপড়ে ফেলেছে। ২০ ফুট মাটির নীচে পুঁতে দিয়েছে। জল জঙ্গল জমিনের স্লোগান যিনি তুলতেন, সেই হেমন্ত সোরেনকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি তো আদিবাসীদের পক্ষে স্লোগান দিতেন। তা হলে আপনার জমানায় মাওবাদীদের রাজত্ব কী ভাবে চলত।’’

কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘‘নতুন কথা শুনছি এই প্রচারে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কাশ্মীরের কথা ঝাড়খণ্ডের অভ্যন্তরে কেন করছেন? আপনাদের কাছে জানতে চাই, আপনারা (জনতা) কি চান না, কাশ্মীর ভারতের অভিন্ন অংশ হোক। দ্বিতীয়বার মোদী সরকার হতেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও ৩৫এ ধারা তুলে দিয়েছে। রাহুল বাবা আপনার চোখে ইতালীয় চশমা। তাই আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। পুরো কাশ্মীর দেশের অভিন্ন অঙ্গ।’’

২০১৯ এর ভোটের আগে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলেছিল বিজেপি। ঝাড়খণ্ডের প্রচারেও তারই পুনরাবৃত্তি। এ দিন অমিত শাহ বলেন, ‘‘একটা সময় পাকিস্তান থেকে জঙ্গিরা ঢুকত, আর আমাদের সেনাদের মাথা কাটত। উরি, পুলওয়ামা হামলা হয়েছে। তার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক করে পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে হামলা চালিয়ে এসেছে। আর তার পর থেকেই সে সব বন্ধ।’’

গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। সেই রায় নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিজেপি শিবির। ঝাড়খণ্ডের প্রচারেও সেই রায়কে হাতিয়ার করলেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা নিয়ে রায় দিয়ে দিয়েছে। ১০০ বছর ধরে সব ভারতীয় চেয়েছিল, অযোধ্যায় যেখানে রামের জন্ম হয়েছিল, সেখানে রামমন্দির হোক। কংগ্রেসের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে বিরোধিতা করেছেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, চার মাসের মধ্যে অযোধ্যায় আকাশচুম্বি রামের মন্দির তৈরি হবেই।’’

হিন্দুত্বের লাইন ছিলই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-ও বিজেপির সেই হিন্দুত্ব বা হিন্দুদের তোষণের অ্যাজেন্ডারই অংশ। তাঁদের মতে, রামমন্দিরের পাশপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, এনআরসির মাধ্যমে সেই হিন্দুত্বের রাজনীতিই আরও জোরদার ও সংঘবদ্ধ করছে বিজেপি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy