—প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে অপরাধীরা। তাই আমৃত্যু জেলে থাকতে হবে তাদের। অলওয়ার গণধর্ষণ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার জনকে এমনই সাজা শোনাল আদালত। ধর্ষণের সময় নির্যাতিতার ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাখা এবং পরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে পঞ্চম জনের।
হাথরস-কাণ্ডে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে কাঠগড়ায় তোলায়, ‘হোয়াটঅ্যাবাউটিজম’কে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবিরের সমর্থকরা। তাদের প্রশ্ন, ১৯ বছরের দলিত তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতির জন্য যদি যোগী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে অলওয়ারের ঘটনার দায় রাজস্থানে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসর উপর বর্তাবে না কেন? গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই নিয়ে তরজা চরমে উঠেছে।
সেই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার অলওয়ার-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত পাঁচ জনকে সাজা শোনায় বিশেষ আদালত। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর নৃশংসতা প্রতিরোধ আইনে হংসরাজ গুর্জর, ছোটেলাল গুর্জর, অশোক গুর্জর, ইন্দ্রজ গুর্জর এবং মুকেশ নামের পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। এ দিন হংসরাজ, ছোটেলাল, অশোক এবং ইন্দ্রজকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে আদালত। তথ্য-প্রযুক্তি আইনে পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে মুকেশের।
আরও পড়ুন: ‘বিরল এবং ভয়ঙ্কর’, হাথরস কাণ্ড নিয়ে বলল সুপ্রিম কোর্ট
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন ১৯ বছরের এক দলিত মহিলা। তিনি জানান, ২৬ এপ্রিল অলওয়ার-থানাগাজি হাইওয়ে ধরে যাওয়ার সময় তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে অপহরণ করে ওই দুষ্কৃতীরা। মোটরবাইকে চেপে বালিয়াড়ির উপর দিয়ে তাঁদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় তারা। তার পর স্বামীর চোখের সামনে একে একে তাঁকে ধর্ষণ করে। গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করার পাশাপাশি, তাঁদের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
শুরুতে গোটা ঘটনাই চেপে যান ওই মহিলা এবং তাঁর স্বামী। কিন্তু ২৮ এপ্রিল ফোন করে তাঁদের হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। ১০ হাজার টাকা না দিলে ধর্ষণের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবে বলে শাসাতে থাকে। এর পর ৩০ এপ্রিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, অভিযোগ দায়েরের পর সাত দিন কেটে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। কাউকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়নি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে বিষয়টি সামনে আসতেই দেশ জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সেইসময় কংগ্রেস সরকারকে কোণঠাসা করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির। অশোক গহলৌত নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে তারা। তা নিয়ে পরিস্থিতি তেতে উঠলে ২ মে, অভিযোগ পাওয়ার তিন দিন পর এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। এর পর ২ মে এবং ৩ মে নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা হলেও, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়নি। গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনকেও।
আরও পড়ুন: ‘শিখদের কাছে ঋণী, ’৭৭-এ ঠাকুমাকে রক্ষা করেছিলেন ওঁরাই’
সেইসময়ই আচমকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণের ওই ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ে। তা নিয়ে ফের পুলিশের কাছে ছুটে যান নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন চলছে, তাই তদন্ত করার মতো যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ নেই বলে তাঁদের খেদিয়ে দেওয়া হয়। তার পর ৭ মে লোকসভা নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর প্রথম গ্রেফতারির খবর মেলে। পুলিশের থানার স্টেশন হাউস অফিসার সর্দার সিংহ এবং অলওয়ারের অলওয়ার এসপি রাজীব পচারকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়।
ক্রমবর্ধমান অপরাধ ঠেকাতে এর পর অলওয়ার জেলাকে দ্বিখণ্ডিত করে অলওয়ার এবং ভিওয়ান্ডি, দু’টি পৃথক জেলায় পরিণত করা হয়। আইন শঙ্খলা বজায় থাকতে পৃথক থানা তৈরি করা হয়। নিযোগ করা হয় পৃথক দু’টি আলাদা থানাও। পরে ওই মহিলাকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ করে রাজস্থান সরকার। বর্তমানে কনস্টেবল হিসেবে সেখানে কর্মরত তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy