ছবি এপি।
গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগী একবার হাসপাতালে ভর্তি হলে, দূর থেকেও দেখা পাওয়া কার্যত অসম্ভব। এমনকি, অধিকাংশ সময়ে রোগী কেমন আছে, সেই খবর পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়ছে প্রিয়জনের। এই অভিযোগ কম-বেশি উঠেছে প্রায় সব রাজ্যেই। তবে এই সমস্যা দূর করতে শুধুমাত্র চিকিৎসকদের নিয়ে একটি দল গঠন করেছে এমস। যাঁদের কাজই হল, রোজই রোগীর আত্মীয়দের ফোন করে তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো। এই মডেল গোটা দেশে চালু হলে রোগীর পরিজনদের মানসিক উদ্বেগ অনেকটাই কমে যেতে পারে বলেই মত চিকিৎসকদের।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, দেশের আশি শতাংশ করোনা রোগীই উপসর্গহীন। বাকি কুড়ি শতাংশের মধ্যে পাঁচ শতাংশ ব্যক্তিকে আইসিইউয়ে ভর্তি করাতে হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল, একবার রোগী আইসিইউয়ে গেলে তাঁর কোনও খবর পাচ্ছেন না প্রিয়জনেরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অভিযোগ উঠলেও ব্যতিক্রমী ছবি এমসে। হাসপাতালের আইসিইউয়ের দায়িত্বে থাকা অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক শৈলেন্দ্র কুমার জানান, এমসের ডাক্তারদের একটি দল প্রতিদিন সন্ধেয় রোগীর পরিবারের সদস্যদের ফোন করে পরিস্থিতি জানিয়ে দেন। অবস্থা উদ্বেগজনক হলে, রাতেও ফের ফোন যায়। তাঁর মতে, দেশের সর্বত্র এই ব্যবস্থা চালু হলে করোনা রোগীর পরিবারের মানসিক উদ্বেগ অনেকটা কমবে।
করোনাভাইরাসের মতো শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে মানসিক চাপে রয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ। শৈলেন্দ্রের মতে, এক নাগাড়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা পিপিই কিট পরে কাজ করা কষ্টকর। শরীর ভারী হয়ে যায়। ফেস শিল্ডের জন্য ভাল করে দেখা যায় না। কিট পরলে শৌচাগারে যাওয়ার উপায়ও থাকে না। এ ছাড়া বাড়ি ফিরেও নানা ধরনের সতর্কতা মেনে চলতে হয়। গোড়ার দিকে বহু চিকিৎসক প্রতিবেশীদের তির্যক মন্তব্যের সম্মুখীন হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে সংক্রমণের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়ছেন, তাঁদের একাংশ চাপে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ৫ দিনেই ভারত ৫ থেকে ৬ লক্ষে
রয়েছে মৃত্যুভয়। সম্প্রতি দিল্লির একটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মারা যান করোনা সংক্রমণে। এমসের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর বিশ্বনাথ আচারিয়া জানান, তাঁদের হাসপাতালে গত ১৭ জুন পর্যন্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ১,৩১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক নীরজ নিশ্চল। তাঁর কথায়, ‘‘টিবি কিংবা এইচআইভি-ও সংক্রামক রোগ। কিন্তু করোনায় সংক্রমণের হার বেশি হওয়ায় লোকের ভয় বেশি।’’ চিকিৎসক দিবসের কথা মাথায় রেখেই নিশ্চল বলেন, ‘‘ডাক্তারেরা অতীতেও চিকিৎসা করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। কিন্তু এ বারে চিকিৎসকেরা অন্তত সম্মান পাচ্ছেন, লড়াইয়ের স্বীকৃতি পাচ্ছেন। আসলে চিকিৎসকের কাছে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুভয়ের বদলে রোগীকে বাঁচানোটাই বড় হয়ে দাঁড়ায়।’’
আরও পড়ুন: ভক্তহীন উল্টোরথ সুসম্পন্ন পুরীতে
করোনা সংক্রমণ, লকডাউনের কারণে দেশে রক্তের অভাব হওয়ায় এগিয়ে এসেছেন এমসের চিকিৎসকেরা। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘এ বছর বিভিন্ন কারণে রক্তের অভাব রয়েছে গোটা দেশে। তাই রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে চিকিৎসক দিবসে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy