Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ভুতুড়ে ভোটার! ১০০-র বেশি লোকসভা আসনের ফল প্রশ্নের মুখে

সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটটি প্রদত্ত ভোটের ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ করেছে কমিশন এবং বিহার ও উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে। ভোটের শতাংশের হিসেব জোগাড় করেছে ‘ভোটার টার্নআউট অ্যাপ’ এবং রাজ্যেগুলির ওয়েবসাইট থেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট। ভোটের ফলপ্রকাশের দিন দশেকের মধ্যেই এ বার ‘ভুতুড়ে ভোটারে’র অভিযোগ সামনে এল। একটি ওয়েবসাইটের অন্তর্তদন্তে দেখা গিয়েছে, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের ১১৯টি আসনে প্রদত্ত ভোট এবং ইভিএমে গোনা ভোটের মধ্যে বিস্তর ফারাক। নির্বাচন কমিশনের অবশ্য জানিয়েছে, প্রদত্ত ভোট এবং ইভিএমের ভোটের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। যদিও কয়েক জন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারের মতে, এই ধরনের অভিযোগ এলে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত।

সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটটি প্রদত্ত ভোটের ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ করেছে কমিশন এবং বিহার ও উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে। ভোটের শতাংশের হিসেব জোগাড় করেছে ‘ভোটার টার্নআউট অ্যাপ’ এবং রাজ্যেগুলির ওয়েবসাইট থেকে। তথ্য বিশ্লেষণে পোস্টাল ব্যালটকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, কোনও লোকসভা কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের তুলনায় ইভিএমে গণনা হওয়া ভোটের সংখ্যা বেশি, আবার কোথাও এর বিপরীত চিত্র।

এ বার পটনা সাহিব ছিল নজরকাড়া কেন্দ্র। সেখানে বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের শত্রুঘ্ন সিন্হাকে পরাজিত করে। ওয়েবসাইটটির বিশ্লেষণ, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২১,৩৬,৮০০ জন। ভোট প্রদানের হার ৪৩.১ শতাংশ অর্থাৎ ভোট পড়েছে ৯,২০,৯৬১টি। কিন্তু ইভিএমের গণনায় দেখা গিয়েছে ভোট পড়ছে ৯,৭৮,৬০২। অর্থাৎ, ইভিএমে ৫৭,৬৪১টি ভোট অতিরিক্ত গণনা হয়েছে। একই ছবি, পূর্ব চম্পারণ, পশ্চিম চম্পারণ, সেওহর, বাল্মীকি নগরের মতো একাধিক কেন্দ্রে। চার হাজার থেকে আট হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়পরাজয় নির্ধারিত হওয়া বিহারের ১৭টি আসনে অতিরিক্ত ভোটের তথ্য সামনে এসেছে।

বিহারের কারাকাট, সাসারাম, জেহানাবাদ, পাটালিপুত্র, বক্সার এবং আরা কেন্দ্রে দেখা গিয়েছে, প্রদত্ত ভোটের তুলনায় ইভিএম-ভোট বেশ খানিকটা কম। যেমন, কারাকাট আসনে প্রদত্ত ভোট ৯,৬২,৭২১ এবং ইভিএমে গণনার পর ভোটের সংখ্যা ৮,৬৪,৫০৭। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি অনেক ভোট গণনা হয়নি! যদিও ওই কেন্দ্রগুলিতে প্রদত্ত ভোট এবং ইভিএমে গণনা ভোটের ফারাকে জয়পরাজয় হেরফের হচ্ছে না। ওই ছ’টিই আসনেই জয়ী হয়েছেন এনডিএ প্রার্থীরা। জেহানাবাদে আবার তিন জায়গায় তিন রকম তথ্য দেখা যাচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে বিজেপি জয়ী ৬২টিতে। অন্তত ৫০টি আসনে অতিরিক্ত ভোটার রয়েছে বলে ওয়েবসাইটটির দাবি। লখনউয়ে বিজেপির রাজনাথ সিংহ জয়ী হয়েছেন ৩,৪৭,৩০২ ভোটে। সেখানে ভোটার ২০,৩৮,৭২৫ জন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ৫৩.৫৩ শতাংশ অর্থাৎ, ১০,৯১,৩২৯টি ভোট পড়ছে। কিন্তু ইভিএমের গণনায় দেখা যাচ্ছে, ভোট পড়ছে ১১,০৭,১০০টি। মথুরা, বাগপত-সহ একাধিক আসনে একই ছবি। অনেক জায়গায় অতিরিক্ত ভোট ন’হাজারেরও বেশি। শাহজাহানপুর, রামপুর, আগরার মতো আসনগুলিতে প্রদত্ত ভোটের তুলনায় ইভিএমের ভোট কম। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলির কোর্টে যাওয়া উচিত।’’ আরও দুই প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এইচ এস ব্রহ্ম এবং এন গোপালস্বামীর মতে, বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য কমিশন।

বিরোধীরা অবশ্য ইতিমধ্যেই ইভিএমের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে ‘ভুতুড়ে ভোটার’-এর খবর সামনে আসতে শুরু করেছে। কমিশন অবশ্য ওই অভিযোগ খারিজ করেছে। গত কাল বিবৃতি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, তাদের ওয়েবসাইটে ভোটদানের ‘সম্ভাব্য সংখ্যা’ থাকে। সামগ্রিক পরিসংখ্যান মেলার পরেই তা ওয়েবসাইটে আপলোড হয়। ফলে ‘ভুতুড়ে ভোটার’ বলে কিছু নেই, ভ্রান্ত অনুমানের ভিত্তিতে তা বলা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy