সুশীল শর্মা
স্ত্রীকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটা টুকরো করে রেস্তরাঁর তন্দুরে ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ১৯৯৫ সালের সাড়াজাগানো তন্দুর-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত সেই সুশীল শর্মাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
পরকীয়া আছে, এই সন্দেহে ১৯৯৫ সালে স্ত্রী নয়না সাহনিকে গুলি করে খুন করে দিল্লির তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেতা সুশীল। প্রমাণ লোপাটের জন্য স্ত্রীর শরীরটাকে টুকরো করে এক পরিচিতের রেস্তরাঁর তন্দুরে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নয়নার পরিচয় জানা গিয়েছিল। ২০০৩ সালে নিম্ন আদালতে সুশীলের মৃত্যুদণ্ড হয়। ২০০৭ সালে সেই সাজা বহাল থাকে দিল্লি হাইকোর্টেও। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে শীর্ষ আদালত তখন জানিয়েছিল, সুশীলই যে স্ত্রীকে কেটে তন্দুরে পোড়ানোর চেষ্টা করেছেন, তার সরাসরি প্রমাণ নেই।
সম্প্রতি ৫৬ বছর বয়সি প্রাক্তন যুব কংগ্রেস নেতা সুশীল আদালতের কাছে মুক্তির আবেদন জানান। তাঁর বক্তব্য ছিল, ২৯ বছর জেলে কাটানো হয়ে গিয়েছে তাঁর। জেলে তাঁর আচরণ নিয়ে অভিযোগ ওঠেনি। তা ছাড়া বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখাশোনার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সুশীলের আইনজীবী অমিত সাহনি জানান, সাজার মেয়াদ ফুরনোর আগেই কোনও বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘সেনটেনস রিভিউ বোর্ড’ (এসআরবি)-এর নির্দেশিকা হল— একবার মাত্র অপরাধ করলে ২০ বছর ন্যূনতম জেল। অপরাধ ভয়াবহ হলে তা বেড়ে হতে পারে ২৫ বছর পর্যন্ত। সুশীল সাড়ে তেইশ বছর জেল খেটে ফেলেছে।
এই সপ্তাহের গোড়ায় কোর্ট প্রশ্ন তোলে, ‘‘২৫ বছরেরও বেশি বন্দি সুশীল। এটা কি মানবাধিকার ভঙ্গ নয়?’’ এর আগে ‘এসআরবি’ সুশীলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। ‘এসআরবি’-র শীর্ষে থাকা দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরও বোর্ডের সিদ্ধান্তে সম্মতি প্রকাশ করেন। সরকারি কৌঁসুলি রাহুল মেহরা সে কথাও বলেন। কিন্তু বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং বিচারপতি সঙ্গীতা ধিংরা সেহগলের বেঞ্চ বলে, ‘‘ওঁকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলে আটকে রাখলে, কোনও খুনের আসামিকেই কখনও মুক্তি দেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy