বার্নপুরের নরসিংহবাঁধে বুধবার শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।
উত্তরবঙ্গের মতো এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ যাতে রাজ্যের অন্যত্র না পড়ে সে জন্য উদ্যোগী হয়েছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। শুয়োর ধরতে অভিযান চলছে জেলায়-জেলায়। এমনকী, বুধবার বর্ধমান শহরেও এই অভিযান চালিয়েছে পুরসভা। কিন্তু, সেই জেলারই অন্য এক প্রান্তে, আসানসোল শহরে এ ব্যাপারে এখনও কোনও তরফে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। মহকুমা প্রশাসনের অবশ্য আশ্বাস, এ ব্যাপারে বৈঠক করে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্র সে সব কার্যকর করা হবে।
আসানসোল শহরের নানা এলাকায় শুয়োর ঘুরে বেড়ানো নতুন কিছু নয়। সরকারি-বেসরকারি নানা আবাসন এলাকা থেকে হাসপাতাল চত্বরসর্বত্রই অবাধে তাদের চরতে দেখা যায়। মাঝে-মধ্যে এ নিয়ে বাসিন্দারা আপত্তি জানালেও পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। কিন্তু গত কয়েক দিনে এ ব্যাপারে আপত্তি তুলেছেন শহরবাসী। শুয়োরের যত্রতত্র বিচরণে লাগাম লাগাতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। রাজ্যের নানা এলাকা, এমনকী জেলার অন্যত্রও যেখানে পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে, আসানসোলে তা কেন হয়নিএ প্রশ্নও উঠেছে।
বুধবার শহরের কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, আসানসোল পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গৌর মণ্ডল রোড, বুধা রোড এলাকায় রাস্তার পাশে অবাধে চলছে শুয়োর প্রতিপালন। এলাকার প্রায় ৬০টি পরিবার সেখানে খোঁয়াড় তৈরি করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা অঞ্চল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই পশুর দল। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বার্নপুরের বাসিন্দারাও। সেখানকারন নরসিংহবাঁধ, ত্রিবেণী সব্জি বাজার অঞ্চল, এমনকী মূল শহরের ইস্কো আবাসনগুলিতেও প্রতি দিন কয়েকশো শুয়োর চরে বেড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহু বছর ধরে এই উত্পাত চলছে। এক বার যদি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ দেখা দেয়, গোটা এলাকা মুশকিলে পড়ে যাবে।” কুলটির বাবুপাড়া, শিমুলগ্রাম, স্টেশন লাগোয়া চামারপাড়া ও আসানসোলের ধাদকা, কালিপাহারি, কল্যাণপুর, গোপালপুর, কাল্লা হাসপাতালের আশপাশে এলাকাতেও প্রচুর শুয়োর চরতে দেখা যায়। বরাকর, সালানপুর, বারাবনি ও রানিগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলেও এই সমস্যা রয়েছে।
আসানসোল পুরসভার সদ্য প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জারির পরেও প্রশাসন উদ্যোগী হল না কেন, সেটাই আশ্চর্যের!” তাঁর দাবি, শুয়োর প্রতিপালন হয়, এমন সব এলাকা চিহ্নিত করে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। সেই সব এলাকার আশপাশে কীটনাশক ছড়ানোর ব্যবস্থা হোক। ওই এলাকার মানুষজনের জন্য টীকাকরণের ব্যবস্থাও জরুরি বলে তাঁর দাবি। শহরের প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়েরও মত, “এ ভাবে শহরের সর্বত্র শুয়োর ঘুরে বেড়ানো মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।”
আসানসোল স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিকাঞ্চন সাহা বলেন, “আমি মহকুমা প্রশাসনকে আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, শীঘ্রই কিছু ব্যবস্থা হবে।” আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বুধবার বলেন, “যেখানে এলাকায় শুয়োর প্রতিপালন হয়, আজ বিকেল থেকে সে সব এলাকা পরিদর্শন করেছি। সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকায় পরিস্রুত জল সরবরাহ ও প্রতিষেধক ছড়ানোর ব্যবস্থাও হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy