Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

লাইসেন্স নবীকরণ ছাড়াই চলছে পিজি-র কিডনি-কেন্দ্র

সরকারি পরিকাঠামোয় রাজ্যের একমাত্র কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্রটি এই মুহূর্তে চলছে বিনা লাইসেন্সে! বছরে যেখানে গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়, এসএসকেএমের সেই কেন্দ্রের আপাতত সরকারি বৈধতা নেই। বছরখানেক আগে লাইসেন্স নবীকরণের সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্যভবনে কোনও কাগজপত্র জমা পড়েনি।

সোমা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০১
Share: Save:

সরকারি পরিকাঠামোয় রাজ্যের একমাত্র কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্রটি এই মুহূর্তে চলছে বিনা লাইসেন্সে! বছরে যেখানে গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়, এসএসকেএমের সেই কেন্দ্রের আপাতত সরকারি বৈধতা নেই। বছরখানেক আগে লাইসেন্স নবীকরণের সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্যভবনে কোনও কাগজপত্র জমা পড়েনি।

রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের এমন গয়ংগচ্ছ মনোভাবে হতবাক স্বাস্থ্যকর্তাদের বড় অংশ। তাঁদের প্রশ্ন, যে কেন্দ্রের সঙ্গে বহু মুমূর্ষু মানুষের অস্তিত্ব জড়িত, সেই কেন্দ্র নিয়ম মানার ক্ষেত্রে এমন নির্বিকার থাকতে পারে কী করে?

কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো জটিল অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে শুধু যে চিকিত্‌সাগত ঝুঁকি রয়েছে তা-ই নয়, রয়েছে প্রতিস্থাপনকে কেন্দ্র করে অঙ্গ পাচার চক্রগুলির সক্রিয় হয়ে ওঠার আশঙ্কাও। তাই সরকারি-বেসরকারি যে সমস্ত কেন্দ্রে কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা রয়েছে, সবগুলিকেই পাঁচ বছর অন্তর সরকারের কাছে ছাড়পত্র নিতে হয়। ছাড়পত্রের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র বেআইনি বলে গণ্য হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের কোনও কেন্দ্রের লাইসেন্স নবীকরণ না করালে সরকার সেই কেন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরাতে পারে। কিংবা কেন্দ্রটি সাময়িক ভাবে বন্ধও করে দিতে পারে। এসএসকেএমের ক্ষেত্রে অবশ্য কোনওটিই হয়নি। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এসএসকেএমের লাইসেন্স নবীকরণ হয়নি নাকি? ব্যাপারটা আমার জানা নেই। খোঁজ নেব।”

এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডের বক্তব্য, “আমি কিছু জানি না। লাইসেন্স নবীকরণের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তাঁরাই এটা জানেন।” আনন্দবাজারের তরফে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হওয়ার পরে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সুপার এবং নেফ্রোলজির চিকিত্‌সকেরা স্বাস্থ্য ভবনে যোগাযোগ শুরু করেন। কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ইউরোলজি, কার্ডিওলজি, কার্ডিওভাস্কুলার সার্জারি ইত্যাদি বিভাগের পারফরম্যান্স রিপোর্টও পাঠাতে হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগে কত জন ডাক্তার, গড়ে কত অস্ত্রোপচার হয়, সব জানাতে হয় স্বাস্থ্য ভবনে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির পারফরম্যান্স রিপোর্টও তৈরি হয়নি।

এসএসকেএম তথা ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র লাইসেন্স নবীকরণ না হওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “কোথাও একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণেই লাইসেন্স নবীকরণ হয়নি। কিন্তু কোনও যুক্তি দিয়েই এই ভুলকে খাটো করা যাবে না। আমরা দ্রুত সব কাগজ পাঠিয়ে লাইসেন্স নবীকরণের ব্যবস্থা করছি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE