Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ডাক্তার নেই, রোগী দেখলেন গ্রুপ ডি কর্মী

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র চিকিত্‌সক আগেই প্রশিক্ষণে গিয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভরসা বলতে ছিলেন একজন হোমিওপ্যাথি চিকিত্‌সক ও একজন নার্স। মঙ্গলবার দু’জনেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না আসায় রোগী দেখলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই। এমনই অভিযোগ উঠেছে ঝালদা ১ ব্লকের ইলু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্বাস্থ্য দফতরের এই উদাসীনতায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। বাসিন্দারা ব্লক সদর ঝালদায় বিএমওএইচ-র কাছে গিয়ে ক্ষোভের কথা জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:২০
Share: Save:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র চিকিত্‌সক আগেই প্রশিক্ষণে গিয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভরসা বলতে ছিলেন একজন হোমিওপ্যাথি চিকিত্‌সক ও একজন নার্স। মঙ্গলবার দু’জনেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না আসায় রোগী দেখলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই। এমনই অভিযোগ উঠেছে ঝালদা ১ ব্লকের ইলু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্বাস্থ্য দফতরের এই উদাসীনতায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। বাসিন্দারা ব্লক সদর ঝালদায় বিএমওএইচ-র কাছে গিয়ে ক্ষোভের কথা জানান।

এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপরে ইলু-জারগো, পুস্তি, নওয়াডি, মাঠারি খামার ও তুলিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু মানুষ নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের কথায়, এই এলাকা থেকে সদর ঝালদার দূরত্ব কমবেশি ১৫-১৬ কিলোমিটার। তা ছাড়া সদর পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল নয়। তাই চিকিত্‌সার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে এই এলাকার মানুষজন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরই নির্ভর করতে হয়। আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তর্বিভাগ চালু থাকলেও অনেকদিন তা উঠে গিয়ে কেবলমাত্র বহির্বিভাগই চালু রয়েছে। কিন্তু তার হালও এই!

মঙ্গলবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বর, মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন কর্মাডির বাসিন্দা মহিলেশ মাছুয়ার ও ইলু গ্রামের রাজীব মাহাতো। তাঁদের কথায়, “চিকিত্‌সক নেই, নার্সও নেই। গ্রুপ ডি কর্মীরাই ওষুধ দিলেন। কপুল ঠুকে ওই ওষুধই খেতে হবে।” রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন ইলুর বাসিন্দা সুধীর মণ্ডল। তাঁর কথায়, “এ দিন তো ডাক্তার বা নার্স কেউই নেই। কেন নেই কেউ জানাতে পারলেন না।”

যাঁরা এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের দেখে ওষুধ দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণির সেই কর্মী গোপাল মণ্ডল ও ভূষণ মাহাতো বলেন, “কী করব! এ দিন ডাক্তারবাবু আসেননি। রোগীরাও আমাদের পরিচিত। ডাক্তারবাবুদের চিকিত্‌সা করতে দেখে যে টুকু জেনেছি, সেই জ্ঞান থেকেই জ্বর বা পেট গোলমালের কিছু ওষুধ দিয়েছি। না হলে এ দিন অনেক রোগীকে খালি হাতে ফেরত যেতে হত।” তাঁরা জানান, জটিল রোগ নিয়ে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের ঝালদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বলা হয়।

স্থানীয় বিজেপি নেতা শঙ্কর মাহাতো বলেন, “এই এলাকার মানুষজনের সরকারি চিকিত্‌সা প্রতিষ্ঠানের উপরই নির্ভর করতে হয়। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজনের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের এই উদাসীনতা আর আমরা মেনে নিতে পারছি না।” স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে তিনি ঝালদায় বিএমওএইচ-র সঙ্গে দেখা করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতে দ্রুত এই অচালাবস্থা কাটে তার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। ঝালদার বিএমওএইচ দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স ছুটিতে রয়েছেন। আর যে হোমিওপ্যাথি চিকিত্‌সক দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

no doctor group-d staff jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE