ঘরে বসে একটানা কাজে বাড়ছে ক্ষতি। ফাইল ছবি।
ঘরে বসে কাজ করাটা বেশ আরামের হবে বলে ভেবেছিলেন অনেকে। যাতায়াতের ধকল কমবে, বাড়িতে সময় দেওয়া যাবে, ঘরের খাবার খাওয়া যাবে, বিশ্রাম হবে ইত্যাদি। সবই হয়েছে কম-বেশি। তবে তার সঙ্গে জুটেছে ঝামেলাও।
৮ ঘণ্টা কাজের সময় বেড়ে ৯-১০ ঘণ্টা হয়ে গেছে। একসঙ্গে ঘর ও অফিস সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। বন্ধ হয়েছে কাজের ফাঁকে আড্ডা, সেই সুবাদে খানিকটা মন হালকা করার বিষয়টিও । ফলে বিরক্তি বাড়ছে। সঙ্গে প্রবল হয়ে উঠেছে ঘাড়ে-কোমরে ব্যথা, কখনও ব্যথা সারা শরীরে। গা ম্যাজম্যাজ, মাথা টিপটিপ, বিরক্তি। শুয়ে-বসে-গড়িয়ে কাজ করেও যা বেড়েই চলেছে।
"সে তো বাড়বেই", জানালেন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সেনগুপ্ত। "কারণ, আগে কাজ করতেন নির্দিষ্ট চেয়ার-টেবিলে বসে। তাতে বসার ধরন ঠিক থাকত। কম্পিউটারের সঙ্গে চোখের দূরত্ব ঠিক থাকত বলে চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়ত না। মাঝে মাঝে উঠতেন। ঘাড়-কোমরের আড় ভেঙে নেওয়ার সুযোগ ছিল। চলাফেরা, ব্যায়াম এখনকার চেয়ে বেশি করতেন। ফলে শরীর সচল থাকত। আর এখন এমন ভাবে বসে বা শুয়ে কাজ করছেন, প্রতিটি পেশি, সন্ধি ভুলভাবে থেকে যাচ্ছে বেশ খানিকটা সময়। যত এ জিনিস চালিয়ে যাবেন, তত বাড়বে ব্যথা। তার উপর বাইরে বেরচ্ছেন না বলে গায়ে রোদ লাগছে না। তার হাত ধরে যদি ভিটামিন ডি কমে যায়, ব্যথা বাড়তে পারে সে কারণেও। কাজেই এখনই সতর্ক হোন, না হলে বিপদ আরও বাড়বে।"
আরও পড়ুন: ওষুধ বা চটজলদি পদ্ধতি নয়, ওজন কমাতে এই সব মেনে চলতেই হবে
সতর্কতা
• অফিসে যেমন চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করতেন, এখনও সেভাবে করুন। চেয়ার-টেবিলের উচ্চতা এমন রাখুন, যাতে ঘাড় সোজা রেখে কাজ করতে পারেন। মাঝেমধ্যে বিছানা বা সোফায় বসে কাজ করলেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে ঘাড় ও কোমর বেঁকে না থাকে।
• সাধারণ চেয়ারে বসে কাজ করলে কোমরের কাছে কুশনের সাপোর্ট দিন।
• ফোন এলে কাঁধ আর ঘাড়ের মাঝে ফোন ধরে কাজ চালিয়ে যাবেন না। হয় স্পিকার চালু করুন অথবা ইয়ার-ফোনে কথা বলুন, নয়তো কাজ বন্ধ রাখুন।
• কম্পিউটারে ঘণ্টাখানেক কাজ করার পর অন্তত মিনিট দশেক চোখের কাজ বন্ধ রাখুন। এ সময় একটু চলাফেরা কি স্ট্রেচিং করলে বা চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলে চোখ, ঘাড়, কোমর-সবই বিশ্রাম পাবে।
এক ঘণ্টা কাজ করে ১০ মিনিটের বিরতি নিতে হবে। ফাইল ছবি।
• ৮-১০ ঘণ্টা কাজের মাঝে অন্তত দু-বার খোলা হাওয়ায় ১০ মিনিট ঘুরে আসুন।
• দিনে অন্তত একবার কয়েকটি ব্যায়াম করুন।
আরও পড়ুন: ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে আর কত দিন, ভ্যাকসিনই বা কবে?
ব্যায়াম
• দিনে একবার কি দু-বার ১৫-২০ মিনিট একটু জোর কদমে হাঁটুন।
• রোটেশনাল নেক এক্সারসাইজ করুন। ব্যাপারটা আর কিছুই না, প্রথমে শিরদাঁড়া সোজা রেখে দাঁড়িয়ে বা বসে ঘাড় পিছনে নিয়ে ছাদের দিকে তাকান। এবার ঘাড় ঝুঁকিয়ে তাকান মেঝের দিকে, এরপর পর্যায়ক্রমে ডানদিকে ও বাঁদিকে তাকাবেন। এই ব্যায়াম ঘাড়কে সচল রাখে।
আরও পড়ুন: এই ফলের বীজেই কেল্লাফতে, ভুলেও ফেলে দেবেন না কিন্তু
• করুন স্ট্যাটিক নেক এক্সারসাইজ। বাঁ হাত দিয়ে মাথাকে ডান দিকে ঠেলুন, মাথা সোজা থাকবে। এবার ডান হাতের চাপে মাথাকে বাঁ দিকে ঠেলার চেষ্টা করুন। মাথা সোজা থাকবে। মাথার পিছনে দু-হাত জড়ো করে মাথা সামনে ঠেলুন। মাথা সোজা। কপালে দু-হাত রেখে মাথা পিছনে ঠেলবেন। এবারও মাথা সোজাই থাকবে। তিনটে করে সেট করবেন।
• কোমর ব্যথা কম রাখতে করুন ভুজঙ্গাসন ও শলভাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy