প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভাল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দিল শমিতার। কারণ ছেলে লেখাপড়ায় ভাল। বর্তমানে বহুজাতিক কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মী। এরকম ‘সৎপাত্র’-কে কেউ হাতছাড়া করে? শমিতা একবার বাড়িতে বলার চেষ্টা করেছিল যে, সে এখনও দাঁড়ায়নি। নিজে কিছু একটা চাকরি না পেলে বিয়ে করাটা ঠিক হবে না। বাড়িতে ওর কথা ধোপে টেকেনি। ওর হবু বর যা রোজগার করে, তাতে ওর আবার আলাদা করে রোজগার করার দরকার কী! অতএব একমাত্র করণীয় কী? বিয়ে!
এই যে কাহিনি, এটা কিন্তু আমাদের চার পাশে হরদমই ঘটছে। একটা মেয়ে ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে তার পছন্দের বিষয় পড়বে, সেও চাকরি করবে। কিন্তু আস্তে আস্তে এই চাপিয়ে দেওয়া সামাজিক কাঠামো তার অনেক স্বপ্ন গিলে ফেলে। শমিতার এই গল্পের উপসংহার আমরা জানি না। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে নারী নির্যাতনের যে ভয়াবহতা আমরা আজও দেখি, তার মূলে কিন্তু নারীর অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা না থাকা। বিয়ের পর হয়ত ভাবছেন সঙ্গীর রোজগারই সব, কিন্তু জীবনের সব সময়টা এই রকম সুখের থাকবে তো? এই সমাজকাঠামোয় ভাল থাকতে গেলে কেন সঙ্গীর উপর নির্ভর না করে নিজে স্বনির্ভর হওয়া জরুরি?
১) প্রথমত নারী স্বনির্ভর না হলে পুরুষ ধরেই নেই, নারী তার অনুগত। কাজেই আপনার সঙ্গী ভেবে নিতেই পারেন, তিনি যা বলবেন, তার সবটাই আপনি মানতে বাধ্য। একটা সময় এই চাপিয়ে দেওয়া বিষয় মানতে আপনার ভাল লাগবে তো?
২) একটি যথার্থ দাম্পত্যে কোনও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী দুজনেরই মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি রোজগার না করেন, তা হলে তিনি ধরে নেবেন সব সিদ্ধান্তই তিনি নিজেই নেবেন। কারণ সংসার খরচের টাকা আসে তাঁর রোজগার থেকেই।
৩) আপনার সঙ্গীর রোজগারে থাকতে থাকতে এক সময় নিজেকে কিন্তু বোঝাও মনে হতে পারে। কারণ আপনার সব শখ-আহ্লাদ পূরণের জন্য তাঁর কাছে বার বার হাত পাততে হবে। সেটা কি একজন নারীর পক্ষে খুব সম্মানের? আর বারবার ইতিবাচক উত্তর পেতে পেতে একদিন যে নেতিবাচক উত্তর পাবেন না, এ রকমও কিন্তু নয়। তখন কিন্তু ভাল লাগবে না।
৪) আপনার সঙ্গী হয়ত মুখে বলবেন, তাঁর রোজগার থাকলেই যথেষ্ট। আপনার আর রোজগার করার দরকার কি? কিন্তু আপনি হয়তো দেখবেন, তিনি সবচেয়ে বেশি সম্মান করেন সেই মহিলাকে, যিনি স্বনির্ভর। কথায়-কথায় সেই প্রসঙ্গ কখনও উঠলে নিজেকে কিন্তু খুব ছোট মনে হবে।
৫) অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এক ধরনের ব্যক্তিত্ব তৈরি করে। আপনি যদি সেটা না হন, তাহলে আপনার সঙ্গী আপনাকে কিন্তু সে ভাবে গুরুত্ব দেবেন না। অনেক সময়ই দেখা যায়, সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ বা সম্পর্কে সমস্যা, সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনার রোজগার না থাকলে আপনাকে পরজীবীর মতো থেকে আপনার সঙ্গীর সব অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করতে হবে। কাজেই এই ভুল করবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy