বাবা-মায়ের আদর অঙ্কিতকে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
গত বছর আইপিএলে ‘ইতিহাস’ সৃষ্টি করে মাত্র ১৩ বছরেই নিলামে উঠে বিক্রিও হয়েছিল বৈভব সূর্যবংশী। তাঁকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকায় তুলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। এ বার ষোল বছর পূর্ণ করার আগেই বাংলা রঞ্জি দলে সুযোগ পেয়ে সকলকে চমকে দিল বনগাঁর বাসিন্দা অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায়। ২৮ জানুয়ারি ষোল বছর পূর্ণ করবে সে।
২৩ জানুয়ারি রঞ্জি ট্রফির ম্যাচের বাংলা মুখোমুখি হবে হরিয়ানার। মঙ্গলবার সেই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেছে সিএবি। সেই দলেই জায়গা করে নিয়েছে অঙ্কিত।
বাংলা রঞ্জি দলের সুযোগ পাওয়ার আগেই অবশ্য অঙ্কিত অনূর্ধ্ব ১৬ এবং অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলে সুযোগ পেয়েছিল।
অনূর্ধ্ব ১৯ বিনু মাঁকড় ট্রফিতে বাংলার হয়ে বাঁহাতি ব্যাটার অঙ্কিত ৯১ বলে ১১৫ রান করেছিল। এ ছাড়াও, আরও একটি শতরান এবং ৯২ রানের ইনিংস খেলেছিল সে।
বাংলার অনূর্ধ্ব ১৬ দলের হয়ে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২২৪ বলে ১৮৮ রান করে অঙ্কিত। বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলে নজর কাড়ার পরে অঙ্কিত বাংলার রঞ্জি ট্রফির দলে স্থান পেল।
গোপালনগরের চালকিতে বনগাঁ-চাকদহ সড়কের পাশে দোতলা বাড়ি অঙ্কিতদের। বাবা অনুপ ঠিকা ব্যবসায়ী। মা মিঠু সংসার সামলান। দুই ভাইবোনের মধ্যে ছোট অঙ্কিত। বনগাঁ হাই স্কুলের ছাত্র অঙ্কিত এ বার দশম শ্রেণিতে উঠেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী তাঁকে ফোন করে রঞ্জি দলে সুযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তারপর থেকেই নিজেকে মানসিক ভাবে তৈরি করছে অঙ্কিত। ১৮ জানুয়ারি থেকে কল্যাণীতে বাংলা দলের শিবির। সেখানে যোগ দিতে যাওয়ার আগে নিজের বাড়িতে বসে অঙ্কিত বলে, ‘‘নিজের উপরে কোনও রকম চাপ তৈরি করতে দিচ্ছি না। রঞ্জি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেলে নিজের স্বাভাবিক খেলাই খেলব।’’
পাঁচ বছর বয়স থেকেই টিভিতে বিশেষ করে প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ানের খেলা দেখে অঙ্কিত ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ছেলের উৎসাহ দেখে বাবা তাকে ব্যাট-বল কিনে দেন। সাড়ে আট বছর বয়সে বাবা তাকে নিয়ে যান বনগাঁ শহরে সোনালি স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে। সেখানে প্রশিক্ষক দোলন গোলদারের কাছে শুরু হয় কোচিং। দোলন বলেন, ‘‘দিন যত এগিয়েছে, অঙ্কিত নিজেকে প্রমাণ করেছে।’’
কলকাতার শ্যামবাজার ক্লাবেও সিএবি লিগে খেলে ফেলেছে সে। ভোরে উঠে বনগাঁ থেকে ৪টে ২৫ মিনিটের ট্রেনে শ্যামবাজার ক্লাবে গিয়ে প্র্যাকটিস করেছে সে। কোথাও খেলা থাকলে অঙ্কিতের সফরসঙ্গী, সম্পর্কে দুই দাদা সুমিত রায় এবং অমিত চট্রোপাধ্যায়।
ছেলের সাফল্যে খুশি বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষক, বন্ধুরা। মায়ের কথায়, ‘‘ঈশ্বর আশীর্বাদ করলে ছেলে নিশ্চয়ই একদিন ভারতীয় দলে খেলবে।’’ স্কুলের শিক্ষক চন্দন ঘোষ ফেসবুকে ছাত্রের সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর মতো সকল বনগাঁবাসী চাইছেন, অঙ্কিত ভারতীয় দলেও জায়গা করে নিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy