— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে, তা-ই সয়... এ কথা যেমন ঠিক, তেমনই সুস্থ থাকতে নিয়ম মানাও জরুরি। মানুষের নানাবিধ শারীরিক সমস্যার পিছনে দায় যেমন পরিবেশের, তেমনই খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন রুটিনও অনেকাংশে দায়ী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন, কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন... স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সে বিষয়গুলোও জরুরি। আসলে নিয়ম মেনে চললেও, খামতি থেকেই যায়। তার ফলেই শরীরে বাসা বাঁধে কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, গ্যাস, অম্বলের মতো সমস্যা।
অথচ এই বিশ্বেই এমন পাঁচটি জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষের গড় আয়ু অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের তুলনায় অনেকটাই বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লু জ়োন বলে পরিচিত সেই অঞ্চলের মানুষদের খাদ্যাভ্যাসেই লুকিয়ে রয়েছে দীর্ঘ সময় জুড়ে সুস্থ ও কার্যক্ষম থাকার রহস্য।
ব্লু জ়োন
গত বছর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘লিভ টু হান্ড্রেড – সিক্রেট অব দ্য ব্লু জ়োনস’। তার পর থেকেই চর্চার শীর্ষে এই অঞ্চলের মানুষদের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস। অবশ্য তার আগেও এই এলাকার মানুষদের নিয়ে লিখেছেন বিখ্যাত লেখক ডান বুয়েটনার। কিন্তু আদতে এই ব্লু জ়োন কোনটি? কী এমন থাকে সেই সব অঞ্চলের মানুষের খাদ্যতালিকায়? জাপানের ওকিনাওয়া, ইটালির সার্ডিনিয়া, কোস্টারিকার নিকোইয়া, গ্রিসের ইকারিয়া এবং ক্যালিফর্নিয়ার লোমা লিন্ডা—এই পাঁচ জায়গা হল বিশ্বের ব্লু জ়োন। সিঙ্গাপুর এই তালিকায় নবতম সংযোজন। জীবনধারণ সম্পর্কে ভীষণ সচেতন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। খাদ্যতালিকায় তারা রাখে তাজা শাকসবজি, ফল। নিয়মিত শারীরচর্চার পাশাপাশি সকলের সঙ্গে বজায় রাখে সুসম্পর্ক। ফলে ক্যানসার, ডায়াবিটিস, ওবেসিটি, হৃদ্রোগের মতো সমস্যা এখানে খুবই কম।
কিন্তু ব্লু জ়োনের মানুষ যে ধরনের খাবার খায়, যে পরিবেশে থাকেন, তা তো এ দেশে পাওয়া সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট অনন্যা ভৌমিক বলছেন, তাদের নিয়মকানুন, তালিকায় থাকা খাবারের পুষ্টিগুণ অনুযায়ী আমাদের দেশে যে সকল খাবার সহজলভ্য, তা খাওয়া জরুরি। তাতে সুস্থতার পাশাপাশি কার্যক্ষম থাকবে শরীর।
কী খাবেন?
ব্লু জ়োন ডায়েটে থাকে মূলত ফাইবার সমৃদ্ধ, উদ্ভিদজাত খাবার। এ দেশে সহজলভ্য খাবারের মধ্যে তালিকায় রাখতে পারেন চাল, গম, মিলেট, বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিভিন্ন রকম বীজ, বিনস ও বাদাম। খেতে পারেন যে কোনও তাজা আনাজ। বেগুন, বিট, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, বেলপেপার, মিষ্টি আলু ইত্যাদি খাওয়া ভাল। ফলের মধ্যে যে কোনও ধরনের বেরি, লেবু ও আপেল রাখতে পারেন। তা ছাড়া কফি, ডার্ক চকলেট ইত্যাদিও খাওয়া যেতে পারে। অনন্যা বলছেন, এই ধরনের খাবারে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে, যার জেরে শরীরে ক্রনিক রোগ সহজে বাসা বাঁধে না। তালিকায় থাকতে পারে ভাত। তা ছাড়া, রসম, সম্বরের মতো দক্ষিণী খাবারও কিন্তু উপকারী।
মেনে চলুন
খেয়াল রাখবেন
অঞ্চলভেদে এই ব্লু জ়োন ডায়েটের খাদ্যতালিকায় সামান্য বদল আসতে পারে। তবে খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলা জরুরি। দিনে যতবারই খাবেন, কম পরিমাণে ও সময় মেনে। রাতের খাওয়া সেরে ফেলুন তাড়াতাড়ি। এতে অন্তত যত দিন বাঁচবেন রোগমুক্ত জীবন কাটাতে পারবেন।
এই ডায়েট অনুসরণে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, শরীর হালকা হয়, পেশির নমনীয়তা বাড়ে। ফলে বেশি কর্মক্ষম হয়ে ওঠে মানুষ। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই খাদ্যাভ্যাস ভাল। তবে খেয়াল রাখবেন, বাদাম ও বাদামজাত খাবারে অ্যালার্জি থাকে অনেকেরই। তাই এ ধরনের ডায়েট অনুসরণ করার আগে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy