নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নের ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া হয়ে যেতে পারে পরচর্চার মাধ্যমে।
পরিচিতদের আচরণ নিয়ে মন্তব্য করা নতুন নয়। তাঁদের কিছু অভ্যাস নিয়ে ঠাট্টা, মশকরাও হয়ে থাকে। কাকে কেমন দেখতে। কে কী ভাবে কথা বলেন। কার কাকে বেশি ভাল লাগে। এমন চর্চা পরিচিত অধিকাংশের কাছেই। যিনি করছেন সেই আলোচনা, তাঁর কথায় অনেকে মজা পান। সঙ্গও দেন। তবে সকলের মনে কি সম্মানের স্থান পান সেই ব্যক্তি, যিনি অন্যের খামতি তুলে ধরেন বারবার?
এ নিয়ে কিন্তু মতভেদ আছে। কেউ মনে করেন, এতে সামাজিক গুরুত্ব পাওয়া যায়। কিন্তু অধিকাংশেরই বক্তব্য, এই কাজ নিজের নেতিবাচক দিকটি তুলে ধরে। অন্যরা তাঁর খামতি দেখতে শুরু করতে পারেন। ফলে সামনে কেউ না বললেও, আসলে ভিতরে একটা বাধা তৈরি হতে পারে তাঁর সঙ্গে মন খুলে মেলামেশার ক্ষেত্রে।
চরিত্রের ঠিক কোন কোন দিক এর জেরে প্রকাশ পেতে পারে? দেশ-বিদেশের মনোবিদেরা এ নিয়ে নানা কথা বলে থাকেন। একটা বিষয়ে সকলেই একমত, নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নের ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া হয়ে যেতে পারে এমন কাজের মাধ্যমে।
যে কোনও কাজই নির্দিষ্ট ব্যক্তির সম্পর্কে পারিপার্শ্বিকের কাছে একটি ধারণা বহন করে নিয়ে যায়। ফলে অন্যকে নিয়ে যিনি চর্চা করছেন, তিনি মানুষটি কেমন, সে প্রশ্ন বাকিদের মনের মধ্যে উঠতেই পারে। মত এ শহরের মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যেমন অন্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্য করার চেষ্টা তখনই হয়, যখন নিজেকে নিয়ে হয়তো কোনও সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি থাকলে অনেক সময়েই অপরের খামতি ধরার ইচ্ছা প্রকাশ পেতে পারে। এবং অন্যের ত্রুটি খোঁজা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, তখন সেই প্রবণতা বাকিদের চোখেও পড়তে পারে।’’ নিজেও সে ক্ষেত্রে অন্যের কাছে সমালোচনার পাত্র হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে।
যদি নিজেকে নিয়ে কেউ স্বচ্ছন্দ্য থাকেন, তবে অন্যকে সাহায্য করতে চেষ্টা করার প্রবণতা বেশি আসার কথা। এ কথা নতুন নয়। দেশ-বিদেশের মনোবিদেরা বলেই থাকেন। কিন্তু এর বিপরীত হয় কেন? অনুত্তমার বক্তব্য, ‘‘এমন আচরণ দেখলে বোঝা যায়, সেই ব্যক্তির মধ্যে কোনও হীনমন্যতা রয়েছে। অথবা অন্যের প্রতি ঈর্ষা থেকেও এ ধরনের আচরণের ইঙ্গিত আমরা পেয়ে থাকি।’’ মনোবিদের বক্তব্য, ছোট বৃত্তের মধ্যে কাউকে নিয়ে মজা করা এক রকম। কিন্তু তা হেনস্থার পর্যায় চলে যায় বহু ক্ষেত্রে। সেই আচরণ নিজেকেও অন্যদের চোখে নিচু করে দিতে পারে।
ফলে কাজ করার আগে ভাবার কথা মনে রাখা যাক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy