শিশুকে ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ালে কী বিপদ হতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।
জ্বর-সর্দি হলেই দোকান থেকে কিনে ফেলা চেনা অ্যামোক্সিসিলিন, পেটের অসুখ হলেই জনপ্রিয় মেট্রোনিডাজোল গোত্রের ওষুধ যথেচ্ছই খাওয়া হয়। শুধু নিজেই খাচ্ছেন না, বাড়ির শিশুদের চিকিৎসাও অহরহ সেরে ফেলছেন এ ভাবেই। আর তাতে কী বিপদ ঘনাচ্ছে তা টের পাচ্ছেন না বেশির ভাগই।
কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে, দেশে নবজাতক-মৃত্যুর অন্যতম কারণ হল, শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধ ক্ষমতা (রেজিস্ট্যান্স) জন্মে যাওয়া। যার পিছনে নির্বিচারে অ্যন্টিবায়োটিকের প্রয়োগই মূল কারণ।
অত্যধিক অ্যন্টিবায়োটিকের কুপ্রভাব যে কতটা, সে সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও একটি রিপোর্ট রয়েছে। হু জানিয়েছে, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না-করে অল্প সময়ের ব্যবধানে এত ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে রোগ সারানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। পরিণামে দুর্ভোগ বাড়ছে। নিরাময়যোগ্য অসুখও চেনা ওষুধে সারছে না। সাধারণত মরসুম বদলের সময়ে জ্বর-সর্দিকাশিতে বেশি ভোগে শিশুরা। বেশির ভাগ জ্বরের কারণই ভাইরাস। সাধারণ ভাবে ভাইরাস শরীরে ১৪ দিনের বেশি কখনওই থাকে না। কিন্তু ভাইরাস ঘটিত অসুখেও মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে শিশুকে। ব্যাক্টেরিয়াঘটিত অসুখ সারাতেই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ হয়। কাজেই অসুখ কী কারণে হয়েছে তা না জেনে ওষুধ খাইয়ে দেওয়ার এই প্রবণতাই বিপদ ডেকে আনছে।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, যত খুশি যেমন খুশি অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে প্রবেশ করিয়ে এর আসল কার্যকারিতাই নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। খোলা বাজারে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি চলছে। এর জেরে ওষুধ কেনার জন্য কোনও রকম বাধা-নিষেধই নেই। ফলে ইচ্ছামতো ওষুধ কিনে খাওয়ার উপায় রয়েছে। ওষুধ যা-ও বা কেনা হল, পুরো কোর্স শেষ করেন না বেশির ভাগই। অসুখ ভাল হলেই ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা কমে। ফলে শরীরে প্রবেশ করা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে জীবাণুগুলো কিছু দিন ঝিমিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু কিছু দিন পরেই ফের মাথাচাড়া দিল। হয়তো কোনও কোনও ব্যাক্টেরিয়া তার চরিত্র বদলে আরও সংক্রামক হয়ে উঠল, যা কিনা অ্যন্টিবায়োটিককে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে। এর জন্য ভীষণ জরুরি অ্যান্টিবায়োটিক নির্ভরতা কমানো। কোন পর্যায়ে রোগীকে কী অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে, তার সুনির্দিষ্ট নীতিকে বলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রোটোকল। তা মেনে চলতেই হবে। আর চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে কোনও রকম ওষুধ খাওয়াই চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy