Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

যথেচ্ছ পিল, আশঙ্কা অসুস্থ সন্তানের

সম্প্রতি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের ডাউন সিনড্রোম সংক্রান্ত গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমনই তথ্য। যা আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণাপত্র ‘আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিওলজি’তে প্রকাশিত হয়েছে।

সুপ্রিয় তরফদার ও তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৩
Share: Save:

অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের পরে সন্তানধারণ এড়াতে যখন-তখন ইমার্জেন্সি পিলের ব্যবহার বাড়াচ্ছে বিপদ। এমনকি, বাড়ছে সন্তানের ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও।

সম্প্রতি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের ডাউন সিনড্রোম সংক্রান্ত গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমনই তথ্য। যা আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণাপত্র ‘আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিওলজি’তে প্রকাশিত হয়েছে।

ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ইমার্জেন্সি পিলের ব্যবহারে মায়ের জিনগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কারণ, বারবার ইমার্জেন্সি পিল ব্যবহারের ফলে ডিম্বাশয়ে নানা প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। যার জেরে জিনগত পরিবর্তন হয় আর তার প্রভাব সরাসরি পড়ে গর্ভজাতের উপরে। ফলে তার ক্রোমোজমে ত্রুটি দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দেহের তুলনায় মাথা, কান এবং ঘা়ড় ছোট হয় ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের। বুদ্ধির বিকাশ হয় অনেক দেরিতে।

ইমার্জেন্সি পিল যে গর্ভজাতের পক্ষে নিরাপদ নয়, তা মেনে নিচ্ছেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, সন্তানধারণ রুখতে সাধারণ পিলের থেকে ২১ গুণ বেশি ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন থাকে ইমার্জেন্সি পিলে। ফলে ডিম্বাশয়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। যা ডিম্বাশয়ের স্বাভাবিক কাজ আটকে দেয়, ক্ষতিগ্রস্ত করে ডিম্বাণুকে। ইমার্জেন্সি পিল সম্পূর্ণ নিরাপদও নয় বলে তাঁর দাবি।

এই গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক সুজয় ঘোষ। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তের কারণ হিসেবে বাবা-মায়ের জিনগত ত্রুটিকেই ধরে নেওয়া হয়েছে। একই পরিবারের মধ্যে বিবাহের রীতির জেরেই পরবর্তী প্রজন্মকে ভুগতে হয়, এটাই ছিল প্রতিষ্ঠিত তথ্য। নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শুধু মাত্র বাবা-মা নন, পরিবারের অন্যান্যদের কিংবা পূর্বপুরুষের জিনগত ত্রুটির জেরেও পরবর্তী প্রজন্মকে ভুগতে হতে পারে। এ ছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে মায়ের ইমার্জেন্সি পিল কিংবা তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের জেরেও সন্তানের জিনগত ত্রুটি তৈরি হতে পারে বলে জানান গবেষক অনির্বাণ রায়।

এই তত্ত্ব মেনে এসএসকেএম হাসপাতালের শিশুবিভাগের চিকিৎসক সুমন্ত্র সরকার জানান, আগে দেখা যেত, ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তের মায়ের বয়স ২৯ বছরের বেশি। কিন্তু এখন অল্পবয়সি মায়ের সন্তানেরাও এই বৌদ্ধিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে বাহ্যিক কারণেই ঘটেছে জিনগত পরিবর্তন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE