Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
neck

ঘাড় ও পিঠের ব্যথায় প্রায়ই ভোগেন? এ সব মানলে ওষুধ ছাড়াই মিলবে আরাম

দিনের পর দিন এমন যন্ত্রণা সইতে সইতে পেশীগুলি আড়ষ্ট হয়ে গিয়ে স্পন্ডিলোসিস ডেকে আনে। ভারী ব্যাগ বইলেও এমনটা হতে পারে।

ঘাড়ের ব্যথা রুখতে প্রতি দিন রপ্ত করুন কিছু ব্যাযাম। ছবি: শাটারস্টক।

ঘাড়ের ব্যথা রুখতে প্রতি দিন রপ্ত করুন কিছু ব্যাযাম। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৮
Share: Save:

দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে, নয়তো টেবিল-চেয়ারে ঘাড় গুঁজে কাজ। স্পন্ডিলোসিসের মতো বড়সড় ক্রনিক অসুখের ভয় তো আছেই, এ ছাড়াও ঘাড় ও মাথার সাধারণ যন্ত্রণাও প্রায়ই হানা দেয়। ঘাড় থেকে যন্ত্রণা নামতে থাকে কাঁধের দিকে। দিনের পর দিন এমন যন্ত্রণা সইতে সইতে পেশীগুলি আড়ষ্ট হয়ে গিয়ে স্পন্ডিলোসিস ডেকে আনে। ভারী ব্যাগ বইলেও এমনটা হতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, ব্যথার বাড়াবাড়ি হলে চিকিৎসকের শরণ তো নিতেই হবে, কিন্তু ব্যথা শুরুতে বা ব্যথা হওয়ার আগেই কিছু জরুরি ব্যায়াম আয়ত্তে আনলে ব্যথা সরে দ্রুত।

এ সব ব্যায়ামের সবচেয়ে বড় সুবিধা, এগুলি সময়সাপেক্ষ নয়। দিন-রাতের যে কোনও সময়ই অভ্যাস করা যায়। অস্থিবিশেষজ্ঞ অমিতাভ নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘দীর্ঘ দিন চাপ পড়তে পড়তে নির্দিষ্ট স্থানের পেশীগুলি শক্ত হয়ে যায়। তা ছাড়া, সোজা কথায় বোঝাতে গেলে পেশীসন্ধি ও অস্থিসন্ধিগুলিতে যে জেল থাকে তাও অনেকের ক্ষেত্রে শুকোতে শুরু করে। ফলে অস্থি ও পেশীগুলি ঘষা খায় একে অন্যের সঙ্গে, ফ্লেক্সিবিলিটি নষ্ট হয়। ফলে ব্যথা কোপ বসায়। ঘাড়ের ব্যথার মূল কারণ এগুলিই। কিছু শরীরচর্চায় অভ্যস্ত থাকলে এই বিপদ অনেকটাই ঠেকানো যায়। পেশী শিথিল হয়, প্রদাহও কমে।’’

আরও পড়ুন: খুশকি থেকে চুল ঝরা, ওষুধ ছাড়াই শীতে চুলের সব সমস্যাকে জব্দ করুন এ ভাবে

কেমন সে সব ব্যায়াম?

ঘাড় ঝোঁকানো:

অন্যায়ের সামনে মাথা না ঝোঁকাতে চাইলেও মাঝে মাঝেই নিজের বুকের কাছ পর্যন্ত ঘাড় ঝোঁকান, এতে আখেরে লাভ আপনার। কোনও এক জায়গায় দাঁড়িয়ে মাথার পিছনে নীচের দিকে দু’হাত ভাঁজ করে রাখুন। এ বার ধীরে ধীরে ঘাড় নামিয়ে আনুন বুকের দিকে। যতটা পারবেন, ততটাই ঝুঁকিয়ে এনে দশ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। আবার ধীরে ধীরে সোজা করুন মাথা। ৫ বারে এক সেট হয়। দু’টি সেট অভ্যাস করুন।

ঘাড় ঘোরানো:

সোজা হয়ে বসে ঘাড়কে প্রথমে বাঁ দিকে ঘুরিয়ে বাঁ কাঁধের দিকে দেখুন, এই অবস্থায় ১০ সেকেন্ড রেখে মাথা সোজা করুন। এ বার ডান দিকে একই ভাবে ঘুরিয়ে ডান কাঁধের দিকে তাকান। এ ক্ষেত্রেও ১০ সেকেন্ড রেখে ফের সোজা করুন মাথা। প্রতি দিকে ১০ বার করে এক সেট অভ্যাস করুন। অথবা ডান হাত দিয়ে চাপ দিয়ে বাঁ দিক ও বাঁ হাত দিয়ে চাপ দিয়ে ডান দিকে সরান ঘাড়। এতেও উপকার মিলবে।

চক্রাকারে ঘোরানো: ঘাড়কে কেন্দ্র করে মাথা চারপাশে ঘোরাতে থাকুন। এক বার ঘড়ির কাঁটার দিকে, আর এক বার ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরান মাথা। যেখান থেকে মাথা ঘোরানো শুরু করলেন, সেখানে পোঁছে ১০ সেকেন্ড থেমে ফের ঘোরান মাথা। এই ভাবে বার দশেক করলেই অনেকটা আরাম পাবেন।

আরও পড়ুন: থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যানসার? সম্পূর্ণ সুস্থ থাকুন এই সব উপায়ে

কাঁধ স্ট্রেচ:

সোজা হয়ে দু’পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে পিঠের পিছন দিকে টানটান করে দিন দুই হাত। এই সময় যেন দু’হাত আঙুলে জড়ানো অবস্থায় একে অন্যকে ছুঁয়ে থাকে। এ বার যতটা পারেন কাঁধ ও হাতকে স্ট্রেচ করে দিন পিছন দিকে। এই অবস্থায় এক বার বাঁ দিকে আর এক বার ডান দিকে ঘোরান মাথা। প্রতি দিকেই ১০ সেকেন্ড করে ধরে রাখুন।

মাথায় চাপ:

সোজা দাঁড়িয়ে দু’হাত মাথার পিছনে রেখে মাথাকে হাতের শক্তি দিয়ে সামনের দিকে ঠেলুন। মাথাও সেই সময় সমশক্তি দিয়ে সেই চাপ প্রতিহত করে উল্টো চাপ দিয়ে সোজা হয়ে থাকার চেষ্টা করবে। হাত একবার মাথার পিছনে, এক বার সামনে, এক বার ডান দিকে ও বাঁ দিকে একই ভাবে রেখে ব্যায়ামটি করতে হবে। ডান ও বাঁ দিকে চাপ দেওয়ার সময় দু’টির বদলে একটি হাতের তালু ব্যবহার করুন। প্রতি দিন প্রতি দিকে অন্তত পাঁচ বার করে এই ব্যায়াম অভ্যাস করলে ঠেকানো যাবে স্পন্ডিলোসিসকে। এর সঙ্গেই স্পন্ডিলোসিস ঠেকাতে বেশি ভারী ব্যাগ প্রতি দিন না বওয়া, মাঝে মাঝেই কাজের মাঝে উঠে একটু হেঁটে আসা, কাজের অবসরে দু’-একটা ঘাড়ের ব্যায়াম করে নেওয়া, ঘুমের ধরনের প্রতি নজর রাখা এগুলোও সমান জরুরি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy