শরীর সুস্থ রাখতে ফাইবারের ভূমিকা খুব জরুরি। অধিক মাত্রায় পুষ্টির জোগান না দিলেও ইনটেস্টাইনের স্বাস্থ্য রক্ষায় ফাইবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফল, আনাজপাতি, হোলগ্রেন ফাইবারে ভরপুর। তবে কী ধরনের ফাইবার খাবেন, তা নির্ভর করছে আপনার শরীরের উপরে।
ফাইবার আসলে কী?
শস্য, দানা, ফল বা আনাজপাতিতে ফাইবার থাকে। পেট ভরাতে ও পেট পরিষ্কার করাই ফাইবারের আসল কাজ। কিছু ফাইবার হজমও করা যায় না। বিশেষত বীজ, যে ভাবে খাবেন, সে ভাবেই তা মল দ্বারা শরীরের বাইরে নির্গত হয়। কিন্তু ইনটেস্টাইন পরিষ্কার রাখে। শরীরের টক্সিন বার করতে সাহায্য করে ফাইবার।
কোন কোন খাবারে থাকে?
প্রথমেই বুঝতে হবে ফাইবারের ভাগ। ফাইবার আসলে দু’রকমের হয়— দ্রাব্য এবং অদ্রাব্য। দ্রাব্য ফাইবার জলের সঙ্গে মিশে জেলের মতো তরল প্রস্তুত করে। যেমন ধরুন, ওটস, বার্লি, আপেল, সিট্রাস ফল (মুসাম্বি, কমলালেবু), গাজর ইত্যাদি। এই দ্রাব্য ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরল ও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই জাতীয় ফাইবার রোজ খাদ্যতালিকায় রাখা ভাল। অন্য দিকে অদ্রাব্য ফাইবার পেট পরিষ্কার করে। যেমন ধরুন, আটা, বাদাম, বীজ, আনাজ ইত্যাদি। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
রোজ কতটা ফাইবার দরকার?
এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রত্যেক দিন ২০ থেকে ২৫ গ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ৩৮ থেকে ৪০ গ্রাম ফাইবার প্রয়োজন। তবে এই ফাইবারের পরিমাণটা বুঝতে হবে। যেমন, এক কাপ আপেলে ফাইবার থাকে ২-৪ গ্রাম। অন্য দিকে এক কাপ ডালে ফাইবার থাকে ৬-৭ গ্রাম। এ বার সারা দিনের খাদ্যতালিকা ধরে সেই হিসেব করে নিতে হবে।
এক নজরে
•কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ফিশারের মতো সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলে অবশ্যই রোজকার ডায়েটে ফাইবার রাখতে হবে। এতে বাওয়েল মুভমেন্ট স্বাভাবিক হবে। তার সঙ্গেই সমস্যাও কমবে।
•অন্য দিকে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাকে আলসার থাকলে ফাইবার নিয়ন্ত্রিত ভাবে গ্রহণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বেশি ফাইবার খেলে পেটে ব্যথা বা জ্বালা করার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তখন সলিউবল বা দ্রাব্য ফাইবার খেতে হবে। ইনসলিউবল ফাইবার কমাতে হবে, অবশ্যই ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শে।
•হুট করে হাই ফাইবার ডায়েট শুরু করা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই ধীরে ধীরে খাদ্যতালিকায় ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
•ফাইবার অনেকটা স্ক্রাবার-ব্রাশের মতোই কোলন পরিষ্কার রাখে। এতে কোলন ক্যানসারের আশঙ্কাও কমে।
•বেশি ফাইবার খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকে। ফলে জাঙ্ক খাওয়ার প্রবণতা কমে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েটে ফাইবারের পরিমাণ একটু বাড়াতে পারেন।
•মানবশরীরের অন্ত্রে অনেক ভাল ব্যাকটিরিয়া থাকে, যা স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়ক। এই ব্যাকটিরিয়ার খাদ্য জোগায় ফাইবার। ইনটেস্টাইনে ভাল ব্যাকটিরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতেও ফাইবারের ভূমিকা রয়েছে।
বয়স ও রোগ অনুসারে ফাইবার গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে হতে পারে। তাই প্রয়োজনে খাদ্যতালিকা বানানোর আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
তথ্য সহায়তা: ডায়াটিশিয়ান হিনা নাফিস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy