পুরনো জিনিসের কী এক অমোঘ টান! তার সময় শেষ হয়েও হয় না শেষ। কাঠের কারুকাজ করা বিশাল সোফা, বারান্দায় গ্র্যান্ডফাদার ক্লকের ‘ঢং ঢং’ বা ঘরের কোনে রাখা গ্রামাফোন যেন এক ঝলকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় পুরনো দিনে। এমন রেট্রো জিনিসগুলিই আবার ট্রেন্ডি হয়ে উঠছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। ফ্যাশন ছাড়িয়ে রেট্রো প্রেম ছড়িয়ে পড়েছে অন্দরসজ্জাতেও। পুরনো অনেক জিনিসই বাড়িতে পড়ে থাকে অবহেলিত হয়ে, স্থান হয় স্টোররুমে। তেমন জিনিসগুলিকে সৃজনশীলতা দিয়ে সাজিয়ে নিলেই তৈরি আপনার বাড়ির ‘রেট্রো লুক’!
ভিন্টেজ ঘড়ি
ঘরের একটা দেওয়ালকে অন্য রকম করে সাজাতে চাইলে ইঁটের দেওয়ালের লুক তৈরি করুন। তাতে ঝুলিয়ে দিন বড় একটি ভিন্টেজ দেওয়াল ঘড়ি। পেন্ডুলাম দেওয়া ঘড়িও লাগাতে পারেন। অনেক পুরনো বাড়িতেই গ্র্যান্ডফাদার ক্লক রয়ে গিয়েছে, অব্যবহারেই পড়ে থাকে সেটি। যথেষ্ট জায়গা থাকলে এমন একটি ঘড়ি রেখে দিতে পারেন প্রশস্ত ব্যালকনিতে। নিমেষে পালটে যাবে বাড়ির চেহারা। পুরনো দিনের টেবলে রাখার অ্যালার্ম ক্লক থাকলে সেটি সাজিয়ে রাখুন সেন্টার টেবলে। চেন দেওয়া পকেট ঘড়িও রয়ে গিয়েছে অনেকের সংগ্রহে। ক্যাবিনেটে অন্য জিনিসের সঙ্গে শোভা পাক সেটিও।
ক্যামেরার শুরু
এখন যে ক্যামেরা আমাদের হাতের ফোনে, একটা সময় সেই ক্যামেরা ছিল বিশাল বড় এক যন্ত্র! মাথায় চাদর চাপা দিয়ে ছবি তোলার সেই পুরনো দিনের ক্যামেরার দেখা পাওয়া এখন স্বপ্ন। তাই যাঁদের বাড়িতে এখনও রয়ে গিয়েছে এমন ক্যামেরা, তাকে অবশ্যই বানিয়ে ফেলুন ঘরের আকর্ষণের কেন্দ্র। ড্রয়িং রুমের এক কোণে সাজিয়ে রাখুন ক্যামেরাটিকে। সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়েও রাখতে পারেন। এই ক্যামেরার পরে আসে প্রথম হাতে ধরা ক্যামেরা। সেগুলির কয়েকটির মাথায় বাল্ব লাগানো থাকত। ভিন্টেজ মডেলের এমন কয়েকটি ক্যামেরা দেওয়ালে ছোট ছোট তাক বানিয়ে সাজিয়ে রাখতে পারেন। প্রতিটির চারপাশে আলাদা করে ফ্রেম লাগিয়ে নিলে একেবারে অভিনব ওয়াল ডেকর হবে।
ঘরের কোণে গ্রামোফোন,
টাইপরাইটার
দাদু-ঠাকুরদার রেখে যাওয়া পুরনো গ্রামোফোন রয়েছে অনেকের বাড়িতেই। না থাকলে পুরনো জিনিসের দোকান থেকে কিনেও নিতে পারেন। ঘরকে রেট্রো রূপ দিতে চাইলে গ্রামোফোনের জুড়ি মেলা ভার! আগেকার দিনে লম্বা পায়াযুক্ত ছোট কাঠের টেবিলে গ্রামোফোন রাখা হত। তেমন একটা টেবল বানিয়ে তার উপর গ্রামোফোন সাজিয়ে রাখলে ঘরের ভিন্টেজ সাজ যেন সম্পূর্ণ হয়। ঘর সাজাতে ব্যবহার করতে পারেন পুরনো টাইপরাইটারও। কর্নার টেবলে বা দেওয়ালের তাকে তো রাখতেই পারেন, জায়গা থাকলে স্টাডি টেবল বা বইয়ের তাকের একপাশেও রাখতে পারেন ছোট মডেলের পুরনো টাইপরাইটার।
রকিং চেয়ারের সাজ
ঠাকুরদার আমলের কাঠের রকিং চেয়ার বা কাপড় লাগানো আরামকেদারায় ধুলো জমছে অনেকের বাড়িতেই। ব্যবহারও হয় না, আবার প্রিয় মানুষদের স্মৃতিজড়িত সেই চেয়ার বাতিলও করা যায় না। এমন আদ্যিকালের চেয়ারই হয়ে উঠবে আপনার রেট্রো অন্দরসাজের যথাযথ উপকরণ। ড্রয়িং রুম বা ব্যালকনির এক কোণে স্থান দিন তাকে। পুরনো কাঠের জিনিস এমনিতেই মজবুত হয়। তাই প্রয়োজনমতো সারিয়ে নিলে আবার তাতে বসাও যাবে অনায়াসেই। বসার কাজে ব্যবহার করতে না চাইলে কাঠের চেয়ারের উপর ছোট-ছোট টবও রাখতে পারেন। রেট্রো ছোঁয়ায় একেবারে ভিন্ন স্বাদে ব্যালকনি সাজানো হবে।
ট্রাঙ্ক হোক টেবিল
বাড়ির নানা বাতিল জিনিস, পুরনো জামা ভরে বড় ট্রাঙ্ক বা টিনের সুটকেসের জায়গা এখন খাটের তলায় বা সিঁড়ির নীচে। অথচ এমন এক সময় ছিল, যখন লাগেজ বা স্টোরেজ বলতে এগুলোই ছিল অবশ্য প্রয়োজনীয়। সময়ের সঙ্গে জিনিস রাখার প্রয়োজনে না হলেও ঘর সাজানোর প্রয়োজনে আবার ফিরেছে ট্রাঙ্ক-টিনের সুটকেসের চাহিদা। ঘরে রেট্রো ছোঁয়া দিতে চাইলে আদর্শ উপকরণ এগুলি। পুরনো ট্রাঙ্কে উজ্জ্বল রং করে সাজিয়ে নিয়ে সেটি ব্যবহার করতে পারেন সেন্টার টেবল বা বেড সাইড টেবল হিসেবে। ঘরের রেট্রো ডেকরের সঙ্গে একেবারে আদর্শ সেন্টার টেবল এটিই হবে। ভারী লোহার ট্রাঙ্কে রং করে তার উপরে গদি লাগিয়ে বসার জায়গাও বানিয়ে নিতে পারেন। বসা এবং ভিতরে জিনিস রাখা, দুই কাজেই ব্যবহার করা যাবে একসঙ্গে।
অভিনব কাঠের দোলনা
এটি রাখতে অবশ্য বাড়ি ও ব্যালকনি যথেষ্ট বড় হতে হবে। বহু পিরিয়ড মুভিতেই জমিদার বাড়ির বারান্দায় ঝুলতে দেখা যায় কারুকার্য করা কাঠের দোলনা। বাড়ির ব্যালকনি, উঠোন বা ছাদে অনেকটা জায়গা থাকলে পুরনো দিনের কায়দায় এমন দোলনা লাগাতে পারেন। দোলনার কারুকাজও যেন হয় সে যুগের উপযোগী। বাড়িতে এক নিমেষে পেয়ে যাবেন জমিদারী আমলের অভিনব এক ছোঁয়া!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy