প্রেমের সপ্তাহে বাড়ে কারও কারও একাকিত্ব।
বসন্ত! প্রেমের সপ্তাহ। প্রেমের সময়। প্রেম দিবস। মিষ্টি হাওয়া। তাই বলেই কি সকলের জীবনে সত্যি প্রেম এল? আসেনি। কোনও বসন্ততেই সকলের জীবনে প্রেম আসে না। অনেকেই থাকেন, যাঁদের কখনও প্রেম হয় না। একা থাকেন অনেক মানুষ। কেউ স্বেচ্ছায় একা থাকেন, কেউ বা বাধ্য হয়ে। তবু থাকেন। বসন্তের প্রেম উদ্যাপন নিয়ে হইচই, লাল গোলাপের আধিক্যের কেমন প্রভাব তাঁদের জীবনে? ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে তাঁদের মন কেমন থাকে? ক’জন ভেবে দেখেছেন সে কথা?
সম্প্রতি কানাডার একটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, প্রেম দিবস নিয়ে হইচই খুবই চাপের মুখে ফেলে একদল মানুষকে। সারা বছর একা কাটাতে সমস্যা না হলেও, এই সময়টায় ভালবাসা নিয়ে চার দিকে যত হইচই হয়, ততই মানসিক চাপ বাড়ে তাঁদের। দেখা গিয়েছে, এই সময়ে বেড়ে যায় বিভিন্ন ডেটিং সাইটে সঙ্গীর খোঁজ। পরিসংখ্যান বলছে, এই সব সাইটে প্রায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সি মানুষদের আনাগোনা। তা দেখেই মনোবিদদের বক্তব্য, একা থাকাটা এই সময়ে সামাজিক ভাবে যেন একটু পিছিয়ে পড়ার মতো দেখায়। ফলে মনের উপরে চাপ বাড়ে।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে হইচই শুধু একা মানুষদের জন্যই সমস্যা তৈরি করে, এমন নয়। যদি সঙ্গী থাকেন, তাতেও সমস্যা আসে অনেকের জীবনে। সকলেই এক ভাবে জাঁকজমকে অভ্যস্ত নন যে। ফলে চাপ পড়ে সে সব সম্পর্কে, যেখানে প্রেমের প্রকাশে যথেষ্ট চাকচিক্য থাকে না। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদ সংস্থা প্রকাশ করেছে, শুধু প্রেম দিবস উপলক্ষে সে দেশে খরচ হয় মাথা পিছু ১৭৮ ডলার। ভারতীয় টাকায় যার মূল্য প্রায় ১০, ০০০ টাকা। এতটা খরচ করার সুবিধে সব যুগলের থাকে না। যাঁরা এত কিছু করতে পারেন না, তাঁদের অনেকেরও মানসিক কষ্টে দিন কাটে বলে প্রকাশ সেই গবেষণায়। ফলে ভালবাসার সপ্তাহটা অনেকের ক্ষেত্রে মন ভাল রাখার সময় হয় না।
এমন সময়ে মন ঠিক রাখতে বিপণন-কেন্দ্রিক ভাবনা থেকে একটু দূরে থাকতে বলছেন মনোরোগ চিকিৎসক তথাগত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘একাকিত্ব যতটা না চাপ দেয়, তার চেয়েও বেশি চাপ বাড়ায় নিজের সামাজিক অবস্থানের উপরে সেই একাকিত্বের প্রভাব। প্রতি বছর সমান থাকে না পরিস্থিতি। নিজেকে মানসিক দিক থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না অনেকেই। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, মানসিক স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাবও ফেলে এই প্রেমের উৎসব।’’
তা হলে কি প্রেম দিবস উদ্যাপন করা উচিত নয়?
এমন প্রশ্ন আগেও উঠেছে। আবারও উঠবে। তবে গবেষণাপত্র তেমন কথা বলছে না। তেমন উপদেশ দিচ্ছেন না মনোরোগ চিকিৎসকও। তবে সকলের ক্ষেত্রে বসন্তের রূপ যে একই রকম হয় না, সে দিকে খেয়াল রাখা ভাল বলেই পরামর্শ তাঁর। যাঁরা লাল রঙের বেলুন, দামি উপহারে নিজের প্রেমিকের সঙ্গে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করতে পারলেন না, তাঁদের দেখে অবাক যেন না হয় সমাজ। বরং একটু পাশে থাকার চেষ্টা করলেই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy