প্রতীকী চিত্র।
“আমাকে এক বার স্কুলটা বাইরে থেকে দেখিয়ে নিয়ে এসো!” অতিমারির জেরে ঘরবন্দি এক শিশু বাবার কাছে এমনই আবদার করেছিল। করোনা সংক্রমণটা ঠিক কী, সেটা বুঝে উঠতেই না-পারা আর এক শিশুর জিজ্ঞাসা, “আমরা সবাই কি মরে যাব?” কলকাতার রিজিয়োন্যাল আউটরিচ বুরো এবং চুঁচুড়ার ফিল্ড আউটরিচ বুরোর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে অতিমারির প্রভাব বিষয়ক একটি ওয়েবিনারে সম্প্রতি উঠে এল এমনই কিছু উদাহরণ।
এই আলোচনায় ইন্ডিয়ান সাইকায়াট্রিক সোসাইটির সভাপতি গৌতম সাহা জানালেন, বাচ্চাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা, বিরক্তি বাড়ছে। কারও কারও মধ্যে নিজেকে আঘাত করা, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজ়অর্ডারের মতো সমস্যাও প্রকট হচ্ছে। কাছের কাউকে যারা করোনায় হারিয়েছে, তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে পোস্ট ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডার। বয়ঃসন্ধির বাচ্চারা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে, বাবা-মায়ের নজরদারির ফলে রাগ, বিরক্তিও বাড়ছে। গৌতমবাবুর উপদেশ, “নজর রাখুন, তবে অতিরিক্ত শাসন করবেন না। নিজেরা সমস্যার সমাধান না করতে পারলে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।”
সুকান্তনগর বিদ্যানিকেতনের শিক্ষিকা শিল্পী চট্টোপাধ্যায় তুলে ধরলেন দরিদ্র শিশুদের সমস্যার কথা। তিনি বলেন, “যাদের বাবা-মায়েদের এই সময়ে কাজই নেই, তাদের কাছে অনলাইন ক্লাস বিলাসিতা।” এই শিশুরা পড়াশোনা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার হতাশায় ভুগছে তারা।’’ তিনি তুলে ধরেন আরও এক আশঙ্কার কথা। “আজকের ছোটরা যে হারে মৃত্যু দেখছে, তা আমরা দেখিনি”— বলেন শিল্পী ।
শিশুদের পাশে থাকা, তাদের কথা শোনা, পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য কাজেও তাদের ব্যস্ত রাখা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্যই এর সমাধান বলে মনে করেন বক্তারা। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও কী ভাবে অনলাইন ক্লাসে বাচ্চাদের কথা শুনে, নানা বিষয়ে আলোচনা করে তাদের মন ভাল রাখতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন আর এক বক্তা, ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy