যে স্বপ্ন নিয়ে দুটো মানুষ বিয়ের পিড়িতে বসেন, বিয়ের পরে দিন যেতে না যেতেই সব কেমন যেন তেতো হয়ে যায়। এক সময় যার সব কিছুই আপনার ভাল লাগতো সেই মানুষটাই যেন এখন একদম বদলে গিয়েছেন। আপনি সুন্দর করে সাজলেও সঙ্গীর যে প্রশংসা শুনে আপনি অভ্যস্ত তা আর পান না। বা আপনার সাফল্যে যেভাবে উচ্ছ্বসিত হতেন আপরান স্ত্রী আজকাল আর সেটা দেখতে পাচ্ছেন না। সত্যিই কি তাই? আপনি নিজে বদলে যাননি তো? আগে সঙ্গীর ছোটখাট কাজেও উপচে পড়তো আপনার মুগ্ধ প্রশংসা। আর এখন প্রত্যাশা পূরণ না হলেই অভিমান আর দোষারোপ। তাই তো? জানি সপক্ষে যুক্তি আছে প্রচুর তবু আপনার প্রতিক্রিয়ার প্রভাব কিন্তু সম্পর্কে পড়বেই। একে অপরের প্রতি প্রশংসা, মুগ্ধতা আর কৃতজ্ঞতাই কিন্তু এক সময়ে সম্পর্ক সুন্দর করেছিল। তাই গবেষকরা বলছেন যদি বিবাহিত সম্পর্ক সুন্দর রাখতে চান তাহলে ধরে রাখুন সেই কৃতজ্ঞতা, মুগ্ধতা। সঙ্গীকে ধন্যবাদ দিন। শুধু ধন্যবাদ নয়, নিজের জায়গা থেকে থেকে সরে এসে সঙ্গীকে বিচার করুন। দেখবেন বুঝতে সহজ হবে। ধন্যবাদের পাশাপাশি কোনও কারনে সঙ্গীকে আঘাত করে থাকলে ইগো ভুলে দুঃখ প্রকাশও করুন।
ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়ার গবেষক অ্যালেন বার্টন ৪৬০ জন দম্পতির ওপর সমীক্ষা চালান। টেলিফোনে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের ওকে অপরকে ধন্যবাদ জানাতে বলেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যারা সঙ্গীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদের দাম্পত্য জীবন অনেক সুস্থির। পার্সোনাল রিলেশনশিপ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল এই সমীক্ষার ফল। পড়ে ভাবছেন যত্ত সব বোকা বোকা ব্যাপার। কথায় কথায় থ্যাঙ্ক ইউ বলবো কোন দুঃখে?
ব্যাপারটা কিন্তু এতটা জটিল নয়। অ্যাটিটিউড অফ গ্র্যাটিটিউডের তত্ব জানেন নিশ্চয়ই? অর্থাত্, ভাল কিছুর জন্য যদি আমরা কাউকে ধন্যবাদ জানাই তবে সেই ভাল কাজটা তার কাছ থেকে বারে বারে ফিরে পাই। তেমনই সঙ্গীর ভালবাসা, আপনার প্রতি আস্থা রাখা, ভারসা যোগানো, সময়ে-অসময়ে পাশে থাকার জন্য যদি আপনি কৃতজ্ঞ থাকেন, তাকে আপনার ভাললাগা, মুগ্ধতার কথা জানান তবে আপনার সম্পর্ক সুন্দর হবেই। থ্যাঙ্ক ইউ-এর গুরুত্ব এতটাই। প্রশংসা পেলে নিমেষে মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। প্রশংসাকারীর জন্য ভাল কিছু করতে ইচ্ছা করে। এমনটা আপনার নিজের সঙ্গে কত বার হয়েছে? সঙ্গীর সঙ্গেও এমনটা করে দেখুন না এক বার।
ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, ‘আ ড্রপ অফ হানি ক্যাচেস মোর ফ্লাইজ দ্যান আ গ্যালন অফ গাল’। এই প্রবাদটা সব থেকে বেশি প্রযোজ্য বোধ হয় মানুষে মানুষে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। ছোট বেলা থেকে যেই কাজের জন্য বকা খেয়েছেন সেটা বেশি ভাল শিখেছেন নাকি যেখানে প্রশংসা পেয়েছেন, ধন্যবাদ কুড়িয়েছেন সেটাই আরও ভাল করে করতে ইচ্ছা হয়েছে? শুধু ছোটদের ক্ষেত্রে নয়, গোটা জীবনে সব বয়সের, সব সম্পর্কের জন্যই খাটে এই সহজ সত্যিটা। বিয়ের ব্যাপারে তো বটেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy