সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় ওষুধ সরবরাহের কথা। অথচ অভিযোগ বহুক্ষেত্রেই ব্যাথার ওষুধ ইঞ্জেকশন বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের। বুধবার শিলিগুড়ি হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীকে সে কথা সাফ জানিয়েও দিলেন তাঁরা। এমনকী হাসপাতালে দেওয়া খাবার নিয়েও অভিযোগ শুনতে হল স্বাস্থ্যকর্তাকে।
উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলার একাংশে দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তা দেখতেই মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে এসেছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। এ দিন সকালে মাটিগাড়া এবং নকশালবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান তিনি। তার আগে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি হাসপাতালে। সেখানে সদ্য চালু ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটের পরিস্থিতি দেখেন। এসএনসিইউর বাইরে অপেক্ষা করা শিশুদের মা বা পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত সেকেন্ডারি হাসপাতালগুলিতে নিখরচায় রোগীরা ওষুধ পাবেন বলে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। তা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি। রোগীর পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যাথার ওষুধ কেন মিলছে না তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছি। খাবার দেওয়া হলেও অনেকে বাড়ি থেকে খাবার আনছেন। শিশুর সঙ্গে মায়েরাও যাতে খাবার পান তা কর্তৃপক্ষ দেখবেন।’’
এ দিন এসএনসিইউ ইউনিটের বাইরে কাঁচের ঘেরা জায়গায় বসে ছিলেন পূর্ণিমা সরকার, কৃষ্ণা সিংহ, আহ্লাদি সাহা। পূর্ণিমাদেবীর মেয়ে, আহ্লাদিদেবীর নাতি ভর্তি রয়েছেন। কৃষ্ণাদেবীর সন্তানও জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা তাঁদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন ‘‘ওষুধ কোথা থেকে দেওয়া হচ্ছে ? কোন ওষুধ কিনতে হচ্ছে ? খাবার পাচ্ছেন ? ডাক্তার আসছে ? কী সমস্যা হচ্ছে ?’’ সে সময় দেবীগঞ্জের বাসিন্দা কৃষ্ণা দেবী বলেন, ‘‘কিছু ওষুধ হাসপাতাল থেকে পেয়েছি। ব্যথার ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। খাবার বাড়ি থেকেই নিয়ে আসছি।’’ কেন রোগীর পরিবারকে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে, হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদারের কাছে তা জানতে চান স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি কোনও জবাব দিতে পারেননি। পরে সঞ্জীববাবু জানান, তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।
অভিযোগ, শিলিগুড়ি হাসপাতালে অ্যানাস্থেসিস্ট, মেডিসিন এবং রেডিওলজিস্টের অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে মেডিসিনের বহির্বিভাগ সব সময় খোলা রাখা যায় না। অ্যানাস্থেসিস্ট বা রেডিওলজিস্টের অভাবে অপারেশন, আলট্রাসোনোগ্রাফির মতো পরিষেবার ক্ষেত্রেও অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয়। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অবশ্য এ দিন জানান, রাজ্যের সব হাসপাতালেই চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। যে চিকিৎসকরা রয়েছেন তাঁদের দিয়েই প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। শিলিগুড়ি হাসপাতালে এক জন করে ফিজিশিয়ান, রেডিওলজিস্ট এবং অ্যানাস্থেসিস্ট দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy