Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

বাজারচলিত ক্রিম নয়, এই গরমে ত্বক ভাল রাখতে চাই সচেতনতা

গরম বাড়ছে। আমাদের ত্বক সাধারণত এই গরম সহ্য করতে পারলেও এই সময়ে নানা সমস্যা তৈরি হয়। বাজারচলিত ক্রিম বা প্রসাধনী নয়, এই গরমে ত্বক ভাল রাখতে চাই সচেতনতা। জানাচ্ছেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বিদিশা গুহ নিয়োগী। সাক্ষাৎকার: অর্পিতা মজুমদারগরম বাড়ছে। আমাদের ত্বক সাধারণত এই গরম সহ্য করতে পারলেও এই সময়ে নানা সমস্যা তৈরি হয়। বাজারচলিত ক্রিম বা প্রসাধনী নয়, এই গরমে ত্বক ভাল রাখতে চাই সচেতনতা। জানাচ্ছেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বিদিশা গুহ নিয়োগী।

রোগী দেখতে ব্যস্ত বিদিশা গুহ নিয়োগী। ছবি: বিকাশ মশান

রোগী দেখতে ব্যস্ত বিদিশা গুহ নিয়োগী। ছবি: বিকাশ মশান

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৭
Share: Save:

প্রশ্ন: গরম না শীত, কখন চর্মরোগের সমস্যা বাড়ে?
উত্তর: আমাদের গরমের দেশ। শীত নেই বললেই চলে। শরীরে বেশির ভাগ সমস্যা গরমেই হয়। সেটা ত্বক হোক বা শরীরে অন্য কোনও অংশ। যদিও আমাদের ত্বক গরম আবহাওয়ার উপযুক্ত। তাই আমাদের গরম সংক্রান্ত সমস্যা অনেক কম হয়। কারণ, আমাদের ত্বক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু শীত প্রধান দেশে যাঁরা থাকেন, তাঁদের সমস্যা গরমে অনেক বাড়ে।

প্রশ্ন: প্রাথমিক ভাবে গরমে আমাদের কী কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: রোদে যতই ঘুরি, আমাদের ত্বক পোড়ে না। ট্যান হয়ে যায়। মানে ধীরে ধীরে ‘বাদামি’ রঙের হয়ে যায়। অনেকেই উদ্বিগ্ন, ত্বকের এই ‘বাদামি’ হওয়া নিয়ে। কিন্তু বিষয়টা তা নয়। বাদামি হয়ে যাচ্ছি অর্থাৎ ত্বক ট্যান হয়ে যাচ্ছি। আসলে এটা একটা আত্মরক্ষার পদ্ধতি। এর ফলে আমাদের ত্বকে ক্যানসার হয় না। কিন্তু সাদা চামড়ার মানুষের ত্বক শ্রেণি-১, শ্রেণি-২ পর্যায়ের। যেখানে আমাদের ত্বক শ্রেণি-৫, শ্রেণি-৬ পর্যারে। শ্রেণি-১, শ্রেণি-২ রোদে বেরলেই পুড়ে যায়, লাল হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের ত্বক বাদামি হয়ে যায়। ত্বক একটা আত্মরক্ষার ব্যবস্থা তৈরি করে নেয়। তাই কালো হয়ে যাচ্ছি, বাদামি হয়ে যাচ্ছি বলে চিন্তা না করাই ভালো।

প্রশ্ন: ত্বক কালো হয়ে যাওয়া নিয়ে মেয়েরাই কি বেশি সমস্যায় ভোগেন?
উত্তর: না তা নয়। আগে ছেলেরাই বাইরে বেশি কাজ করত। তাই তাদের ত্বক বাদামি বা কালো হয়ে যায়। আগে মেয়েরা এ ভাবে বাইরে বেরতো না। কিন্তু এখন অনেক মেয়েই কাজে বাইরে যায়। তাই মেয়েদের কালো হওয়ার সমস্যা প্রকাশ্যে আসছে।

প্রশ্ন: আর কী হতে পারে?
উত্তর: গরমে সবথেকে বেশি সমস্যায় ফেলে ঘামাচি। এমন বড় কোনও সমস্যা নয় যতটা নানা বিজ্ঞাপনে দেখানো হয়। বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই দোকান থেকে সেই সব সামগ্রী কিনে লাগাচ্ছে। এর ফলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয় যা পরে বড় আকার নেয়। অনেকে বিজ্ঞাপন দেখে জলে বাজারচলতি সংক্রমণরোধী তরল দিয়ে স্নান করেন। এই সংক্রমণরোধী তরল সাধারণত কোথাও কেটে গেলে লাগানো হয়। এগুলি জলে দিয়ে স্নান করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ঘামাচির একমাত্র ওষুধ হল ত্বককে ঠান্ডা রাখা। আগে দিনে দু’বার পরিষ্কার ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করা হতো। সেটাই আসল চিকিত্সা। ঘামাচির জন্য ঠান্ডা জলে স্নানই জরুরি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকার সুযোগ থাকলে আরও ভাল। কিন্তু এর বদলে নানা রাসায়নিক ব্যবহার করলে সেগুলি ত্বকের সঙ্গে সরাসরি সংযোগে এসে অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

প্রশ্ন: ঘামাচি ছাড়া আর কী সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে?
উত্তর: ঘাম জমে শরীরের নানা অংশে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। কোনও পরামর্শ ছাড়া দোকান থেকে কোনও ওষুধ কিনে লাগিয়ে নিলে সেটা আরও জটিল আকার নিতে পারে। তখন মাসের পরে মাস চিকিৎসা করলেও তা ঠিক করা যায় না। কারণ, অবস্থা জটিল আকার নিলেই রোগীরা আমাদের কাছে আসেন।

প্রশ্ন: গরমে ত্বকে অ্যালার্জি হয়। কী কী কারণে হতে পারে?
উত্তর: ইমিটেশন গয়না থেকে হতে পারে। কারণ, সেই গয়নায় নিকেল ও ক্রোমিয়াম থাকে। এই সময় ত্বকে ঘাম হয়। ফলে গয়নার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ হয়। ঘামে নুন থাকে। এর ফলে বিক্রিয়া হয়। শীতে ঘাম হয় না। তাই এই সমস্যা কম হয়। এ ছাড়া প্রসাধনসামগ্রী, কলপ, বাজারের নানা সুগন্ধী তেল থেকেও অ্যালার্জি হয়।

প্রশ্ন: গরমে চুলকানির সমস্যা কি বাড়ে?
উত্তর: এই সময় ঘাম বেশি হয়। তাই চুলকানির আশঙ্কাও বাড়ে। আমাদের বাইরে কাজে বেরোতে হয়। বাইরে বেরোলেই ঘাম হয়। তার ফলে সমস্যাও বাড়ে। যদিও খোলা পরিবেশে খুব একটা সমস্যা হয় না। বেশি মানুষ এক সঙ্গে যেখানে কাজ করেন সেখানে হাওয়া চলাচল কম হয়। অনেকের বাড়ির পরিবেশ খুব গুমোট হয়, হাওয়া চলাচলের ভাল ব্যবস্থা থাকে না। আবার অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারে একসঙ্গে অনেকে থাকেন। ফলে ছোঁয়াচে রোগ যেমন ফোঁড়া, ফুসকুড়ি জাতীয় রোগ গরম কালে বাড়ে।

প্রশ্ন: এ সব রোগ কি ছোঁয়াচে?
উত্তর: বাচ্চারা স্কুলে যায়। খেলতে যায়। একে অপরের সঙ্গে ছোঁয়া লাগে। বাচ্চাদের ফোঁড়া জাতীয় রোগ বেশি হয়। তবে ত্বকের রোগ মানেই তা ছোঁয়াচে এটা ভুল ধারণা। আদৌও সে রকম কিছু নয়। খুব কম রোগই ছোঁয়াচে হয়।

প্রশ্ন: একজিমা কি শুধু গরমেই হয়?
উত্তর: একজিমা বছরের যে কোনও সময়েই হতে পারে। তবে গরমে এটা বাড়ে। শীতে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা বাড়ে। তবে গরমকালে ত্বকের বহু রকম সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্ন: রোদ থেকে বাঁচার উপায় কি নানা ধরনের ‘সান্সস্ক্রিন’ ক্রিম?
উত্তর: অনেকেই ভাবেন, সান্সস্ক্রিন লাগালে ত্বক ট্যান হবে না। কিন্তু ভুল ধারণা। ট্যান হওয়া থেকে কোনও ভাবেই কোনও ধরনের সান্সস্ক্রিন বাঁচাতে পারে না। সমুদ্রের পাশে গেলে ত্বক ট্যান হবে। রোদে বেরোলেও ট্যান হবে। সান্সস্ক্রিন ‘লং টাইম অ্যান্টি এজিং’ হিসেবে কাজ করে। বয়স সম্পর্কিত ত্বকের যে কোনও সমস্যা কমায়। যেমন, অনেকের বয়স বাড়লে পিগমেন্টেশনের সমস্যা হয়। কারও বা আঁচিল জাতীয় সমস্যা হয়। অনেকের রোদে অ্যালার্জি হয়। তাঁরা সান্সস্ক্রিন লাগাতেই পারেন।

প্রশ্ন: বাজারে বিভিন্ন ধরনের সান্সস্ক্রিন বিক্রি হয়। কোনটা কেনা উচিত?
উত্তর: বাজারে বহুরকমের সান্সস্ক্রিন বিক্রি হয়। কোনওটাই মেডিকেটেড নয়। বিজ্ঞাপনের হিড়িকে বিক্রি হয়। যে কোনও রকম মেডিকেটেড ময়েশ্চারাইজার লোশন মাখলেই তা সান্সস্ক্রিনের কাজ করে। আজকাল এত কিছু এসেছে। আগেও এই ধরনের সমস্যা ছিল। চিহ্নিতও হত। এমন সমস্যায় আমরা সান্সস্ক্রিন হিসেবে ল্যাকটোক্যালামাইন দিতাম। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় সান্সস্ক্রিনের ব্যবহার রয়েছে বহুদিন ধরেই। আমাদের দেশে ছোটদের যেমন খাওয়ার আগে হাত ধুতে শেখানো হয়, ওই দেশগুলিতে তেমনই বাইরে বেরোলে চশমা, টুপি ব্যবহার ও সান্সস্ক্রিন লাগাতে শেখানো হয়। তা না হলে ত্বকের অনেক সমস্যা হবে।

প্রশ্ন: তা হলে কি আমাদের দেশে সান্সস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই?
উত্তর: সেটা ঠিক নয়। সান্সস্ক্রিন লাগিয়ে বাইরে কাজ করতে গেলে ঘণ্টা তিনকে পরে ঘামে সব মুছে যায়। মনে মনে ভাবি, যে সুন্দর সান্সস্ক্রিন লাগিয়ে বেরিয়েছি! তিন ঘণ্টা পরে ফের লাগাতে হবে। কিন্তু কাজে গিয়ে কি সেটা সম্ভব? সবার পক্ষে এ সব সম্ভব নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেডিকেটেড সান্সক্রিন লাগানো যেতে পারে। এখন আমরা বেশ সচেতন। আগে ৪০ বছর পেরোলে মুখের ত্বক কুঁচকে যেতে শুরু করত, দাগ দেখা যেত। কেউ কিছু মনে করত না। এখন আর তেমন নয়। এখন ৭০ বছর পার হলেও সকলেই চান ত্বক দাগ, ছোপ মুক্ত রাখতে। অন্তত উপর থেকে বয়সকে যত কমিয়ে রাখা যায়। এখানেই সান্সস্ক্রিনের প্রয়োজনীয়তা। সান্সস্ক্রিন বয়সকে ধরে রাখে, বাড়তে দেয় না।

প্রশ্ন: তা হলে উপায়?
উত্তর: একটা নির্দিষ্ট সময়সারণি অনুযায়ী ত্বকের যত্ন করতে হবে। অবশ্যই ভাল করে মুখ ধুতে হবে। দিনে অন্তত দুই থেকে তিন বার ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।

প্রশ্ন: নাইট ক্রিম বা অন্য ধরনের ক্রিমের ব্যবহার কি জরুরি?
উত্তর: এই ধরনের ক্রিম ব্যবহারের কথা যাঁরা বলেন মূলত তাঁরা সকলেই মহিলা। তবে এরকম কখনই নয় যে রাতে একটা নাইট ক্রিম লাগাতেই হবে। ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী ক্রিম লাগানো দরকার। কমবয়সী ছেলে-মেয়েদের নাইট ক্রিম লাগানোর কোনও দরকার নেই। মুখে ব্রোনো হয়েছে, টিভি দেখে একাধিক বার নানা ধরনের ক্রিম লাগাচ্ছে। রাতে আবার নাইট ক্রিমও লাগাচ্ছে। এর কোনও দরকার নেই। বয়স বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নাইট ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রশ্ন: ফর্সা হওয়ার ক্রিমের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কতটা?
উত্তর: ফর্সা হওয়ার ক্রিম কখনই লাগানো উচিত নয়। কারণ, এতে রাসায়নিক থাকে, স্টেরয়েড থাকে। যা ত্বকের জন্য একদম ভাল নয়। আমাদের দেশেই এই ধরনের ক্রিম বেশি বিক্রি হয়। কারণ, এখানে মেয়েদের কালো হওয়াটা লজ্জ্বার। তাই এত এই ধরনের ক্রিমের রমরমা।

প্রশ্ন: কোনও জায়গার জলবায়ু অনুযায়ী কি ক্রিম ব্যবহারের তারতম্য আছে?
উত্তর: নিশ্চয়ই। জলবায়ুর উপরেই নির্ভর করে, কোন ক্রিম কতটা ব্যবহার করতে হবে। যেমন, দুর্গাপুরের মতো জায়গায় সারা বছর অনেক বেশি ক্রিম লাগে কারণ, এখানে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম। কিন্তু কলকাতায় যে হেতু বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি রয়েছে তাই সেখানে ক্রিম কম লাগে।

প্রশ্ন: এখন মানুষ বেশি বেশি করে ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে চান। সেটা কি ঠিক?
উত্তর: ত্বকের মধ্যে ন্যাচারাল ফ্লোরা থাকে। মুখে, পেটে এই ফ্লোরা থাকে। এরা ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়ার প্রোটেক্টিভ। এই গুড ফ্লোরা খারাপ সংক্রমণ থেকে ত্বককে বাঁচিয়ে রাখে। আধুনিক যুগে আমরা ত্বক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিষ্কার করে ফেলি। অনেকেই আছেন, দশ বার হাত-পা ধুচ্ছেন। বার বার স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন। ভাবছেন, পরিষ্কার থাকতে হবে। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। তখন ভাল ফ্লোরা চলে গিয়ে বাজে ফ্লোরা সংক্রমণ করার সুযোগ পাচ্ছে। ঘাম হলে বার বার মুখ মুছলেও একই সমস্যা হতে পারে। অনেকে‌ এর জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়। এদের অনেকে বাসে, ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন না নোংরা হয়ে যাওয়ার ভয়ে। স্বাভাবিক থাকতে হবে সবসময়। যেমন, খাওয়ার আগে হাত অবশ্যই ধুতে হবে। তার মানে এই নয় যে ভাতের পাত্রে হাত দিলাম, হাত ধুতে হবে। তরকারির বাটি সরিয়ে রাখার জন্য আবার হাত ধুতে হবে, এমনটা করলে কখনই হবে না। তাঁদের অনেক সমস্যা হয়। যেমন, হাতে হাজা হয়, অতিরিক্ত জল ঘাঁটার ফলে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়।

প্রশ্ন: খাবার থেকে গরমে ত্বকের কোনও সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: গরমে পেটের সমস্যা নিয়ে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হন। সামান্য পেট ব্যথা করছে, বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে নিলে সমস্যা বাড়ে। এর ফলে অনেক সময় ত্বকে র‌্যাশ বেরিয়ে গেল। কেউ বলেন, বেগুন খেয়ে এমন হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখলেই বুঝতে পারি, খাবারের জন্য নয়। দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ার জন্যই হয়েছে। নিজে ডাক্তারি করার প্রবণতা ছাড়তে হবে মানুষকে। এই সময় ভাইরাল জ্বরও বেশি হয়। আগে ভাইরাল র‌্যাশ বলতে কেবল হাম বোঝাতো। এখন ডেঙ্গি, চিকনগুনিয়া জাতীয় রোগেও এমন র‌্যাশ হচ্ছে। তখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

প্রশ্ন: ত্বক ভাল রাখার জন্য ঘরোয়া ভাবে টোটকা কিছু আছে কি?
উত্তর: সকালে কাজ শুরুর আগে হাতে-পায়ে সর্ষে বা নারকেল তেল মেখে নেওয়া যায়। কাজ শেষ হলে ফের আরও এক বার। রাতে কাজ শেষে বা শোয়ার আগেও তাই। তা হলেই অনেক সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে।

প্রশ্ন: তেল থেকে কি ত্বকের কোনও সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: সমস্যা তখনই হয় যখন বাজারের রঙিন তেল বা রাসায়নিক যুক্ত সুগন্ধী তেল ব্যবহার করা হয়। তাই যে তেল আমরা খেতে পারি যেমন, সাধারণ সর্ষের তেল বা নারকেল তেল ব্যবহারই ভাল। বাজারে এখন রং মিশ্রিত রঙিন তেল পাওয়া যায় যা চুল কালো করতে ব্যবহার করা হয়। সেগুলি আসলে ডাই বা কলপ। কলপ লাগিয়ে ৪৫ মিনিটের বেশি রাখলেই সমস্যা হয়। এই ধরনের তেল মেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাখলে জটিল সমস্যা তো হবেই না। এই ধরনের তেল, ডাই থেকে শ্বেতী জাতীয় রোগের প্রবণতা বাড়ছে।

প্রশ্ন: দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। অনেকেই উঁচু তাপমাত্রায় কারখানায় কাজ করেন। তাঁরা কী ভাবে ত্বক বাঁচাবেন?
উত্তর: নির্দিষ্ট পোশাক, হেলমেট, গ্লাভস পরে কাজ করার নিয়ম আছে। এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। তা না হলে অসুস্থ হয়ে পড়লে কাজের সমস্যা হয়। দেখা গিয়েছে, কেউ সিমেন্ট কারখানায় কাজ করছেন অথচ তাঁর সিমেন্টে অ্যালার্জি। গরমে খুব কষ্ট হয় তাঁর। এই সব ক্ষেত্রে কার কোন রাসায়নিকে সমস্যা তা পরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করে সচেতন হতে হবে।

প্রশ্ন: গরমে আর কী কী থেকে সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: ফুলের রেণু থেকেও সমস্যা হতে পারে। আমের মুকুল, ছাতিম, পার্থেনিয়াম জাতীয় ফুলের রেণু বাতাসে উড়তে থাকে। এ সব থেকে শ্বাসকষ্ট যেমন হয়, তেমনই ত্বকেও অ্যালার্জি হতে পারে। পার্থেনিয়াম অ্যালার্জি একটা সাংঘাতিক সমস্যা। এমন অনেকেই আছেন যাঁদের এই অ্যালার্জির জন্য সারা জীবন কিছু না কিছু ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। আবার এ রকমও হয় যে, একটা অ্যালার্জি থেকে অন্য ধরনের অ্যালার্জি হয়। যেমন, কারও হয়তো পার্থেনিয়াম ফুলের রেণুতে অ্যালার্জি। বাড়িতে সূর্যমুখী ফুলের রেণু থেকেও হয়তো তাঁর অ্যালার্জি শুরু হয়ে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

skin summer ত্বক
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy