হাতের উপরিভাগের মেদকে অবহেলা করলে কোনও দিনই ওজন কমবে না। ছবি: শাটারস্টক।
বাড়তি ওজনের ঝাক্কা কেবল পেটে নয়, জমা হয় হাতেও। পুরুষ বা নারী, উভয়ের ক্ষেত্রেই এই হাতের উপরের অংশে জমে যাওয়া মেদ নাস্তানাবুদ করে। স্লিভলেস পরা তো দূর, যে কোনও পোশাকের হাতা ভেদ করে উঁকি মারে বাড়তি মেদ। সাধারণত খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, ভুল জীবনশৈলী, অবৈজ্ঞানিক ডায়েট এ সব কামেই মেদের শিকার হই আমরা। কিন্তু বাহুমূলের মেদ ঝরাতে একটু বেশি কিছু কসরত করতে হয়।
এমনিতেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেটাবলিক রেট কমতে থাকে, তাই ফ্যাট জমে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এ ছাড়া মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়সের সঙ্গে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে যাওয়াও এই হাতের উপরিভাগে মেদ জমার অন্যতম কারণ।
তবে ডায়াটেশিয়ানদের মতে, প্রতি দিনের অভ্যাসে এমন কিছু থেকে যায়, যার অদলবদল ঘটালেই বাহুমূলের মেদ ঝরবে সহজে। শুধু মাথায় রাখুন কয়েকটা নিয়ম।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে চান? তা হলে এ সব কারণে আজই ব্রাউন রাইস রাখুন পাতে
পাতে থাক এমন কিছু ডাল ও সোয়াবিন, যা প্রোটিনের অন্যতম উৎস।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ: ডায়াটের দিকে খেয়াল রাখুন। বাহুর মেদ ঝরানোর সময় ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়াটা বন্ধ করতে হবে পুরোপুটি। উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত তা জেনে একজন দক্ষ ডায়াটেশিয়ানের কাছ থেকে নিজের ওজন ও তার খামতি বুঝে নিন। তিনিই বলে দিতে পারবেন, ওজন অনুযায়ী আপনার ডয়েটে কত ক্যালোরি প্রয়োজন। সেই অনুযায়ী ডায়েট মানুন।
কেমন ডায়েট: লক্ষ্য রাখুন, খাদ্যতালিকায় যেন প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে। কার্বোহাইড্রেট সরিয়ে ফেলুন আজই। তালিকায় অল্পবিস্তর ফ্যাট থাকুক। লো ফ্যাট, নো কার্বস এমন ডায়েটেই ঝরিয়ে ফেলুন বাহুর মেদ। ভাত বন্ধ করলেই অনেকটা ফ্যাট কমিয়ে ফেলতে পারবেন। ভাত ছাড়া যায় না— এই মিথ থেকে সরুন আগে। ভাতের বদলে দু’-এক টুকরো রুটি বাছুন। রুটি থেকেও প্রায় ভাতের সমান শর্করা পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু রুটি থেকে উৎপন্ন গ্লাইকোজেন তাড়াতাড়ি গলে। সে ক্ষেত্রে ভাতের গ্লাইকোজেন মোটেই গলতে চায় না। তাই রুটি ভাতের ভাল বিকল্প। বরং পাতে মুসুর ডাল, মাছ-মাংস-ডিম রেখে পেট ভরান। যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁরা পেট ভরাতে পাতে রাখুন জরুরি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, টক দই, ছানা। সকালের খাবারকে বাদ দেবেন না কখনওই। খাদ্য পিমামিড মেনে ডায়েট সাজান।
জল: প্রচুর জল খান, সঙ্গে বাদ নিন নুন। জানবেন, জল শরীরে একা একা জমতে পারে না। জমে নুনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই। তাই নুনের পরিমাণ কমিয়ে ফেললে শরীরে জল জমার সম্ভাবনাও কমবে। ফলে ফ্যাট জমবে না একেবারেই।
আরও পড়ুন: কালো রং বা হেনা ছাড়ুন, ঘরোয়া উপায়ে চুল কালো করে ফেলুন এ সব উপায়ে
শরীর-সাস্থ্য নিয়ে এ সব তথ্য আগে জানতেন?
মেয়েরা ওয়েট ট্রেনিং করলে চেহারায় পুরুষালী আকার এসে যায়, এমন মিথ ভাঙুন।
চিনি বাদ: চিনি বাদ দিন। একেবারে না পারলে অন্তত ধীরে ধীরে ছাড়ুন। মিষ্টি, চিনি এ জাতীয় খাবার রক্তে শর্করা বাড়ায়। যে টুকু শর্করা ভাত ছেঁটে বাদ দিযেছেন, চিনিতে সেটাই ফেরত আনার কোনও মানে নেই। চিনি অন্যান্য অসুখ ডেকে আনতেও ওস্তাড। তাই তার বদলে অল্প পরিমাণে গুড়ের বাতাসা, নারকেলের চিনি এ সব ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে।
পেশির ব্যায়াম: হাতের মেদ ঝরাবো কিন্তু ব্যায়াম করব না, এমন ইচ্ছাকে দূরে হঠান। ফিটনেস এক্সপার্টের সঙ্গে কথা বলে হাতের মেজ ঝরানোর ব্যায়ামে মনোনিবেশ করুন। জিমে যে যেতেই হবে এমনটা নয়, বাড়িতেও নানা রকম বাইসেপ কার্ল, ট্রাইসেপ ডিপ করা যায়। জলভর্তি বোতল নিয়েও ওয়েট ট্রেনিং করা যায় সহজে। পেশি শক্ত হলেই তার গায়ে লেগে থাকা ফ্যাট ঝরবে। মেয়েরা ওয়েট ট্রেনিং করলে চেহারায় পুরুষালী আকার আসে, এমন মিথ ভাঙুন। মনে রাখবেন, বাহুকে টোনড করতে হলে কিন্তু শারীরিক কসরত বাদ দিলে একেবারেই চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy