কঘেয়ে জীবনে বন্ধুদের সঙ্গে খানিক ক্ষণের আড্ডা মনকে অনেক চাঙ্গা করে দিতে পারে। ছবি সংগৃহীত
জীবনে যত বড় সমস্যাই আসুক না কেন, প্রিয় বন্ধুকে জানালেই মনটা অনেক হালকা হয়। স্কুল কলেজের বন্ধুরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর পরিণত বয়সে এসে নতুন বন্ধু বানানো খুব একটা সহজ কাজ নয়। প্রাপ্তবয়স্কদের একাকিত্বের সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে এক জন ভাল বন্ধু থাকলে একাকিত্ব অনেকটাই কমে। একঘেয়ে জীবনে বন্ধুদের সঙ্গে খানিক ক্ষণের আড্ডা মনকে অনেক চাঙ্গা করে দিতে পারে।
ছেলেবেলায় সকলের মধ্যেই নতুন বন্ধু তৈরির প্রাকৃতিক দক্ষতা থাকে। কিন্তু পরিণত বয়সে সেটা হয়ে পরে কঠিন। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে চট করে নতুন বন্ধু বানানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট অনীহা দেখা যায়। গবেষকরা বলছেন, এর পিছনে বড় কারণ হল, আস্থার অভাব। এই বয়সে নতুন পরিচিত কোনও ব্যক্তিকে সহজে বিশ্বাস করতে পারেন না অনেকেই। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বন্ধু বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। এ ছাড়াও রয়েছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কা এবং আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি। পূর্বে কোনও বন্ধুর থেকে কোনও বড় আঘাত পেলে অন্যদের বিশ্বাস করা অনেকের পক্ষে কঠিন হতে পারে।
পরিণত বয়সে নতুন বন্ধুত্ব পাতানোর ক্ষেত্রে আরও একটি বাঁধা হতে পারে সময়ের অভাব। কর্মব্যস্ত জীবনে কাজ ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে চলতে বন্ধুদের জন্য সময় বার করা কঠিণ হয়ে পড়ে। এর ফলে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গেও সম্পর্ক ছেদ হয় আর নতুন কারোর সঙ্গে আলাপ পরিচিতির সুযোগও মেলে না। বন্ধুত্ব করতে আসলে কত ক্ষণ লাগে? ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে বেশি সময় নেয়। আমেরিকার গবেষকদের কাজে উঠে এসেছে, সাধারণ পরিচিতির থেকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রায় ৫০ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন। আর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে সময় লাগে ২০০ ঘণ্টার বেশি।
তবে একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোই বড় কথা নয়। সহকর্মীদের সঙ্গেও তো দিনের অনেকটা সময় কাটান। সে ক্ষেত্রে কাজ সংক্রান্ত কথাবার্তাই বেশি হয়। সহকর্মীও আপনার এক জন ভাল বন্ধু হতে পারে। অফিসের ভাল-মন্দ কথার পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত কথাও বিশ্বস্ত কোনও সহকর্মীর কাছে প্রকাশ করতে পারেন। তার কথাও মন দিয়ে শুনুন। একে অপরের মনের কথা ভাগ করে নিলে বাড়বে বন্ধুত্ব।
করোনাকালে অবসাদ কাটাতে এক জন বন্ধুরাই হতে পারে বড় ভরসা। তবে কী ভাবে বানাবেন নতুন বন্ধু?
কোনও একটি দল, সংগঠন বা পছন্দের কোনও বিষয়ের উপর ক্লাস-ভিত্তিক কোর্সে যোগদানের মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে আলাপ পরিচয়ের সুযোগ থাকে। বলা তো যায় না, সেখান থেকেই হয়তো আপনি পেয়ে যেতে পারেন প্রিয় বন্ধুটিকে। আপনার কয়েকটি পছন্দের বিষয় যখন অন্য আর এক জনের আগ্রহের সঙ্গে মিলে যাবে, তখনই বন্ধুত্বের সুযোগ বাড়বে।
কোনও পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে আর পাঁচ জনের সঙ্গে কথা বলুন। এমন কোনও নতুন মানুষের সঙ্গে ষদি আপনার পরিচয় হয়, যার সঙ্গে আপনার কথা বলতে বেশ ভাল লাগছে বা যার সঙ্গে মনের মিল পাচ্ছেন। তা হলে তার ফোন নম্বরটি চেয়ে নিতে লজ্জাবোধ করবেন না। প্রয়োজনে নেটমাধ্যমেও যোগাযোগ রাখতে পারেন।
নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপনার প্রতিটি প্রচেষ্টা যে কাজে লাগবে, এমন কোনও কথা নেই। তবে মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ে থাকলে কখনওই নতুন বন্ধু বানাতে পারবেন না। সাহসী হন এবং নিজের প্রতি আস্থা রাখুন। নতুন কারও সঙ্গে পরিচয়ের পর তার সঙ্গে পুনরায় দেখা করার প্রস্তাব দিন। তার উত্তর না হতেই পারে। এতে ভেঙ্গে পড়বেন না। সময়ের সঙ্গে উত্তরে বদল আসতেই পারে।
আপনি যদি লাজুক স্বভাবের হন, তা হলে সেই জড়তা কাটিয়ে ওঠার সহজ উপায় হল পাশের মানুষের বিষয়ে নিজে থেকেই জানতে চাওয়া। অধিকাংশ মানুষই নিজের বিষয়ে কথা বলা বেশ উপভোগ করেন। এ ভাবেও বানিয়ে ফেলতে পারেন নতুন বন্ধু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy