খুদেকে বন্ধু বানালে কেমন হয়? ছবি: শাটারস্টক
যে খুদের একটা সময়ে মা-বাবাকে ছাড়া চলত না, সে এখন দিব্যি একা ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকে। বদলে গিয়েছে পছন্দ-অপছন্দ। বাইরের নানা বিষয়ে তার আগ্রহ বেড়েছে। কিছু পছন্দ না হলেই ঠোঁট উল্টে যায়। পরিণত হচ্ছে সে। নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছে স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করতে শিখছে। বাবা-মায়ের উপর মাঝেমধ্যেই রেগে যাচ্ছে। কথা বন্ধ, দূরত্ব, নিজের পরিসরে কাউকে ঢুকতে না দেওয়া। সন্তানের এমন আচরণে উদ্বেগ বাড়ছে বাবা-মায়েরও।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য পরস্পরের প্রতি সম্মান অত্যন্ত জরুরি। কিশোর-কিশোরীরা তাদের বয়সে পৃথিবীকে নতুন করে চিনতে শেখে, জানতে শেখে, অনুভব করতে শেখে। সে সময়ে পারস্পরিক সম্মান ও মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনাই হল সম্পর্ক মজবুত করার চাবিকাঠি। এর জন্য দরকার খানিকটা সময় আর ধৈর্য। বাবা-মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্য বা দূরত্ব তৈরি হওয়ায় যে সব সময়ে সন্তানেরই ভূমিকা থাকে, এমনটা কিন্তু নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মা দায়সারা হন, আধিপত্য বজায় রাখতে চান, নিজেদের ব্যস্ততার মাঝে খুদেকে সময় দিতে পারেন না। সমস্যা শুরু হয় সেখানে। শিশুদের বড় হওয়ার সময়ে, তাদের সঙ্গে আচরণের ধরন বদলাতে হবে। সম্মান সেখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খুদের সঙ্গে আর একটু বেশি সময় কাটান। দুপুরে না হলেও রাতের খাবারটা একসঙ্গে সারুন। মাসে অন্তত এক বার ওকে নিয়ে কোথাও থেকে বেরিয়ে আসুন। ওর কথা শোনার জন্য দিনের খানিকটা সময় বরাদ্দ করুন।
যে খুদেটি এক সময়ে নির্ভরশীল ছিল, সে হঠাৎ নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে চাইছে। এতে বাবা-মায়ের অস্বস্তির চেয়েও ভয় হয় বেশি। এই বুঝি ভুল করে বসবে সে। অনেক বাবা-মায়ের আবার আধিপত্য বজায় রাখার প্রবণতা থাকে। অর্থাৎ, নিজের সিদ্ধান্ত অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার স্বভাব। খুদে যা করবে, সেটাই ভুল— এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সে কী পারে আর কী পারে না, সেটা প্রমাণ করার খানিকটা সুযোগ কিন্তু তাকে দিতেই হবে। ভুল না করলে মানুষ অভিজ্ঞ হয় না। তাই সন্তান ভুল করবে ধরে নিয়ে নিজের মতামত ওর উপর চাপিয়ে দিলে আখেরে কিন্তু ক্ষতি হবে। আপনি ওকে ভুল বুঝবেন না, এই ভেবে খুদে যেন আপনার কাছে সবটা খুলে বলতে পারে— সেই সুযোগটা ওকে করে দিন।
তা হলে কি শিশু যা বলবে, তা-ই চোখ বন্ধ করে মেনে নিতে হবে? না, মোটেই নয়। না বলাটাও জরুরি। তবে না বলার কায়দাটা শিখতে হবে। মুখের উপর কোনও কারণ ছাড়াই না বলে দিলে আরও জেদি হয়ে উঠবে সে। উল্টে তাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন ওর সঙ্গে, নিজের ভুলগুলি উদাহরণ হিসাবে বলতে পারেন। মন খুলে কথা বলুন ওর সঙ্গে, ওর মনে কী আছে সেটাও জানতে চান। ধৈর্য সহকারে যুক্তি দিয়ে ‘না’ বললে ছেলে মেয়েরা আরও সহনশীল হয়ে উঠবে। বুঝবে, জীবনে সব কিছু চাইলে পাওয়া যায় না। অর্জন করতে হয়। এর ফলে সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি হবে না, আর খুদের সঙ্গে আপনার বন্ধন আরও মজবুত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy