গরমের ছুটি পড়ে যাবে আর কিছু দিনের মধ্যেই। কাঠফাটা রোদে স্কুলে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পাবে শিশুরা। ছুটিতে আলসেমি না করে ওই সময়টাতে শিশুকে কিছু সৃজনশীল কাজেও অভ্যাস করাতে পারেন। ছুটির সময়টাতে পড়াশোনার চাপ থাকবে না, কাজেই এই সময়টা ছোটদের শেখা ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ছুটির মাসটিকে এমন ভাবে কাজে লাগান, যাতে মজা, আনন্দের মাঝেই ছোটরা শিখে নিতে পারে অনেক কিছু।
সৃজনশীল কাজ
ছবি আঁকা থেকে গান গাওয়া, সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন সন্তানকে। সন্তান কোনও ছবি আঁকলে কী ভাবে ছবিটি আরও ভাল হতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা করুন। গান ভালবাসলে ভাল ভাল গান শোনার ব্যবস্থা করে দিন। সংগীতচর্চার সুযোগ করে দিন। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে পারেন। তবে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নয়, সন্তান এই সব কাজে আনন্দ পাচ্ছে কি না, তা-ও দেখতে হবে।
ঘরবন্দি নয়, খেলাধুলো করুক শিশু
সকাল সকাল শিশুকে হাঁটতে নিয়ে যান। কাছাকাছি পার্ক থাকলে ভাল। সেখানে খেলতে পারবে শিশু। সাইকেল চালানো অভ্যাস করান। সকালবেলাটা যেন উপভোগ্য হয়ে ওঠে তার কাছে। এখনকার অনেক স্কুলেই ‘এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস’-এর মধ্যে খেলাধুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেউ বেছে নেয় ফুটবল, কেউ ক্রিকেট, কেউ আবার দাবা। পাশাপাশি, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, সাঁতারের মতো খেলাধুলো শেখার সুযোগও রয়েছে। ছুটির সময়ে এই সব খেলাতেই গুরুত্ব দিন বেশি। এতে শরীরচর্চাও হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
ঘরের কাজ
ঘরের ছোট ছোট কাজও শেখাতে হবে। এই বিষয়ে পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায় পরামর্শ দিচ্ছেন, ছোটদের নিজের মতো করে খাবার বানাতে দিন। কোনও কুকবুক কিনে দিন। ওর সঙ্গে রান্না করুন, যাতে রান্নাঘরে সময় কাটানো সে উপভোগ করে। শিশুকে বাজারে নিয়ে যান, সেখানে শাকসব্জি চেনান, কী ভাবে জিনিসপত্র কিনছেন, কোথায় টাকা রাখছেন, এই সব কিছুই একটু একটু করে বোঝাতে থাকুন। পাশাপাশি, ঘর গোছানো, নিজের পড়ার টেবিল গোছানো— এই সব কাজেও পাকাপোক্ত করে তুলুন।
শান দিক মগজাস্ত্রে
ছুটি মানেই দিনভর মোবাইল বা টিভি দেখা নয়। ছোটরা এখন মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখা, গেম খেলায় মেতে উঠেছে। মোবাইল দেখতে বারণ করলেও তারা শুনবে না। তাই ‘স্ক্রিন টাইম’ বেঁধে দিন। পারমিতা জানাচ্ছেন, সারা দিনে ১ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রাখুন। শিশু যাদে মোবাইল নিয়ে থাকতে না পারে তার জন্য আবৃত্তি শেখান, বাড়িতেই ক্যুইজের আয়োজন করুন। কোনও ছবির বই হোক, কমিকস বা কোনও ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন। নিজেও ওর সঙ্গে পড়ুন। এতে পড়ার অভ্যাস ও পড়ার মাধ্যমে শেখার অভ্যাস তৈরি হবে। শব্দভান্ডারও উন্নত হবে।