গরম যেন হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। রাস্তায় বেরোলে কাঠফাটা রোদ শরীর নিংড়ে নিচ্ছে। গরম যতই বাড়ুক, কাজকর্ম শিকেয় তুলে রাখলে তো চলবে না। শিশুদের স্কুলে যেতে হচ্ছে, বড়দের অফিস, কাজের জায়গাতেও যেতে হচ্ছে। গরমের দিনে খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এই সময় বেশি ভারী খাবার, ভাজাভুজি বা মশলা দেওয়া খাবার খেলেই বদহজমের সমস্যা বাড়বে। ছোটদের তো আরও। টিফিনে এমন খাবার দিতে হবে যাতে শিশু পুষ্টিও পায়, আবার পেটও ঠান্ডা থাকে। তাই এই সময় রুটি বা পাউরুটি, চাউমিন-ম্যাগির বদলে টিফিনে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দিতে হবে রকমারি স্যালাড। কখনও সব্জি দিয়ে, কখনও ফল দিয়ে সুস্বাদু স্যালাড বানিয়ে দিন।
মরসুমি ফল-আনাজের স্যালাড খাওয়া সব সময়েই ভাল। তাতে শরীর যেমন পুষ্টি পায়, তেমন নানা রঙে ভরা সেই খাবার মনও ভাল রাখে। ছোটরা অনেক সময়েই টিফিন খেতে চায় না। একঘেয়ে খাবারে অরুচিও হয়। কিন্তু নানা রঙের সব্জি ও ফল দিয়ে স্যালাড বানিয়ে দিলে তা দেখতেও যেমন ভাল লাগবে, তেমনই শিশুর খেতেও ভাল লাগবে। তাই বলে বাঙালির চিরপরিচিত কাঁচা সবুজ স্যালাড খেলে হবে না। প্রচুর ক্যালোরিতে ভরা ড্রেসিং মেশানো স্যালাডও নয়। তাতে কোনও উপকার নেই। কী ধরনের স্যালাড শিশুর জন্য পুষ্টিকর হবে জেনে নিন।
ছোলার স্যালাড

ছোলার স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
সেদ্ধ ছোলা অলিভ তেলে হালকা নেড়ে নিতে পারেন। তার পর ছোলার সঙ্গে কুচি করে কাটা শসা, টম্যাটো, অলিভ মিশিয়ে দিন। চাইলে চিজ় দিতে পারেন। প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর এই স্যালাড শরীরের জন্য খুব ভাল। চাইলে এতে সেদ্ধ চিকেন বা কিনোয়াও মেশাতে পারেন।
গ্রিল্ড চিকেন স্যালাড

গ্রিল্ড চিকেন স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
মুরগির মাংস ছোট ছোট টুকরো করে নিয়ে তাতে লেবুর রস, নুন, রসুনবাটা, গোলমরিচের গুঁড়ো, অলিভ অয়েল মাখিয়ে রাখুন অন্তত ঘণ্টাখানেক। একটি পাত্রে সয়া সসের সঙ্গে স্বাদমতো মধু মিশিয়ে নিন। এ বার কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে মুরগির মাংস উল্টেপাল্টে গ্রিল করে নিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে সস্ এবং মধু মাখিয়ে আরও মিনিট দুয়েক রান্না করে নিন। এর পর ছুরি দিয়ে সরু সরু করে নিন মাংস। লেটুস, টম্যাটো, শসার স্যালাডের সঙ্গে মুরগির টুকরো মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু স্যালাড।
ব্ল্যাক বিন্স অ্যান্ড কর্ন স্যালাড

ব্ল্যাক বিন্স অ্যান্ড কর্ন স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
ব্ল্যাক বিন্স, মিষ্টি ভুট্টার দানা, টম্যাটো একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এতে সামান্য আদার রস ও গোলমরিচ ছড়িয়ে দিন। চাইলে এতে ব্রোকোলি ও নানা রঙের বেলপেপারও মেশাতে পারেন। স্যালাড ড্রেসিংয়ে মেয়োনিজ় নয়, বরং দই মেশাতে পারেন। তাতে স্বাদ আরও বাড়বে, পেটও ঠান্ডা থাকবে।
কিনোয়ার স্যালাড

কিনোয়ার স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
খুবই স্বাস্থ্যকর এই স্যালাড। কিনোয়া সেদ্ধ করে নিতে হবে। এর সঙ্গে নানা রকম মরসুমি সব্জি মিশিয়ে দিন। লেটুস, শসা, টম্যাটো, বেলপেপার মিশিয়ে উপর থেকে লেবুর রস ও গোলমরিচ ছড়িয়ে দিন। কিনোয়ায় ভরপুর প্রোটিন থাকে। সব্জিতে থাকে ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কিনোয়ার স্যালাড পেট ভর্তি রাখবে এবং ওজনও কমাবে।
বিট-বাদামের স্যালাড

বিট-বাদামের স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
খুব সরু করে শসা আর বিটরুট কেটে নিন। বাটিতে নুন, গোলমরিচ এবং লেবুর রস দিন স্বাদ অনুযায়ী। উপর থেকে চিনেবাদাম ছড়িয়ে দিন। পেট অনেক ক্ষণ ভর্তি থাকে এটা খেলে।
এশিয়ান স্যালাড

এশিয়ান স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
শসা গোল গোল করে কেটে নিতে হবে। টুকরোগুলি খুব বেশি পাতলা করবেন না। এ বার একটি তেল তৈরি করে নিতে হবে। তার জন্য সসপ্যানে তেল দিয়ে কম আঁচে গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিন। পেঁয়াজে সোনালি রং ধরা অবধি নাড়াচাড়া করুন। তার পর এতে দিন আদা। গ্যাস বন্ধ করে তেল নামিয়ে তাতে নুন-মরিচ, চিনি, চিলি অয়েল, রসুন কুচি, লেবুর রস সব একসঙ্গে মিশিয়ে খুব ভাল করে নাড়াচাড়া করে নিন। এ বার কেটে রাখা শসার উপরে তেল, গ্রেট করা চিজ় ও ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ম্যাঙ্গো স্যালাড

ম্যাঙ্গো স্যালাড। ছবি: ফ্রিপিক।
আমের সময় এসে গিয়েছে। পাকা আমকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এ বার একটি পাত্রে আমের টুকরোগুলি নিয়ে তার সঙ্গে পেঁয়াজ কুচি, লাল ক্যাপসিকাম কুচি, শসা কুচি, লঙ্কা কুচি, ধনেপাতা কুচি, লেবুর রস, সয়া সস, চিলি অয়েল, মধু, গোলমরিচের গুঁড়ো, ভাজা বাদাম কুচি ভাল করে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু স্যালাড।