সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রেমে পড়ার দিনগুলির মাধুর্যই আলাদা। বিবাহিত জীবনের গোড়ার দিকের দিনগুলিও যেন স্বপ্নের মতো। কিন্তু, মধুচন্দ্রিমার রেশ কাটতে না কাটতেই ব্যস্ততা, সংসার, পরিবারের চাপে ক্রমশ সম্পর্কের সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। প্রেমের কথা কখন যে বাজারের ফর্দে বদলে যায়, বোঝাই যায় না।
দিন গেলে সম্পর্কের সমীকরণ বদলাবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সম্পর্ক একেবারে পানসে হয়ে গেলে বা দূরত্ব তৈরি হলেই মুশকিল। দূরত্ব বাড়তে না দিয়ে দু’পক্ষই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে ফের সুন্দর হতে পারে সম্পর্ক।
কথা বলা
সম্পর্কে দূরত্বের অসংখ্য কারণ হতে পারে। বিশ্বাসের অভাব, বোঝাপড়ার অভাব, সময়ের অভাব। অনেক সময় দেখা যায়, ছোট ছোট কারণে মান-অভিমান জমতে জমতে কথা বলাটাই আর হয়ে ওঠে না। কথোপকথন যে কোনও সম্পর্কে খুব জরুরি। কথা বলা বন্ধ হলে বা মন খুলে মনের কথা বলতে না পারলে, ভুল বোঝাবুঝি বা দূরত্বের আশঙ্কা থেকে যেতে পারে। আবার মান-অভিমানের বেড়া ডিঙিয়ে পরস্পরের সঙ্গে ভাল সময় কাটালে, কথা বললে, সম্পর্কের দূরত্ব কমতেও পারে।
বিশ্বাস
সম্পর্কের ভিতই হল বিশ্বাস, ভালবাসা। কোনও কারণে বিশ্বাসের জায়গাটি টালমাটাল হলে সম্পর্কের ভিত টলে যেতে পারে। তাই শুরু থেকেই এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তবে কখনও এমনটা ঘটলে, সেই মানুষটিকে আরও এক বার সুযোগ দেওয়া যায় কি না ভেবে দেখা প্রয়োজন। আর এ ক্ষেত্রে এক বার সেই সুযোগ মিললে, তা হাতছাড়া করা অনুচিত হতে পারে। বিশ্বাস যিনি ভেঙেছেন, বিশ্বাস ফেরানোর দায়িত্বটি তাঁরই নেওয়া প্রয়োজন।
বোঝাপড়া
সংসার করতে গেলে জীবন প্রেমের দিনের মতো মধুময় হবে বা বিবাহিত জীবনের শুরুর দিনগুলির মতো অন্তরঙ্গতায় মোড়া থাকবে, এমনটা ভাবা হয়তো ঠিক নয়। এক ছাদের নীচে থাকলে অন্যের দোষ-ত্রুটিগুলিও প্রকট হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। এখানেই প্রয়োজন পারস্পরিক বোঝা়পড়া। বাড়ি-কর্মজগৎ, একটা সময়ের পর সন্তান পালন ও অন্যান্য দায়দায়িত্ব এসে পড়বেই। একে অন্যকে বোঝার চেষ্টা, পাশে থাকার মানসিকতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান থাকলে সমস্ত ঝড়-ঝাপটা একসঙ্গে সামলে নেওয়া সম্ভব হবে।
স্বাধীনতা
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বিশ্বাস ও ভরসা থাকা যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনটাই দরকার স্বাধীনতা। প্রতি মুহূর্তে যদি অন্য মানুষটি কী করছেন তার কৈফিয়ৎ দিতে হয়, তা হলে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। স্ত্রী বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে গিয়েছেন। সেই সময় যদি স্বামী প্রয়োজন ছাড়া বার বার তাঁকে ফোন করেন, তিনি যেমন বিরক্ত হবেন, ঠিক তেমনই স্বামী অফিস থেকে ফেরার পথে কোথায়, কত ক্ষণ দাঁড়াচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন, স্ত্রী যদি ফোন করে সেই সব নিয়মিত খোঁজ করেন, তিনিও বিরক্ত হবেন। প্রতিটি মানুষের নিজের মতো সময় কাটানোর স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন।
ভাল সময়
দিনভর হাজারো ঝক্কির শেষে, সারা দিনের পর কিছুটা সময় স্বামী-স্ত্রীর একান্ত সময় কাটানো জরুরি। সেখানে গল্প থাকতে পারে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকতে পারে। একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখাতেও ভাললাগা থাকে। ছুটির দিনে কিছুটা সময় একসঙ্গে বাইরে যাওয়া, ঘোরা সম্পর্কে ভাল রাখতে সাহায্য করে। এতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার পরিসর বাড়ে।
দাম্পত্য সম্পর্ক
সুস্থ দাম্পত্য সম্পর্কে শারীরিক মেলামেশাও জরুরি। এতে শরীর ও মন ভাল থাকে। শারীরিক সম্পর্ক মানে কিন্তু শুধুই সঙ্গম নয়। একে অপরকে জড়িয়ে ধরা, প্রয়োজনে অন্যের বুকে মাথা রেখেও আস্থা খোঁজা যায়। স্পর্শের মধ্যেও নির্ভরতা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy