পুজোয় প্রেমের আলাদা উদ্যাপন হোক। ছবি: সংগৃহীত।
বসন্ত পঞ্চমী যদি হয় বাঙালির ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’, তবে জোর দিয়ে বলাই যায় আশ্বিনের শারদপ্রাতে অকালবোধন হয় বসন্তের। শরতের স্বচ্ছ আকাশে এ সময়ে ভেসে বেড়ায় প্রেমের রামধনু। আশ্বিনে কাশফুলের বুনো গন্ধ মেখে নতুন প্রেমের পদাবলি লেখা তো হয়ই। সেই সঙ্গে পুরনো প্রেমের উদ্যাপনও চলে মহা সমারোহে। উৎসব যেমন ভাল থাকার দিন, তেমনই ভালবাসার দিনও। নতুন কেনা পোশাক পরে, ভালবাসার মানুষটির হাতে হাত রেখে উৎসবের আলোয় মোড়া শহরের জনস্রোতে হারিয়ে যেতে মন্দ লাগে না। সে এক আলাদা অনুভূতি, অচেনা শিহরন। যে অনুভূতির পারদ দূর থেকে মাপা সম্ভব নয়। সঙ্গীর হাত ধরে জন অরণ্যে হারিয়ে যেতে ভাল লাগলেও, কখনও কখনও নির্জনতাও খোঁজেন অনেকে। প্রেমের কাছে কলরব ফিকে হয়ে গেলেও নিভৃত যাপনও হাতছানি দেয়। উৎসবের মায়াবী আলোয় সঙ্গীর ঠোঁটে প্রেমের পদ্য এঁকে দেওয়ার এমন সুযোগ তো বছরে এক বারই আসে। শহরের অলিগলি থেকে আনাচকানাচে— কাঁধে মাথা রাখা গেলেও সঙ্গীর ঠোঁটে ঠোঁট রাখার মতো নির্জনতা পুজোর কলকাতায় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে নেই, তা নয়। পুজোর ভিড় এড়িয়ে নিভৃতে ঠোঁটে ঠোঁটে ব্যারিকেড তৈরি করতে চাইলে কোথায় যেতে পারেন?
প্রিন্সেপ ঘাট থেকে নৌকাভ্রমণ
খাস কলকাতার বুকে প্রেম করার এমন জায়গা খুব কম আছে। কত প্রেমের সাক্ষী এই প্রিন্সেপ ঘাট। শহরের পুজোর ভিড় থেকে আলাদা নির্জনতা খুঁজে নিতে প্রিন্সেপ ঘাট হতে পারে অন্যতম ঠিকানা। সময় কাটাতে হয়তো এর আগে বহু বার এসেছেন এখানে। কিন্তু উৎসবের মেজাজে ঠোঁটে ঠোঁট রাখার খানিক সুযোগ মিলবে এখানে। ঘাটে বসে চুম্বনের অভিজ্ঞতা থাকলে গঙ্গাবক্ষে নৌকাবিহার করতে পারেন। নৌকার ছাউনি চুম্বনের জন্য সবচেয়ে ভাল আড়াল হতে পারে। পুজোয় এর চেয়ে ভাল প্রেমের উদ্যাপন আর হবে না।
নলবন
ইট, কাঠ, বালি, পাথরের শহরে প্রেম করার আরও এক ঠিকানা। চালতা বাগান, তেলেঙ্গা বাগান, শোভাবাজার, বেনিয়োটোলার দুর্গাপুজো দেখার ফাঁকে যদি সঙ্গীর ঠোঁটে হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয়, তবে নলবনে আসতে পারেন। সবুজে ঘেরা বোটিং লেক। কান পাতলে পাখির কিচিরমিচিরে মন ভরে যাবে। মুহূর্ত তৈরি হবে কাছাকাছি আসার। লেকের জলে ভাসতে ভাসতে সঙ্গীর ওষ্ঠের স্বাদ নিতে চাইলে, তা-ও পারেন।
সায়েন্স সিটির রোপওয়ে
পুজোর ভিড়ে সঙ্গীর ঠোঁটে আশ্রয় খুঁজতে চলে আসতে পারেন সায়েন্স সিটিতে। সায়েন্স সিটিতে হাতে হাত কয়েক ঘণ্টা নিশ্চিন্তে বসা গেলেও খানিক কাছাকাছি আসতে রোপওয়ে ছাড়া গতি নেই। আকাশের কাছাকাছি গিয়ে চুম্বনের এক আলাদা অভিজ্ঞতাও হবে। আকাশে ঘুরে বেড়ানো পেজা তুলোর মতো মেঘ আর সঙ্গীর চুম্বনের ছোঁয়া, সেই মুহূর্ত রূপকথার চেয়ে কিছু কম নয়।
বাগবাজার ঘাট
উত্তর কলকাতা হল প্রেমের পীঠস্থান। আর তার অন্যতম হল বাগবাজার ঘাট। উত্তরের পুজো পরিক্রমায় বেরিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে নিভৃতে সময় কাটাতে হলে বাগবাজার ঘাটে আসা যায়। ঘাটের কাছে গঙ্গার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর পুজোর গন্ধ— মিলেমিশে প্রেমের মুহর্ত তৈরি হতেই পারে। তবে বাগবাজার বেশ জনবহুল। লোকজনের আনাগোনা বেশি। বরং কয়েক পা এগিয়ে মায়ের ঘাটে যেতে পারেন। নদীর ঘাটের কাছে বেঁধে রাখা নৌকার পাশে দাঁড়িয়ে গঙ্গাকে সাক্ষী রেখে এর আগে কখনও ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছেন? না হলে, এ বার পুজোয় হলে মন্দ হয় না।
টালা ঝিল পার্ক
আলোর রোশনাই আর কলরবে মোড়া শহর থেকে কিছু ক্ষণের জন্য সঙ্গী নিয়ে হারিয়ে যেতে চাইলে আসতে পারেন এই ‘সবুজ দ্বীপে’। চারদিকে সবুজের সমারোহ। রংবেরঙের নানা পাখি, ঝিলের ঠান্ডা হাওয়া, গাছেদের বৈচিত্র— একমুঠো শান্তির খোঁজে এখানে এলে, খালি হাতে ফিরবেন না। সারা দিনই লোকজনের চলাচল থাকে এখানে। গাছের আড়ালও কিন্তু আছে। পাতার ফাঁক গলে আসে শরতের আলো গায়ে মেখে চুমু খেলে পুরনো প্রেম মুহূর্তে নতুন হয়ে উঠবে। ফেরার পথে চাইলে টালা প্রত্যয়, টালা বারোয়ারির ঠাকুর দেখে আসতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy