শিশুকে কী ভাবে খাওয়ালে আর বায়না করবে না? প্রতীকী ছবি।
শিশুকে খাবার খাওয়াতে গিয়ে হিমশিম দশা হয় অনেক বাবা-মায়েরই। শিশুর ৬ মাস বয়স পেরিয়ে গেলে তখন একটু একটু করে শক্ত খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তার পর থেকেই সমস্যাটা শুরু হয়। অনেক শিশুই খেতে চায় না বা খাবার মুখে নিয়ে বসে থাকে। একটু বড় হলে স্কুলে যাওয়ার সময় কিংবা রাতের খাবার খাওয়ার সময় তুলকালাম কাণ্ড বহু বাড়িরই নিত্য ঘটনা। কারণ আর কিছুই নয়, খাবারের প্রতি সন্তানের অনীহা। এর উপর বকাঝকা করলে বা জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
শিশু চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের কথায়, জোর করে শিশুকে খাওয়ানো একেবারেই ঠিক নয়। এতে শিশুর খাবারের প্রতি অনীহা আরও বাড়বে। ভীতিও তৈরি হবে। বাবা-মাকে বুঝতে হবে, সব শিশু সমান নয়। প্রত্যেকের হজমশক্তি আলাদা। খাবার খাওয়ার পরিমাণও ভিন্ন। অনেক অভিভাবকই ভাবেন ,বেশি করে খাওয়ালে বুঝি বেশি পুষ্টি হবে। এই ধারণা ভুল। আবার অনেকেই বড়দের মতো ২-৩ ঘণ্টা অন্তর শিশুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এই অভ্যাসও স্বাস্থ্যকর নয়।
বাবা-মায়েরা কী কী খেয়াল রাখবেন?
১) অনেক শিশুই এক বারে খেতে চায় না। তাই অল্প অল্প করে খাওয়ান। এক কাপ ভাত, সঙ্গে ডাল বা সব্জি, একটুকরো মাছ অথবা চিকেনের স্ট্যু হলেই তা যথেষ্ট। অনেকে একবারে বেশি পরিমাণ খেতে পারে, অনেকে আবার বারে বারে অল্প পরিমাণে খেতে পারে। জোর করে বেশি খাওয়াতে গেলে শিশুর হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২) মনে রাখতে হবে, প্রাপ্তবয়স্ক আর শিশুর ডায়েট কিন্তু এক নয়। বড়রা ২-৩ ঘণ্টা অন্তর খেলেও, ছোটদের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কার্যকর না-ও হতে পারে। শিশুর শরীর, ওজন বুঝে খাবার খাওয়াতে হবে। যখন সে খেতে চাইবে, তখনই খাওয়ানো উচিত।
৩) শিশু খেতে না চাইলে, সেই খাবার আর খাওয়াবেন না। কিছু ক্ষণ পরে অন্য কোনও খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। শিশু বলেই সব সময় সেদ্ধ বা পাতলা কিছু খাওয়াতে হবে, এমন নয়। ঘরে কম তেল ও মশলা দিয়ে রান্না করা খাবারও খাওয়াতে পারেন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাবার দিতে হবে শিশুকে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, একই খাবার রোজ দেবেন না। ধরুন, এক দিন বাড়িতে চাল-ডাল-আলু দিয়ে হালকা করে তৈরি খিচুড়ি সামান্য ঘি বা মাখন দিয়ে খাওয়ালেন। পরদিন আবার চারা মাছের ঝোল দিয়ে ভাত দিলেন। নানা রকম খাবারের স্বাদ পেলে শিশু আর বায়না করবে না।
৪) শিশু বসতে শিখলে বড়দের সঙ্গে বসিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। একই টেবিলে বসে খেলে, বড়দের দেখে শিশুরও খাওয়ার ইচ্ছা হবে। সব সময়ে আলাদা রান্না করবেন না। বরং আপনারাও হালকা রান্না খাওয়াই অভ্যাস করে দিন। একই রকম খাবার খেলে, শিশুর আর খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হবে না।
৫) মোবাইল দেখিয়ে বা টিভি চালিয়ে খাওয়াবেন না। এতে শিশু দীর্ঘ ক্ষণ খাবার নিয়ে বসে থাকবে। খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হবে। খাওয়া শেষ হওয়ার অন্তত মিনিট পনেরো পরে জল খাওয়াবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy