কিছু দিন আগে ওটিটি-তে মুক্তি পেয়েছে আর মাধবনের ‘হিসাব বরাবর’। আর্থিক জালিয়াতি নিয়ে তৈরি এই ছবির সূত্র ধরেই এক সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিজীবনে অর্থ ও সঞ্চয় নিয়ে তাঁর ভাবনা প্রকাশ করলেন অভিনেতা। মাধবন মনে করেন, একজন সফলতম ব্যক্তি নিজেই নিজের অ্যাকাউন্ট, অর্থের দেখভাল করেন। তবে এমন গুণ তাঁর নেই।
অতীতে মাধবনের স্ত্রী একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, সংসারের খরচ সম্পর্কে তাঁর স্বামীর কোনও ধারণা নেই। অভিনেতা নিজেও বলেন, ‘‘খরচ নিয়ে আমার ধারণা নেই। কিন্তু যদি ভাল গাড়ি বা অন্য কিছু কিনতে গিয়ে তা আয়ত্তের বাইরে দেখি, তা হলে সেটা আমি কিনি না। এই ধরনের জিনিসপত্রের প্রতি এমনিতে আমার কোনও লোভ নেই।’’ মাধবনের মতে, তিনি শিল্পী। ফলে অর্থ এবং সঞ্চয় নিয়ে তাঁর ধারণা স্পষ্ট নয়।
টাকাকড়ি, সঞ্চয় নিয়ে কেউ যেমন উদাসীন, অনেকেই আবার এই ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহালও। হিন্দি ছবি ‘রুপয়া পয়সা’-র পরিচালক মুকেশ পাণ্ডে কিন্তু মনে করেন, শুধু উপার্জন বা সঞ্চয়েই আর্থিক বিষয়টি সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। বরং সঞ্চয়ের উপযুক্ত পরিকল্পনা, বিভিন্ন প্রকল্প, বিনিয়োগ নিয়ে সঠিক তথ্য জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন:
জীবনের প্রতিটি ধাপেই অর্থ অত্যন্ত জরুরি। তার জন্য উপার্জন যেমন প্রয়োজন, তেমনই দরকার বিনিয়োগে মন দেওয়া, বলেন আর্থিক পরামর্শদাতারা। কী ভাবে অর্থ সঞ্চয় করবেন, বিনিয়োগে বাড়়াবেন টাকার অঙ্ক, জেনে নিন কৌশল।
১. অর্থ উপার্জন করা হয় খরচ করার জন্য। তবে দৈনন্দিন খরচ মিটিয়ে শখপূরণের পাশাপাশি বিপদ-আপদের জন্য সঞ্চয় খুব জরুরি। অসুখ-বিসুখ যেমন রয়েছে, তেমনই তার সঙ্গে জুড়ে যায় সন্তানের পড়াশোনা, প্রয়োজন ইত্যাদি। এ কাজে সহায়ক হতে পারে '৫০:৩০:২০ রুল'। এই নিয়ম বলছে, উপার্জনের ৫০ শতাংশ খরচ করা যেতে পারে দৈনন্দিন প্রয়োজনে। ৩০ শতাংশ শখপূরণে। তার মধ্যে খাওয়া, সিনেমা দেখা, বেড়ানো ও আনুষঙ্গিক খরচ থাকবে। তবে ২০ শতাংশ সঠিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা দরকার।
২. জরুরিকালীন সঞ্চয়ও বিশেষ প্রয়োজন। আচমকা কোনও বড় অসুখ, অস্ত্রোপচার, চাকরি চলে যাওয়া, ব্যবাসায় মন্দা সামাল দেওয়ার জন্য এই খাতে অর্থ সঞ্চয় করা দরকার বলেন আর্থিক পরামর্শদাতারা। তাঁরা বলছেন, এই অর্থ এমন কোনও প্রকল্প বিনিয়োগ করা প্রয়োজন, যা যখনই দরকার তখনই মিলবে। সেই বিনিয়োগ প্রকল্পও সুরক্ষিত হওয়া দরকার। বিপদের সময় চড়া সুদে ঋণ নেওয়া কোনও কাজের কথা নয়।
৩. ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাও কাজে লাগানো যায়। হঠাৎ সমস্যায় পড়লে ক্রেডিট কার্ড কাজে আসতে পারে। তবে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা ব্যবহারের পর নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে তা ফেরত দেওয়া জরুরি। সেই তারিখের যেন নড়চড় না হয়। এতে খরচ বাড়তে পারে।
৪. দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে যেমন বিনিয়োগ করা যায়, তেমনই স্বল্প সময়ের জন্যেও বিনিয়োগের ব্যবস্থা রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ারে বিনিয়োগের পাশাপাশি সুরক্ষিত প্রকল্পে বিনিয়োগও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাজারগত ঝুঁকি যেখানে রয়েছে তেমন জায়গায় উপার্জিত অর্থের কিছু অংশ বিনিয়োগ করা যেতে পারে, সম্পূর্ণটা নয়। পাশাপাশি ফ্ল্যাট, গাড়ি, জমি কিনে বা অন্য ভাবে সম্পদ সঞ্চয় করা যেতে পারে।
৫. বিপদে-আপদে সাহায্য পেতে উপযুক্ত বিমা করানোও জরুরি। স্বাস্থ্যবিমা, জীবনবিমা— এমন অনেক কিছুই প্রয়োজনে অত্যন্ত কার্যকর হয়। এক এক ধরনের বিমায় এক এক রকম শর্ত থাকে। সেগুলি ভাল ভাবে জেনে বুঝে নেওয়া দরকার।