শীতের পড়ন্ত বিকেলে শহরের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শীতকালের ছুটির দিন মানেই অনেকের কাছে লেপ মুড়ি দিয়ে ভাতঘুম! অনেকে আবার শীত এলেই বাঁধনছাড়া খাঁচার পাখি, বাড়িতে মোটেই মন টেকে না! শীতের পড়ন্ত বিকেলে শহরের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা! এই শীতে কলকাতার কোন ৫ জায়গায় সবচেয়ে বেশি ভিড় জমতে পারে? ২০২৩-এ কোন কোন জায়গায় ঢুঁ না মারলে লোকসান হবে আপনারই, রইল তার হদিস।
আলিপুর জেল মিউজ়িয়াম:
আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভোল এখন একেবারেই বদলে গিয়েছে। সেখানে তৈরি হয়েছে ‘আলিপুর জেল মিউজ়িয়ম’। এই সংশোধনাগারের ইতিহাস নথিবদ্ধ রয়েছে এই আলিপুর মিউজ়িয়মের মধ্যেই। ৩০ টাকা প্রবেশমূল্য দিলেই জেনে ফেলতে পারবেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অজানা কাহিনি। এই ইতিহাস বিজড়িত অজস্র কাহিনি নিয়েই মিউজ়িয়মের ভিতরে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো দেখতে গেলে যদিও বাড়তি ১০০ টাকা দিতে হবে আপনাকে। ১৯০৬ সালে আদি গঙ্গার পাড়ে তৈরি হয়েছিল আলিপুর জেল। এই সংশোধনাগারের মধ্যেই এক সময়ে বন্দি ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু, বিধানচন্দ্র রায় থেকে শুরু করে যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত, দীনেশ গুপ্তরা। প্রতি মঙ্গলবার থেকে রবিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই মিউজ়িয়ম। লাইট অ্যান্ড সাউন্ডে প্রথম শো দেখানো হয় সন্ধ্যা ৭টার পর। মিউজ়িয়ম ঘুরে দেখার পর হালকা খিদে পেলে খাওয়াদাওয়ার জন্য মিউজ়িয়মের ভিতরেই রয়েছে ক্যাফে।
ইয়াম ইয়াম কোরিয়ান বাকেট:
কলকাতাবাসী নতুন নতুন খাবার চেখে দেখতে বরাবরই ভালবাসেন। চাইনিজ়, কন্টিনেন্টাল খাবারের পর এখন তাঁদের নজর কোরিয়ান খাবারের দিকে। ঝালের ব্যাপারে চাইনিজ়কে টেক্কা দেয় কোরিয়ান খাবার। শহরে কোরিয়ান রেস্তরাঁ হাতেগোনা, তবে এই প্রথম রাস্তার ধারে ট্রাকে বিকোচ্ছে কোরিয়ান খাবার। গড়িয়াহাটের যতীন বাগচী রোডে বিকেলের পর গেলেই হলুদ ট্রাকের সামনে লম্বা ভিড় চোখে পড়ে। কেউ অর্ডার দিচ্ছেন হট রামেন, কেউ আবার লাইন দেন কর্ন ডগ কিংবা বিবিমবাপের জন্য। সেখানকার গ্যাং জিয়ং চিকেন আর কিমচি স্যালাডের স্বাদ নাকি ভোলার নয়। চাইনিজ়ের পাশাপাশি এখন কি তিলোত্তমার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেবে কোরিয়ান খাবারও? এই ফুড ট্রাকের জনপ্রিয়তা কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
সিনে ক্যাফেস:
পেক্ষাগৃহ পাননি তাই শহরের পাঁচ ক্যাফেকে বেছে নিয়েই নিজের ছবি ‘জুতো’-র স্ক্রিনিং করলেন নতুন পরিচালক সৌরিশ দে। ক্যাফেতেই ভিড় জমিয়ে ছবি দেখলেন সিনেমাপ্রেমীরা। যাদবপুরে খুলেছে সিনে ক্যাফেস। প্রিয়জন হোক কিংবা গোটা পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের দল, একটা অডিটোরিয়াম বুক করে নিলেই কেল্লাফতে! মনের মতো খাবার আর বিশাল বড় স্ক্রিনে পছন্দের সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ়ের দেখার আস্বাদ নিতে পারবেন এই ক্যাফেতে। কারও জন্মদিন হোক বা বিবাহবার্ষিকি, এই ঠেকে গিয়ে সময় কাটাতে মন্দ লাগবে না। অডিটোরিয়াম ভাড়া করতে জনপ্রতি খরচ ১৭৫ টাকা। তার পরে যা যা খাবার অর্ডার করবেন, সেই খরচ আলাদা।
ইকোপার্ক চত্বর:
ইকোপার্কের গেট নং ২-এর উল্টো দিকে মাদার ওয়াক্স মিউজ়িয়মের ঠিক সামনের ২০ মিটার রাস্তাটায় এখন সন্ধ্যার পর থেকে মানুষের আনাগোনা বাড়ে। কেউ নিজস্বী তুলছেন, কেউ আবার খেতে ব্যস্ত। রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে সার সার ট্রাক। কোনও ট্রাকে বিকোচ্ছে একেবারে নিরামিষ খাবার, কোনও ট্রাকে চা-কফি, কোনওটায় আবার মিলছে মোমো, রোল কিংবা চাউমিন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই চত্বরে ভিড় থাকে চোখের পড়ার মতো। শীতের হিমেল হাওয়া, সঙ্গে মনের মতো খাওয়াদাওয়া আর প্রিয়জনের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা নিউ টাউনের এই ঠেক। ছুটির দিনে ঢুঁ মারতেই পারেন এই ঠিকানায়।
লর্ডসের মোড়:
কলকাতার লর্ডসের মোড়ে রাত ১০টার পরেও চোখে পড়বে তরুণ প্রজন্মের ভিড়। রাস্তার ধারে মোমোর ঠেক থেকে ট্র্যাভেলিস্তান, ক্যাফে বৈরাগী, বলিউড ক্যাফের মতো ঠান্ডা ঘরের আমেজে চলে দেদার আড্ডা। যত দিন বাড়ছে, ততই ওই চত্বরে খাবারের ঠেকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কলেজ-ফেরত পড়ুয়া থেকে অফিস শেষে ‘চায়ে পে চর্চা’-র জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লর্ডসের মোড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy