কলকাতার কোথায় কোথায় আছে ইনস্টাগ্রামে ছবি দেওয়ার মতো ক্যাফে? ছবি- সংগৃহীত
এখন আর মানুষ রেস্তরাঁয় শুধু খেতে যান না। খাওয়া তো বটেই, সঙ্গে ছবি তোলাও রয়েছে। সেই সব ছবি সমাজমাধ্যমের বন্ধুদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিন দিন। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন শুধু নিজেদের ছবি তোলে না। যেখানে যায়, সেখান থেকে সংগ্রহ করে আনে, এমন কিছু মুহূর্ত যা দিয়ে নিজের পরিসরকেও রাঙিয়ে তোলা যায়।
এখন সমাজমাধ্যমের রমরমার যুগ। অনুগামীদের সংখ্যা দেখে বোঝা যায়, কে কতটা জনপ্রিয়। তাই নতুন প্রজন্মও সারা ক্ষণ ভাবছে, কী ভাবে তাঁদের ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুকের অনুরাগীদের সংখ্যা বাড়ানো যায়। যে কোনও জনপ্রিয় প্রোফাইলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সুন্দর ছবি। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামে যদি আপনার প্রোফাইলে কিছু মিষ্টি দেখতে ক্যাফতে বসে কফি খাওয়ার ছবি না থাকে, তা হলে বন্ধুমহলে আপনার জনপ্রিয়তা কমবেই। তাই সকলেই সুন্দর অন্দরসজ্জার ক্যাফে খুঁজতে ব্যস্ত। যত সুন্দর রঙিন ব্যাকড্রপে আপনি ছবি তুলতে পারবেন, ইনস্টাগ্রামে তত বেশি ‘লাইক’। সুখবর, কলকাতার বুকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তেমনই কিছু স়ৃজনশীল, নান্দনিকতায় মোড়া ক্যাফে, যেগুলি এক বার ঘুরে না দেখলেই নয়।
কলকাতার পাঁচ সেরা ‘ইনস্টাগ্রামেবল’ ক্যাফেগুলি কী কী?
১। নাম: রোমানিয়া
কোথায়: ৩১, লালা লাজপথ রায় সরণি, এলগিন রোড, প্ল্যাটিনাম বিল্ডিং, কলকাতা ৭০০০২০
ইউএসপি: কলকাতার বুকে এক টুকরো গ্রিসের ছোঁয়া পেতে চাইলে এক বার ঘুরে আসতেই পারেন। রোমানিয়া ক্যাফে থেকে। ৩,৫০০ স্কোয়ারফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে এই ক্যাফে। পুরনো দিনের মোজ়ায়েক করা মেঝে এবং বাগানবিলাসের সমাহার ক্যাফের অন্দরসজ্জাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কফি থেকে ককটেল, স্যান্ডউইচ থেকে পিৎজ়া, কী নেই এখানে? স্বাস্থ্য সচেতন যাঁরা, তাঁদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন বাদাম, বেরি, ক্র্যানবেরি ছড়ানো ওটস। সকালের জলখাবারে মিলবে হ্যাশব্রাউন প্যানকেক। বন্ধুদের সঙ্গে এলে খানার সঙ্গে পিনার সুবিধাও মিলবে।
সেলফি জ়োন: এই ক্যাফের প্রতিটি কোণ ছবি তোলার উপযোগী। সান্তরিনির নীল গম্বুজ, খোলা ছাদ থেকে শীতের বিকেলের সূর্যাস্ত— ছবি তোলার জন্য আদর্শ।
২। নাম: ক্লাব এরিজ়
কোথায়: ১৪৫, রাসবিহারি অ্যাভিনিউ, কলকাতা ৭০০০২৯
ইউএসপি: খোলা আকাশের নীচে, বন্ধু পরিজনের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে চাকনা মার্টিনি, ভেজটেবিল স্টেক সিজ়লার, তো খেতেই হবে। সঙ্গে ফ্রায়েড আইসক্রিম হলেও মন্দ হয় না। এ ছাড়াও রয়েছে মাংসের রকমারি খাবার। বিভিন্ন রকমের সিজ়লার। যত রকমের ককটেল হয়, তার প্রায় সব রকমই পাওয়া যায় এখানে। মুখ মিষ্টি করার জন্য অবশ্যই খেতে হবে মাডস্লাইড।
সেলফি জ়োন: ক্যাফের ১৭ হাজার স্কোয়্যার ফুট জুড়ে পুরোটাই ছবির মতো। সবুজের সমাহার এবং হালফ্যাশনের সজ্জা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারার আদর্শ স্থান।
৩। নাম: রাহি টি টাইম
কোথায়: ২৪/এ ওল্ড বালিগঞ্জ সেকেন্ড লেন, বালিগঞ্জ পার্ক, বালিগঞ্জ, কলকাতা ৭০০০১৯
ইউএসপি: চা খেতে ভালবাসেন যাঁরা, তাঁদের জন্য আদর্শ স্থান হল এই রাহি টি টাইম। চা তো খাবেনই। চায়ের সঙ্গে ‘টা’ হিসেবে থাকবে নানা রকম মুখরোচক খাবার। এখানকার পোলাও-মাংসের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। তবে উৎসব অনুষ্ঠান উপলক্ষে খাবার তালিকা পরিবর্তিত হয়। সম্পূর্ণ মহিলা দ্বারা পরিচালিত এই ক্যাফেটি পুরনো বাড়ির ছাদে, দরমা, বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ঘেরা ক্যাফের ঝাঁ চকচকে চেহারা না থাকলেও সবুজের বৈচিত্র মন ভরিয়ে দেবে। হালকা, ছিমছাম অন্দরসজ্জা, পুরনো দিনের লাল মেঝে, বেতের মোড়া, সব মিলিয়ে বাঙালিয়ানার ছাপ তো রয়েছেই। ক্যাফের সঙ্গে সঙ্গে রাহি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। চা খেতে গেলে মহিলাদের হাতে তৈরি করা আচার, বড়ি, নিমকি, পাঁপড় অবশ্যই নিয়ে আসবেন।
সেলফি জ়োন: কঞ্চি ঘেরা ঘরটির সামনেই ছবি তুলতে পারেন। ক্যাফের ভিতরের চেয়ে বাইরে ছবি তোলাই বেশি ভাল।
৪। নাম: সোশাল হাইড আউট
কোথায়: ৮বি, মহারাজ নন্দ কুমার রোড, লেক মার্কেট, কালিঘাট, কলকাতা ৭০০০২৯
ইউএসপি: সকালের জল খাবার থেকে শুরু করে রাতের খাবারের নানা রকমের বিকল্প তো রয়েছেই। এখানে আছে বিভিন্ন রকম চা এবং কফি। তবে এখানকার বিশেষ পদ হল পর্তুগিজ় গ্রিলড চিকেন। যা এক বার না খেলেই নয়। এ ছাড়াও আপনার পছন্দ অনুযায়ী বরাত দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন পিৎজ়া। আর শেষপাতে মুখ মিষ্টি করার জন্য খেতে পারেন চকোলেট মন্টে কার্লো।
সেলফি জ়োন: দাবার বোর্ডের মতো সাদা-কালো চেকস-এর মেঝে সঙ্গে মানানসই অন্দরসজ্জা সব প্রজন্মেরই ভাল লাগবে। ছবি তোলার জন্য অন্যান্য জায়গা ছাড়াও এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি দোলনা। মাথার উপর কাচের আস্তরণ। সূর্যোদয় হোক বা সূর্যাস্ত, এই সময় ছবি তুললে ভাল লাগবে।
৫। নাম: ব্ল্যাক ব্রিক ক্যাফে
কোথায়: ৬০/১ চৌরঙ্গী রো়ড, অ্যালেকজ়ান্দ্রা কোর্ট, শ্রীপল্লি, ভবানীপুর, কলকাতা ৭০০০২০
ইউএসপি: বয়স মাত্র দু’বছর। তার মধ্যেই তরুণ প্রজন্মের পছন্দের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে এই ব্ল্যাক ব্রিক ক্যাফে। ইটালি, আমেরিকা, বার্মা এবং কন্টিনেন্টাল খাবারের বিপুল সম্ভার রয়েছে এখানে। এত ধরনের পিৎজ়া রয়েছে এই ক্যাফেতে যে, এক বার হলেও মনে হতেই পারে আপনি ইটালিতেই বসে রয়েছেন। এ ছাড়াও চেখে দেখতে পারেন পেরি পেরি সিজ়লার, বার্মিজ় পদ চিকেন খাও সুয়ে। যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, তাঁদের জন্য রয়েছে পার্মেশিয়ান পটেটোস, ভেজটেবিল স্প্যাগেটি। খাবার যে দেশেরই খান, শেষ পাতে একটু মুখ মিষ্টি না করলে চলে? ‘জ়েন জেড’দের পছন্দ এখানকার মল্টেন মাড পাই।
সেলফি জ়োন: ছবি তুলতে পারেন ঢোকার মুখে। রকমারি ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো দরজার কাছে হালফ্যাশনের পোশাক পরে বিভিন্ন ভঙ্গির ছবি উঠতেই পারে। ক্যাফের ভিতরে সাদা দেওয়াল জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন রঙের ‘ভিজুয়াল আর্ট’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy