Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

১০ বছরে অন্তর্বিভাগ চালু হল মাত্র দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

চিকিৎসা পরিষেবাকে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বছর দশেক আগে প্রতিটি ব্লকে অন্তত একটি পঞ্চায়েতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মানোন্নয়নের পরিকল্পনা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই পরিকল্পনা মতো হাওড়ার ১৪টি ব্লকের সাতটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝাঁ চকচকে ভবন তৈরি হয়। আনা হয় শয্যা, যন্ত্রপাতি এবং আসবাব। কিন্তু এত দিনে শুধুমাত্র পাঁচলার দেউলপুর এবং উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের ধুলোসিমলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মান কিছুটা উন্নত হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৫ ০০:১৭
Share: Save:

চিকিৎসা পরিষেবাকে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বছর দশেক আগে প্রতিটি ব্লকে অন্তত একটি পঞ্চায়েতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মানোন্নয়নের পরিকল্পনা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই পরিকল্পনা মতো হাওড়ার ১৪টি ব্লকের সাতটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝাঁ চকচকে ভবন তৈরি হয়। আনা হয় শয্যা, যন্ত্রপাতি এবং আসবাব। কিন্তু এত দিনে শুধুমাত্র পাঁচলার দেউলপুর এবং উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের ধুলোসিমলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। চালু হয়েছে অন্তর্বিভাগ। বাকিগুলি কবে চালু হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আর এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন ভবন তৈরি হতে দেখে যে সব গ্রামবাসী উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার আশা করেছিলেন, তাঁরা এ ভাবে নতুন ভবন এবং যন্ত্রপাতি পড়ে থেকে নষ্ট হতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, চিকিৎসকের অভাবেই জন্যই নতুন ভাবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি চালু করা যাচ্ছে না। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসকের সমস্যার কারণে এগুলি চালু করা যায়নি। স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎসক নিয়োগ করলেই চালু করা যাবে।’’ তবে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ, এ জন্য পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করেছেন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে রাজ্যের তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, যে সব পঞ্চায়েতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অনেকটা দূরে বা যেখানে কাছাকাছি কোনও হাসপাতাল নেই, সেই সব পঞ্চায়েতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া হবে। বহির্বিভাগ, অন্তর্বিভাগ থাকবে। ছোটখাটো অস্ত্রোপচার করা হবে। বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসবেন। ১০টি করে শয্যা থাকবে। এতে দূরবর্তী এলাকার মানুষের জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সুবিধা হবে এবং ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে চাপ কমবে।

সেই সিদ্ধান্ত মতো হাওড়ায় আমতা-১ ব্লকের ঘোষালপুর, আমতা-২ ব্লকের ভাটোরা, উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বাড়বেড়িয়া (পরে সেটা বদলে ধুলোসিমলা করা হয়), উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের রঘুদেবপুর, শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লকের নবগ্রাম এবং বাড়গড়চুমুক ও আমড়দহ, বাগনান-১ ও ২ ব্লকের মানকুর এবং আদরা ও বাঁটুল, সাঁকরাইলের রঘুদেববাটি, উদয়নারায়ণপুরের হরিশপুর, জগৎবল্লভপুরের মাজু, পাঁচলার দেউলপুর, ডোমজুড়ের বাঁখড়া ও বালি-জগাছা ব্লকের জগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবার মানোন্নয়নের পরিকল্পনা করে তৎকালীন জেলা প্রশাসন।

তার পর থেকে ভাটোরা, বাঁকড়া-সহ সাতটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝাঁ চকচকে ভবন নির্মাণের কাজও সম্পন্ন হয়। আনা হয় শয্যা-সহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। কিন্তু সেগুলি এখনও পড়েই রয়েছে। বছর খানেক আগে ধুলোসিমলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ চালু হয়েছে। আর দিন কয়েক আগে অন্তর্বিভাগ চালু হয়েছে পাঁচলার দেউলপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যদিও জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের দাবি, ধুলোসিমলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠিকঠাক চলছে না। কারণ, সেখানে কমপক্ষে দু’জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও মাত্র এক জন রয়েছেন।

ধুঁকছে প্রায় সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রই। ঘোষালপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে এক জন ফার্মাসিস্ট, এক জন নার্স এবং এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন। অথচ, সেখানে কিছু দিন আগে পর্যন্তও এক জন চক্ষু বিশেষজ্ঞ এবং আরও দু’জন চিকিৎসক ছিলেন। তিন জনকে আমতা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উলুবেড়িয়া-১ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং জয়পুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। ভাটোরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে এক জন চিকিৎসক এবং ফার্মাসিস্ট-সহ জনা পাঁচেক কর্মী রয়েছেন। এই অবস্থায় পরিষেবা নিয়ে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ গোপন রাখছেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy