হাড় মজবুত, দাঁত শক্তপোক্ত রাখতে প্রয়োজন হয় ক্যালশিয়ামের। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস-এর তথ্য বলছে ১৯ বছরের পর থেকে এক সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের দৈনিক ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম প্রয়োজন।
ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের কথা বলতে গেলে প্রথমেই নাম আসে দুধের। ১০০ মিলিলিটার দুধে ১২০-১২২ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম মেলে। কিন্তু শিশুদের দুধ খাওয়ার বিষয়ে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, বড়দের তা ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। বরং প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই আলাদা ভাবে আর দুধ খান না। কারও কারও আবার দুধে থাকা ল্যাক্টোজ় হজমেও সমস্যা হয় বলে, তাঁরা তা খেতে পারেন না। ফলে ঘাটতি তৈরি হয় ক্যালশিয়ামের।
পুষ্টিবিদ অনশূল সিংহ বলছেন, ‘‘৯৯ শতাংশ ক্যালশিয়ামই হাড় এবং দাঁতে জমা হয়। হাড় মজবুত রাখার পাশাপাশি পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এই খনিজের ভূমিকা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
কিন্তু হিসাব বলছে, কেউ যদি নিয়মিত এক গ্লাস দুধও খান, তাতেও দৈনিক ক্যালশিয়ামের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। আবার অতিরিক্ত দুধ খাওয়াও ভাল নয়। ক্যালশিয়ামের ঘাটতিপূরণে নজর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষত মহিলাদের একটু বয়স হলেই হাড়ে ক্যালশিয়ামের ঘনত্ব কমতে থাকে। ব্যথা-যন্ত্রণা শুরু হয়।
দুধ ছাড়া টোফু, চিয়া বীজ, দই, চিজ়েও ক্যালশিয়াম মেলে। এ ছাড়া খনিজটি পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি ফলেও। ক্যালশিয়ামের চাহিদাপূরণে কোন কোন ফল রাখতে পারেন তালিকায়?
কমলালেবু: শীতকালীন কমলালেবু এখন বছরভর মেলে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলালেবুতে কিন্তু ক্যালশিয়ামও থাকে। আমেরিকার কৃষি দফতর বলছে, ১০০ গ্রাম কমলালেবুতে ৪৩ গ্রাম ক্যালশিয়াম মেলে। ভিটামিন সি এবং ক্যালশিয়াম ছাড়াও এতে রয়েছে আরও নানা রকম খনিজ।
ফিগ: ফিগ বা আঞ্জিরেও প্রচুর ক্যালশিয়াম থাকে। আধ কাপ ফলে ১৮০ গ্রামের কাছাকাছি ক্যালশিয়াম মেলে। আঞ্জিরের আরও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।
পেঁপে: পেঁপেতেও অল্প পরিমাণে ক্যালশিয়াম মেলে। ১০০গ্রামে ৩০ গ্রাম। তবে ফাইবার, ভিটামিন এ, সি সমৃদ্ধ পেঁপের উপকারিতা অনেক। খাবার হজমে সহায়ক এটি। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
ব্ল্যাকবেরি: ভিটামিন সি, কে, ম্যাঙ্গানিজে ভরপুর ১০০ গ্রাম ব্ল্যাকবেরিতে ৩০-৪০ গ্রামের মতো ক্যালশিয়াম মেলে। ফাইবারও থাকে এতে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
কিউয়ি: হালকা সবুজ রঙের শাঁসযুক্ত, রসালো ফলটি খেতে বেশ ভাল। এর উপকারিতাও যথেষ্ট। ভিটামিন সি-তে ভরপুর কিউয়িতে প্রচুর পটাশিয়াম পাওয়া যায়। এতে কিছুটা ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রামে মোটমুটি ৪০ গ্রাম ক্যালশিয়াম মেলে ফলটিতে।