অফিসের প্রথম মিনিট দশেক কিন্তু মোটামুটি আমাদের বাকি দিনটার শরীর স্বাস্থ্য ঠিক করে দেয়। আগামী আট ঘণ্টাকে পারফেক্ট চাপ মুক্ত করার জন্য শুরুর কটা মিনিট কতগুলো জিনিস এড়িয়ে যাওয়া ভীষণ জরুরি। দিন শুরু হওয়ার আগেই নিজেদেরই কয়েকটা ভুলে ঘেঁটে যায় গোটা দিনটাই।
যে ভুল গুলো আমরা হামেশাই করে থাকি তার এক ঝলক-
১) দেরি করে অফিসে আসা- সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমস্ত কর্মচারীরা অফিসে আসতে প্রায় রোজই দেরি করেন বসেরা ধরেই নেন, কাজের প্রতি সেই কর্মচারীরা যথেষ্ট মনোযোগী নন। তারা সারাদিন যতই কাজ করুন না কেন, অফিসে যতক্ষণই থাকুন না কেন বদলায় না বসেদের মনোভাব। বছরের শেষে কপালে জোটে কম রেটিং। পাশের সহকর্মী সঠিক সময়ে অফিসে ঢুকে আপনার থেকে ঢের কম কাজ করেও পিঠচাপড়ানি পেলে, সত্যি বলুন তো, ভাল লাগে কি? তাই একটু অভ্যাস বদলান। নিজের স্বার্থেই জলদি অফিস ঢোকার চেষ্টা করুন।
২) সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার- সকাল বেলা অফিসে এসেই অনেকে মুখটা প্যাঁচা করে রাখেন। পাশেই বসা সহকর্মীর সঙ্গে একটু হাসি বিনিময় করতেই যেন গুচ্ছ অনীহা। এমনটা করলে কিন্তু সহকর্মীদেরও আপনার প্রতি বিরক্তি বাড়বে। দরকারে আপনাকে একটু সাহায্য করতেও তারা পাঁচ বার ভাববেন। দিনটা শুরু করুন পাশের মানুষটিকে ছোট্ট ‘হাই’ বা মিষ্টি এক টুকরো হাসি দিয়ে। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশেই কিন্তু কাজ তরতর করে এগোয়।
৩) কফি দিয়ে কাজের শুরু- কাজে এসেই চারপাশে একটুও না তাকিয়ে ছুটলেন ধোঁয়া ওঠা কফি কাপের দিকে। গবেষণা বলছে সকাল সাড়ে নটার আগে কফি খাওয়া এক্কেবারে উচিত্ না। সকাল ৮টা থেকে ৯টায় স্ট্রেস হরমোন কর্টিজল সবথেকে বেশি সক্রিয় থাকে। এই সময়ে কফি খেলে কর্টিজলের কর্মক্ষমতা কমে, সারাদিন ক্যাফেনের প্রতি আসক্তি তীব্র হয়। ব্যস সারাদিনের ঝিমুনি আর মনের কফি কাপের পিছনে ছোটাছুটি, কাজের দফারফা, সব মিলিয়ে সে এক বিচ্ছিরি ব্যাপার। অতএব, মন যতই চাক, সাত সকালেই কফির সঙ্গে আড়ি মাস্ট।
৪) ইনবক্সে প্রতিটা ই মেলের জবাব দেওয়া- সকালে অফিসে এসেই কম্প্যুটার অন করেই মেল বক্স খুলেই একের পর মেলের উত্তর দিতে শুরু করে দেন অনেকেই। ব্যাস একবার এ চক্করে ফেঁসে যাওয়া মানেই গেল বাকি দিনটা। আসলে এখানে এসে যায় প্রায়োরিটির প্রসঙ্গ। সকালবেলা যদি মেল বক্সে গুরুত্ব বুঝে কোন মেলের জবাব দেওয়া উচিত্ কোনটার নয়, সেটাই ঠিক করতে না পারেন, তা হলে বাকি দিনটা ঠিকঠাক কাজ করবেন কী করে? এক সঙ্গে এক গাদা অপ্রয়োজনীয় কাজ করেই যাবেন, অযথা সময় নষ্ট হবে, হবে খামোখা খাটনি। সিলেক্টিভ হতে শিখুন। আপনার এবং সংস্থার, উভয়েরই তাতে লাভই হবে।
৫) সেড্যুল ঠিক না করেই অফিসে আসা- আমরা অনেকেই রোজ অফিসে যাই কিন্তু একে বারে দিক্ভ্রান্ত হয়ে। মাথাতেই থাকে না আজ অফিসে গিয়ে কী করব, অফিসে এসেই তখন একগাদা কাজের মাঝে ঘেঁটে ঘ। কোন কাজটা আগে করব, কোনটা পরে তা ভাবতে ভাবতেই দিন কাবার। এ রকমটা ভুলেও করবেন না। অফিসে ঢোকার আগেই মোটামুটি সে দিনের দিনপঞ্জিটা মোটামুটি ছকে নিন মনে মনে।
৬) সহজ কাজটা আগে করে ফেলা- এসেই যদি তড়িঘড়ি সহজ কাজটা আগেই করে নেন, তা হলেই গণ্ডগোল। পরে কিন্তু কঠিন কাজ করার আর এনার্জি হবে না। দিন যত গড়াবে স্বভাবিক ভাবেই ক্লান্তি বাড়বে। তখন কঠিন কাজ উদ্ধার করতে কালঘাম ছুটবে। তার চাইতে বরং কঠিন কাজ দিয়েই দিনের শুরুয়াতটা ভাল। সেই সময় এনার্জি উইল পাওয়ার দুটোই দারুণ থাকে। কঠিন কাজ সহজেই হয়ে যায়।
৭) মাল্টি টাস্কিং- যেহেতু দিনের শুরুতে এনার্জি তুঙ্গে, তাই আমরা অনেকেই ভাবি সেই এনার্জির হাত ধরে অফিসে এসেই একগাদা কাজ করে ফেলতে পারব। গবেষণা কিন্তু ঠিক উল্টো কথা বলে। শুরুটা করুন আস্তে আস্তে, এক এক করে।
৮) নেগেটিভ চিন্তা- একগাদা নেগেটিভ চিন্তা নিয়ে অফিস ঢুকলেই বাকি দিনটা নেগেটিভ থাকবে। মন যতই খারাপ থাকুক অফিসে আসুন মনটা হালকা করে। আজ কিছু করতে ভাল লাগছে না ভাবলেই কিন্তু কেলো।
৯) মিটিং- অফিসে এসেই মিটিং করতে ছোটা খুব খারাপ অভ্যাস। মিটিং দিয়ে ভুলেও দিন শুরু করবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy