Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
teachers

করোনা-আবহে শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্যে জোর

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানসিক অবসাদ বা একাকিত্ব কাটানোর জন্য অনলাইন প্লাটফর্মে গান বা নাচের অনুষ্ঠানও করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩২
Share: Save:

দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় খুদে পড়ুয়াদের মন খারাপ বা মানসিক অবসাদ যেন না হয়, সে জন্য শহরের অনেক স্কুলে অনলাইনেই কাউন্সিলরেরা পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করেছেন। এমনকি পড়ুয়াদের অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং করা হয়েছে। তবে শুধু পড়ুয়ারাই নয়, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নেই শিক্ষকদেরও। তাঁরাও নিয়মিত স্কুলে আসছেন না। তাঁদেরও যেন কোনও রকম মানসিক অবসাদ না হয়, তাই এ বার শিক্ষকদের জন্য স্কুলে যোগাসনের ক্লাস করা হচ্ছে। কোথাও আবার শুরু হয়েছে শিক্ষকদের কাউন্সেলিংও।

দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজয় বিশ্বাসের মতে, স্কুলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের কোলাহলের মধ্যে থাকেন। গত কয়েক মাস অনলাইনে পড়ালেও স্কুলের সেই পরিবেশ নেই। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘আমাকে কয়েক জন শিক্ষক জানিয়েছেন তাঁরা স্কুলের পড়ুয়াদের সংস্পর্শে আসতে না পেরে অনেক সময়ে নিঃসঙ্গ বোধ করছেন। সারাদিন পড়ুয়াদের মধ্যে থাকলে একটি ইতিবাচক শক্তি আসে। যা গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা পাচ্ছেন না। তাই আমাদের মনে হল শিক্ষকদের অবসাদ কাটানোর জন্য কোনও ওয়ার্কশপ করা যায় কি না। মানসিক ভাবে মানুষকে চাঙ্গা রাখার জন্য যোগবিদ্যা শেখায়, এমন সংস্থার কয়েক জন প্রশিক্ষক স্কুলে এসে শিক্ষকদের যোগবিদ্যা শিখিয়েছেন।’’ সুজয়বাবু জানান, যোগবিদ্যার কয়েক জন প্রশিক্ষক শনিবার স্কুলে এসে ৩০ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীকে যোগব্যায়াম শিখিয়েছেন। হতাশা কাটানোর কিছু কৌশলও শিখিয়েছেন তাঁরা।

দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকদের সরাসরি যোগাযোগ না থাকার জন্য তাঁদেরও নানা মানসিক সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিং হয়। ভিডিয়োয় নানা যোগব্যায়ামও শেখানো হয়। শিক্ষকদেরও যেন কোনও রকম হতাশা বা মানসিক অবসাদ না আসে, সেই দিকে নজর রাখা হয়। প্রয়োজনে তাঁদেরও কাউন্সেলিং করা হয়।’’

মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা মনে করেন, গত কয়েক মাস করোনা অতিমারিতে সবাই পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটিয়েছেন। তবে পরিবারের মধ্যে থাকলেও সবারই কিছুটা ‘স্পেস’ প্রয়োজন হয়। যা বাড়ির বাইরে কাজের জায়গায় গিয়ে পাওয়া যায়। কর্মস্থলে যাওয়া মানে নিজের একটা জগৎ। সেটা বন্ধ কয়েক মাস ধরে। পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। আবার তাদের অনলাইন আড্ডার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সে রকমই শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও সপ্তাহে এক দিন বা দু’দিন অনলাইন ক্লাসের পরে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নির্ভেজাল আড্ডা চলেছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানসিক অবসাদ বা একাকিত্ব কাটানোর জন্য অনলাইন প্লাটফর্মে গান বা নাচের অনুষ্ঠানও করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষকদেরও একটা মানসিক স্বস্তি মিলেছে।

মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের অধিকর্তা দেবী কর বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের শিক্ষিকারা পরিবারের মতো। করোনার সময়ে তাঁরা স্কুলে না এলেও একে অপরের সঙ্গে ভার্চুয়াল যোগাযোগ রেখেছেন। দরকারে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। এটাই শিক্ষিকাদের মানসিক ভাবে অনেকটা চাঙ্গা করে দিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Teachers mental counselling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy