Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
COVID 19

কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে নিভৃতবাসে? চিকিৎসকেরা উত্তর দিলেন যাবতীয় প্রশ্নের

ঘরবন্দি মানে ঘরের চার দেওয়ালের বাইরে, অন্যরা যেখানে আছেন সেখানে কোনও ভাবেই যাওয়া চলবে না। বাড়ির অন্য সদস্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।

কোভিড আক্রান্তদের জন্য কী পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা?

কোভিড আক্রান্তদের জন্য কী পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা? ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৩৯
Share: Save:

রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ প্রায় ১৬ হাজার। মৃদু উপসর্গে বাড়িতে নিভৃতাবাসে থেকে বেশির ভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে এই সময়টা কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। রোগীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন চিকিৎসকরা।

বাড়িতে সব সময় কি মাস্ক পরা থাকতে হবে?

ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতির চিকিৎসক সৌতিক পণ্ডা জানালেন, হ্যাঁ। রোগী তো বটেই, বাড়ির লোকজনেরও উচিত স্নান, খাওয়া ও ঘুমোনর সময়টুকু বাদ দিয়ে সার্জিকাল মাস্ক পরে থাকা। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে কোভিড ১৯ ভাইরাস খুব সূক্ষ্ম এরোসলের মাধ্যমে বাতাসে ভেসে থাকে। তাই ভাইরাস আটকাতে মাস্ক পরা প্রয়োজনীয়। একই সঙ্গে জানলা দরজা খুলে রেখে বাতাস চলাচল করতে দেওয়া উচিত।

নিভৃতাবাসে থাকাকালীন রোগী কি বারান্দায় যেতে পারবেন? এ ক্ষেত্রে কি তাঁর বাড়ির অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে?

চিকিৎসক এবং এক হাসপাতালের পরিচালক, রূপালি বসু জানালেন, বারান্দা যদি ঘরের সংলগ্ন হয় তা হলে মাস্ক পরে বারান্দায় যেতে পারেন। কিন্তু অন্য ঘরের সংলগ্ন হলে সেখানে যাওয়া চলবে না। ঘরবন্দি মানে ঘরের চার দেওয়ালের বাইরে, অন্যরা যেখানে আছেন সেখানে কোনও ভাবেই যাওয়া চলবে না। বাড়ির অন্য সদস্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।

নিভৃতাবাসে থাকা রোগীর ঘরে খাবার পৌঁছে দেবার পর কি গ্লাভস বদলে ফেলা উচিত?

ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন ও ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতির চিকিৎসক, পুষ্পিতা মণ্ডল জানালেন, রোগীর ঘরের বাইরে দরজার সামনে খাবার রেখে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। নিতান্ত প্রয়োজনে যদি রোগীর ঘরে খাবার দিয়ে আসতে হয়, গ্লাভস-মাস্ক তো বটেই পোশাকও বদলে ফেলা বাঞ্ছনীয়।

একই বাথরুম ব্যবহার করা যাবে?

সৌতিকের মতে, নিভৃতাবাসে তখনই থাকা উচিত যখন সম্পূর্ণ আলাদা ঘর ও সংলগ্ন বাথরুম থাকে। বাড়ির অন্যরা ব্যবহার করছেন, এমন বাথরুম ব্যবহার করা ঠিক নয়। অনেক সময় একই বাথরুম ব্যবহার করা ছাড়া উপায় থাকে না । সে ক্ষেত্রে রোগীর ব্যবহারের পর ভাল করে স্যানিটাইজ করা উচিৎ। অবশ্যই এগজস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখতে হবে এবং কমোডে ঢাকা দিয়ে ফ্লাশ টানতে হবে। তবে আলাদা বাথরুম ব্যবহার করার পরামর্শ মেনে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

রোগী কি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে পারবেন?

সৌতিক জানালেন, বদ্ধ ঘরে সারাক্ষণ শীততাপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র চালিয়ে রাখা ঠিক নয়। এর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। ঘরের জানলা খুলে রেখে বাতাস চলাচল করতে দিলে ভাইরাস থাকতে পারে না। তবে কিছুক্ষণের জন্যে যন্ত্রটি চালিয়ে রাখা যায়। দরকার হলে বাইরের দিকের জানলা খুলে রেখেও চালানো যায়।

বাড়িতে যে বাসনে রোগীকে খাবার দেওয়া হয়, সেই ব্যাপারে কী কী সাবধানতা মেনে চলতে হবে?

রূপালি বসু জানালেন, বাসনপত্রের ব্যাপারে কিছু সাবধানতা মেনে চলা আবশ্যক। একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া যায়, এমন বাসন ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির বাসনের ক্ষেত্রে ২সেট বাসন রাখতে হবে। খাবার পর সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে (মাস্ক পরে বাসন ধোয়া বাঞ্ছনীয়) ঘরের বাইরে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা রেখে দিয়ে ব্যবহার করা উচিত। ধাতব বাসনে কোভিড ১৯ ভাইরাস বেশ কয়েক ঘন্টা বেঁচে থাকতে পারে বলে গবেষণায় জানা গিয়েছে।

কোভিড সংক্রমিতের পোশাক কি বাড়ির অন্যদের সঙ্গে সাবান দিয়ে কাচা উচিত? ওয়াশিং মেশিনে কাচলে কি অন্যদের সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় আছে?

পুষ্পিতা মণ্ডলের কথায়, রোগীর জামা কাপড় আলাদা কাচতে হবে। অন্যদের পোশাকের সঙ্গে কাচা ঠিক নয়। দু’বেলা পোশাক বদলানো ও সাবান দিয়ে কেচে ফেলা উচিত।

মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলে সেগুলি কি স্যানিটাইজ করা দরকার?

পুষ্পিতা জানালেন, আক্রান্তের ব্যবহৃত মোবাইল বা ল্যাপটপ কোনও ভাবেই অন্যরা ব্যবহার করবেন না। তাও নির্দিষ্ট সময় অন্তর এগুলি স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। তবে মোবাইল ও ল্যাপটপ বন্ধ করে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে স্যানিটাইজ করাই ভাল। সাধারণত রোগ নির্ণয়ের ১৪ দিন পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু মোবাইল ও ল্যাপটপ ২১ দিন পর্যন্ত বাড়ির অন্য সদস্যদের বিশেষ করে বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE